সংক্ষিপ্ত
এই ঘটনায় শাসকদলের জড়িত থাকার অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে জানিয়েছেন এলাকার তৃণমূলের বিধায়ক তজমুল হোসেন। তিনি আরো জানিয়েছেন এ ধরনের কোনো কার্যকলাপ চললে দল এবং প্রশাসন এর বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
আদিবাসী মহিলার (Adivasi Woman) জমি জবরদস্তি দখল করে অবাধে মাটি (Land) কাটা হচ্ছে এমনটাই অভিযোগ উঠে এসেছে মালদা (Malda) জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর থানা (Harishchandrapur PS) এলাকায়। এলাকার কাউয়ামারী নয়া টোলা গ্রামে এক আদিবাসী মহিলার জমি এলাকার কিছু জমি মাফিয়া জবর দখল করে মাটি মাফিয়াদের হাতে তুলে দিয়েছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। সেই মাটি মাফিয়ারা প্রশাসনের চোখে ফাঁকি দিয়ে অল্প রাজস্বের বিনিময় ব্যাপক পরিমাণে মাটি কেটে নিচ্ছে। এরা সকলেই শাসকদলের মদতপুষ্ট বলে অভিযোগ।
এই সমস্ত মাটি মাফিয়ারা স্থানীয় ভূমি সংস্কার দপ্তরের আধিকারিক দের সঙ্গে যোগসাজশ করে এই ধরনের বে-আইনি কার্যকলাপ ঘটাচ্ছে বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ। স্থানীয় বাসিন্দারা এই কাজে বাধা দিতে গেলে মাটি মাফিয়া এবং জমি মাফিয়ারা মিলিত ভাবে এলাকাবাসীদের হুমকি দিচ্ছে ভূমি রাজস্ব দপ্তরের আধিকারিকদের সঙ্গে তাদের গোপন যোগসাজশ রয়েছে অভিযোগ করে কোন ফল হবে না। এই নিয়ে এলাকার বাসিন্দারা ইতিমধ্যে সরব হয়েছেন।
তারা হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর ব্লকের বিডিও অনির্বাণ বসুর কাছে এই বিষয়ে অভিযোগ দায়ের করেছেন। শুধু এলাকাবাসী নয় এলাকার তৃণমূল পঞ্চায়েতের সদস্য একই অভিযোগ তুলেছেন।এই ঘটনার জেরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে হরিশ্চন্দ্রপুর এলাকা জুড়ে।
যদিও এই ঘটনায় শাসকদলের জড়িত থাকার অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে জানিয়েছেন এলাকার তৃণমূলের বিধায়ক তজমুল হোসেন। তিনি আরো জানিয়েছেন এ ধরনের কোনো কার্যকলাপ চললে দল এবং প্রশাসন এর বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। অন্যদিকে এই ঘটনায় সুর চড়িয়েছে এলাকার বিজেপি নেতৃত্ব। তাদের দাবি সমস্তটাই ঘটছে এলাকার তৃণমূল নেতা ও ভূমি রাজস্ব আধিকারিকদের মদতে। অবিলম্বে প্রশাসনকে কড়া হাতে এগুলো দমন করতে হবে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায় কাউয়ামারী নয়া টোলা গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দা মমতা ওরাও এর জমি এলাকারই জমি মাফিয়া মিঠু ওরাও ,বাচ্চু ওরাও, দিপু ওরাও তিন ভাই মিলে জোরপূর্বক দখল করে নিয়েছে। তারপর তুলে দিয়েছে মাটি মাফিয়ার হাতে। এই মাটি মাফিয়ার মদতে যথেচ্ছ ভাবে মাটি কেটে নেওয়া হচ্ছে। বাধা দিতে গেলে আসছে হুমকি। অভিযোগ ভূমি রাজস্ব দপ্তরের আধিকারিকদের মদতে এলাকায় বাড়ছে মাটি মাফিয়া ও জমি মাফিয়াদের বাড়বাড়ন্ত। অবিলম্বে প্রশাসন এ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করলে বৃহত্তর আন্দোলনে নামবে এলাকাবাসী বলে দাবি আদিবাসী সমাজের।
এমনকি স্থানীয় বাসিন্দারা দাবি করেছেন এই মাটি মাফিয়া এবং জমি মাফিয়া প্রত্যেকেই তৃণমূল নেতাদের কাছ থেকে প্রশ্রয় পাচ্ছেন। তাই এদের এত সাহস। এলাকার বাসিন্দারা ইতিমধ্যেই হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর ব্লকের বিডিওর কাছে নালিশ জানিয়েছেন। এমনকি কাওয়ামারি এলাকার তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যার স্বামীও একই অভিযোগ তুলেছেন। সব মিলিয়ে সরগরম হরিশ্চন্দ্রপুরের রাজনীতি।
হরিশ্চন্দ্রপুরের বুদ্ধিজীবী সম্প্রদায়ের দাবি এলাকায় ভূমি রাজস্ব আধিকারিকের দপ্তরে গড়ে উঠেছে অসাধু চক্র। পয়সার বিনিময়ে একের পর এক বেআইনি ইটভাটা রমরমিয়ে চলছে। এবং সেখানেই বেআইনি ভাবে কাটা রাজস্ব ফাঁকি দেওয়া মাটি দিনের আলোতে সরবরাহ করা হচ্ছে। হেলদোল নেই প্রশাসনের। সরকার রাজস্ব ফাঁকির পাশাপাশি এলাকার পরিবেশ দূষণ পর্যন্ত হচ্ছে।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার প্রশাসনিক সভায় মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছিলেন জেলায় জেলায় ভূমি সংস্কার অফিস ঘুঘুর বাসায় পরিণত হয়েছে। এবং এগুলোর বিরুদ্ধে তিনি অবিলম্বে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলেও হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছেন। কিন্তু এরপরেও কোন রকম পরিবর্তনের চিহ্ন দেখা যাচ্ছে না। মাটি মাফিয়া ও জমি মাফিয়া দের সঙ্গেই মিলিত ভাবে বেআইনি চক্র গড়ে তুলছেন ভূমি সংস্কার আধিকারিকেরা।
এ প্রসঙ্গে হরিশ্চন্দ্রপুর ১ব্লক বিডিও অনির্বাণ বসু জানান অভিযোগ হয়েছে। সমস্ত অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অন্যদিকে এই ব্যাপার নিয়ে সংবাদমাধ্যমে সামনে মুখ খুলতে চাননি হরিশ্চন্দ্রপুর ১ ভূমি সংস্কার আধিকারিক ফকরুদ্দিন আহমেদ এ বিষয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করবেন না বলে জানিয়েছেন।