সংক্ষিপ্ত

আর জি কর মেডিক্যাল কলেজের ঘটনায় সিবিআই যে চার্জশিট জমা দিয়েছে, সেখানে একমাত্র অভিযুক্ত হিসেবে সঞ্জয় রায়ের নাম রয়েছে। কিন্তু সঞ্জয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তাঁর আইনজীবী।

শিয়ালদা আদালতের বাইরে সাংবাদিকদেরক সামনে নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করেছিল আর জি কর মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়। সে ষড়যন্ত্রের দাবিও করেছিল। বুধবার তার আইনজীবীরাও একই দাবি করলেন। সিবিআই তদন্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলে সঞ্জয়কে নির্দোষ বলে দাবি করে তার মুক্তি দাবি করলেন আইনজীবীরা। এই মামলায় সিবিআই যে চার্জশিট জমা দিয়েছে, সেখানে একমাত্র অভিযুক্ত হিসেবে সঞ্জয়ের নামও রয়েছে। কিন্তু তার আইনজীবী সৌরভ বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, তাঁরা সঞ্জয়কে বেকসুর খালাস করার দাবি জানিয়েছেন। সঞ্জয়কে একমাত্র অভিযুক্ত হিসেবে সিবিআই যে দাবি করেছে, তার পক্ষে যথেষ্ট প্রমাণ পেশ করতে পারেনি। সঞ্জয় এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত নয় বলেই দাবি তার আইনজীবীর। তাঁদের আরও দাবি, ধস্তাধস্তির চিহ্ন পাওয়া যায়নি। এই কারণে তাঁদের মনে হচ্ছে, পুরো ঘটনা সাজানো। সঞ্জয়কে ফাঁসানো হচ্ছে।

শিয়ালদা আদালতে শুনানি

শিয়ালদা আদালতে আর জি কর মামলার শুনানি চলছে। বুধবার রুদ্ধদ্বার কক্ষে শুনানির পর সঞ্জয়ের আইনজীবী বলেছেন, 'এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও সাজানো ঘটনা। আদালতে আমরা সেটাই বলেছি। অভিযুক্ত সঞ্জয় রায় কিছুই করেননি। ওঁকে ফাঁসানো হয়েছে। আমরা ওঁর বেকসুর খালাসের দাবি জানিয়েছি। নির্যাতিতার শরীরে ধস্তাধস্তির কোনও চিহ্ন নেই। সিবিআই তো বলছে, ঘটনার সময়ে অভিযুক্ত নির্যাতিতার উপরে ছিলেন। তা হলে তো তাঁর শরীরে ধস্তাধস্তির চিহ্ন থাকা উচিত। জামা ছিঁড়ে যাওয়া উচিত। তেমন কিছু তো হয়নি। অভিযুক্তের আঙুলের ছাপও মেলেনি। হতে পারে পুরোটাই পরে সাজানো হয়েছে।'

সিবিআই তদন্ত নিয়ে প্রশ্ন

আর জি কর মামলায় সিবিআই-এর পক্ষ থেকে এখনও সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট দেয়নি সিবিআই। ফলে একমাত্র অভিযুক্ত হিসেবে সঞ্জয়ের নামই আছে। চার্জশিটে সিবিআই জানিয়েছে, সঞ্জয়ই একমাত্র অভিযুক্ত। যদিও অভিযুক্তর আইনজীবীরা পাল্টা যুক্তি দিচ্ছেন। নির্যাতিতার বাবা-মাও সিবিআই তদন্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তাঁদের মনে হচ্ছে, সঞ্জয়ের একার পক্ষে এই ঘটনা ঘটানো সম্ভব নয়। এই কারণে তাঁরা আরও তদন্তের দাবি জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হওয়ার কথা জানিয়েছেন।

সিবিআই তদন্ত নিয়ে ক্ষোভ নির্যাতিতার বাবা-মায়ের

আর জি কর মেডিক্যাল কলেজে নির্যাতিতার ‘সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায় নিঃসন্দেহে দোষী। কিন্তু এখনও যারা দোষী হওয়া সত্ত্বেও জেলের বাইরে আছে, যারা তথ্য-প্রমাণ লোপাট করেছে, তাদের বিরুদ্ধে সিবিআই চার্জশিট সেরকমভাবে দেবে কি না, সে বিষয়ে যথেষ্ট সন্দেহ আছে। ৯০ দিনের মধ্যে চার্জশিট জমা দিতে পারেনি সিবিআই। সন্দীপ ঘোষ ও অভিজিৎ মন্ডলকে ইচ্ছাকৃতভাবে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। সেই কারণে আমরা কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছি। কলকাতা হাইকোর্টে শুনানির ক্ষেত্রে সমস্যা হচ্ছে বলে এবার আমরা সুপ্রিম কোর্টে যেতে বাধ্য হচ্ছি।’ এর আগেও নতুন করে তদন্তের দাবি জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল নির্যাতিতার পরিবার। কিন্তু এই মামলা সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন থাকায় এ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে চায়নি কলকাতা হাইকোর্ট। তাই এবার নির্যাতিতার পরিবার সুপ্রিম কোর্টে আর্জি জানাতে চলেছে। তাঁদের আর্জি, কলকাতা হাইকোর্টকে যেন এই মামলা শোনার অনুমতি দেওয়া হয়। নির্যাতিতার পরিবারের অভিযোগ, সিবিআই তদন্তে অনেক গাফিলতি, ভুল আছে। নির্যাতিতার মায়ের সাক্ষ্যগ্রহণ করেনি সিবিআই। নির্যাতিতার পরিবার কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল। কিন্তু কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ বলেছিলেন, সুপ্রিম কোর্টের অনুমতি ছাড়া তাঁদের পক্ষে এই মামলা শোনা সম্ভব নয়। এই কারণেই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হচ্ছে নির্যাতিতার পরিবার। বিচার ক্রমশঃ বিলম্বিত হতে থাকায় তাঁরা হতাশ হয়ে পড়ছেন।

আরও খবরের আপডেট পেতে চোখ রাখুন আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।

আরও পড়ুন-

সিবিআই তদন্ত নিয়ে প্রশ্ন, সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হচ্ছেন আর জি করে নির্যাতিতার বাবা-মা

'সিবিআই ইচ্ছাকৃতভাবেই ছেড়ে দিল,' চাঞ্চল্যকর অভিযোগ আর জি করে নির্যাতিতার বাবা-মায়ের

YouTube video player