সংক্ষিপ্ত

  • মালদহে পুলিশ হেফাজতে মৃত্যুর অভিযোগ
  • মালদহের নিয়ামতপুরের ঘটনা
  • মিলকি ফাঁড়িতে ভাঙচুর, আগুন
  • মারধরের জেরে মৃত্যুর অভিযোগ অস্বীকার পুলিশের

পুলিশ হেফাজতে এক প্রৌঢ়ের মৃত্যু। আর তা ঘিরেই রণক্ষেত্রের চেহারা নিল মালদহের ইংরেজবাজার থানা এলাকা। পুলিশ ফাঁড়িতে আগুন লাগিয়ে দিল উত্তেজিত জনতা। মারমুখী জনতার ভয়ে ফাঁড়ি ছেড়ে পালাল পুলিশ। পরে মালদহ টাউন থেকে বিশাল পরিমাণে বাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘটনায় পনেরোজনকে আটক করেছে পুলিশ। 

রবিবার রাতে এই ঘটনা ঘটে ইংরেজবাজারের নিয়ামতপুরে। অভিযোগ, লক্ষ্মীপুজোর রাতে নিয়ামতপুরে জুয়ার আসর বসেছিল। রবিবার রাতে সেখানেই আচমকা হানা দেয় পুলিশ। ঘটনাস্থল থেকে আটক করা হয় বছর পঞ্চাশের আইনুল খানকে। তাঁর বাড়ি নিয়ামতপুর এলাকায়। 

স্থানীয়দের অভিযোগ, আইনুল নিজে জুয়া খেলতেন না। ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়েছিলেন তিনি। কিন্তু আসল অভিযুক্তদের না ধরে পুলিশ তাঁকেই ধরে। জিপে তোলার আগে মাটিতে ফেলে একপ্রস্ত মারা হয় আইনুলকে। অভিযোগ, এর পরে মিলকি পুলিশ ফাঁড়িতে নিয়ে গিয়ে ফের মারধর শুরু হয় আইনুলকে। তাতেই মৃত্যু হয় ওই প্রৌঢ়ের। স্থানীয় ফুলবাড়ি পঞ্চায়েতের উপপ্রধান শেখ বাবলুর অভিযোগ, হেফাজতে থাকা ওই ব্যক্তির মৃত্যু হতেই তাঁর দেহ ফাঁড়ি লাগোয়া মিলকি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ফেলে রেখে পালিয়ে যান কর্তব্যরত পুলিশকর্মী এবং সিভিক ভলেন্টিয়াররা। ফোনে তাঁর পরিবারকে জানানো হয়, আইনুল অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। হাসপাতালে পৌঁছে তাঁরা জানতে পারেন, আইনুলের মৃত্যু হয়েছে। 

মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। ক্ষুব্ধ স্থানীয় বাসিন্দারা মিলকি ফাঁড়িতে ভাঙচুর শুরু করেন। কয়েকশো জনতা ফাঁড়িতে চড়াও হয়। আগুনও লাগিয়ে দেওয়া হয় ফাঁড়িতে। খবর পেয়ে ইংরেজবাজার থানা এবং মালদহ থেকে বিশাল পরিমাণ পুলিশবাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সাধারণ মানুষের সঙ্গে সংঘর্ষে আহত হন বেশ কয়েকজন পুলিশকর্মী। কোনওক্রমে মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়। স্থানীয়দের অভিযোগ, মূলত সিভিক ভলেন্টিয়ারদের মারেই ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। জেলা পুলিশ সুপারের অবশ্য দাবি, পুলিশ হেফাজতে নেওয়ার পরেই অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন ওই ব্যক্তি। স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে গেলে তাঁর মৃত্যু হয়। পুলিশ হেফাজতে মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন পুলিশ সুপার। 

এ দিন সকালেও ওই এলাকায় পরিস্থিতি থমথমে রয়েছে। এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে প্রচুর পুলিশকর্মী। দোষীদের শাস্তির দাবিতে মৃতদেহ নিতে অস্বীকার করেছে মৃত আইনুলের পরিবার। মৃতের পরিবারকে বোঝানোর চেষ্টা করছে পুলিশ।