সংক্ষিপ্ত

আগামী ২১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পার্থকে সিবিআই হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক, কল্যাণময়কেও ওই একই সময়কাল অবদি সিবিআই হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। দুই সন্দেহভাজনকে মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করার সম্ভাবনা রয়েছে।

এসএসসি-তে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডের ‘মূল চক্রী’ পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির সময় তিনিই ছিলেন বাংলার শিক্ষামন্ত্রী। শুক্রবার কোর্টে ঠিক এই দাবি করে ইডি-র পর এবার তদন্তের স্বার্থে পার্থকে নিজেদের হেফাজতে চাইল সিবিআই। হেফাজতে চেয়ে আলিপুর জাজেস কোর্টে সিবিআইয়ের আবেদনের পর প্রাক্তন মন্ত্রীকে সশরীরে নিয়ে আসা হয় আদালতে। এজলাসে পার্থর পাশেই বসেছিলেন সিবিআইয়ের হাতে পাকড়াও হওয়া মধ্যশিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়। নিজের মধ্যে কথাও বলতে দেখা যায় দুজনকে।

শুনানিতে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আইনজীবী দাবি তোলেন যে, তাঁর মক্কেল বর্তমানে জেল হেফাজতেই রয়েছেন। সিবিআই একাধিক বার অন্যান্য মামলায় তাঁকে হাজিরার জন্য ডেকেছে। আলাদা করে এখন তাঁকে সিবিআই গ্রেফতার করতে চাইছে কেন! তাঁকে তো জেলে গিয়েই জিজ্ঞাসাবাদ করা যায়।  সিবিআই জানায়, এসএসসি দুর্নীতি মামলায় যে ৫ জনের নামে এফআইআর হয়েছিল, তাঁদের মধ্যে ৩ জনই গ্রেফতার হয়েছেন। সম্পূর্ণ কাণ্ডে পার্থের ভূমিকাই প্রধান। কারণ, দুর্নীতির সময়ে তিনিই ছিলেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী।

কথাবার্তা চলাকালীন পার্থ চট্টোপাধ্যায় উঠে এসে নিজের আইনজীবীকে কিছু একটা বলেন। পরে আইনজীবী আদালতকে জানান, তাঁর মক্কেলকে জামিন দিলেও সিবিআই নিজেদের কাজ চালিয়ে যেতে পারে। কারণ, ইতিমধ্যে এই একই মামলায় তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ হয়েছে। এখন তাঁকে জামিন দেওয়া হোক। সিবিআই এবং পার্থ, উভয় পক্ষের উকিলদের প্রশ্নোত্তরের মধ্যে বিচারক প্রশ্ন করেন, দুর্নীতির ঘটনায় কি পার্থের কোনও হাত নেই বলেই দাবি করছেন তাঁর আইনজীবী? এর প্রেক্ষিতে পার্থর আইনজীবী বলেন, ‘‘ওঁর পিছনে কিছু হলে, উনি কী করবেন? সমাজের প্রতি পার্থের দায়বদ্ধতা প্রমাণিত। সমাজের প্রতি তাঁর অবদান রয়েছে। অভিযোগও এখনও প্রমাণিত নয়। তা ছাড়া উনি কোথাও পালিয়েও যাচ্ছেন না। তা হলে গ্রেফতারির কী প্রয়োজন?’’ অন্যদিকে সিবিআইয়ের আইনজীবী বলেন, “'এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি বড়সড় ষড়যন্ত্র, মাস্টারমাইন্ড পার্থ-কল্যাণময়”।

অন্য দিকে, কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায় নিজের আইনজীবীর মাধ্যমে বলেন, ‘‘২০১৮ সাল থেকে কোনও নিয়োগপত্রে আমি সই করিনি। আমার সই নকল করা হয়েছে।’’ তাঁর দাবি, ‘স্ক্যান সিগনেচার’ থাকত পর্ষদের অফিসে। সেখান থেকে তা ব্যবহার করা হয়েছে। কল্যাণময় এ-ও বলেন, ‘‘আমি কখনও কোনও নিয়োগের পরীক্ষা নিইনি। ইন্টারভিউও নিতাম না। এসএসসি মধ্যশিক্ষা পর্ষদকে রেকমেন্ডেশন পাঠাত।’’ দুই পক্ষের সওয়াল জবাবের শেষে পার্থ নিজে উঠে দাঁড়িয়ে আগেরদিনের মতো আরও একবার নিজের জামিন চান। যদিও শেষ পর্যন্ত সেই আবেদন খারিজ হয়ে যায়। তাঁকে আগামী ২১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সিবিআই হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক, পাশাপাশি কল্যাণময়কেও ওই একই সময়কাল অবদি সিবিআই হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। দুই সন্দেহভাজনকে মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করার সম্ভাবনা রয়েছে। ইডি হেফাজতের জেরাপর্বের পর আবার সিবিআই হেফাজতে কী কী ফাঁস করেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়, তা শুধু সময়ের অপেক্ষা। 

আরও পড়ুন-
বাসের ধাক্কায় মাথায় চোট, হেঁটে গিয়ে স্কুলে পৌঁছে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ল ক্লাস ওয়ানের ছোট্ট নীতিশ
বাড়ির চৌকাঠে পা রাখতেই ভাশুরের মুখে ইঙ্গিতের আভাস, সান বাংলার ‘আলোর ঠিকানা’-এ কি রহস্যের গন্ধ?
হাওড়া শহরে ডেঙ্গি বড় বালাই, স্বাস্থ্য ও সাফাই বিভাগের সমস্ত কর্মীদের দুর্গাপুজোর ছুটি বাতিল