সংক্ষিপ্ত

ভাদুর বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর নেতৃত্বে ছিল ওই এলাকারই বাসিন্দা পলাশ শেখ, সোনা শেখ, লালন শেখ, সঞ্জু শেখ, মহি শেখ, হানিফ শেরা, চেরা শেখরা। যাদের বিরুদ্ধে বাবরের পাশাপাশি ভাদুকেও খুনের অভিযোগ উঠছে।  

গত বছর খুন হয়েছিলেন ভাই। সেই ঘটনা ঘটে কাটেনি বেশি দিন আর তার মধ্যেই মৃত্যু হল দাদার। সোমবার বীরভূমের রামপুরহাট(Rampurhat)-এর বগটুই গ্রামে খুন হন বড়শাল পঞ্চায়েতের উপপ্রধান ভাদু শেখ। এদিন একটি চায়ের দোকানে বসে আড্ডা মারছিলেন ভাদু। এমতাবস্থায়, কিছু দুস্কৃতি তাঁকে লক্ষ্য করে বোমা ছোঁড়ে। নিমিষের মধ্যে যেন শেষ হয়ে যায় সব কিছু। স্থানিয়দের উদ্দ্যোগে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় ভাদুকে। কিন্তু হয়নি শেষ রক্ষা। 
ভাদুর মৃত্যুতে যেন উস্কে ওঠে এক বছর তিন মাস আগে ঘটা তাঁর ভাই বাবর শেখের মৃত্যু। ২০২১ সালের ৫ই জানুয়ারি খুন হন বাবর। রাজনৈতিক দিক থেকে তিনিও সক্রিয় তৃণমূল কর্মী (TMC Member) ছিলেন। গত পাঁচই জানুয়ারি কবরস্থানের কাছে খুন হয়েছিলেন বাবর। তিনিও একজন সক্রিয় তৃণমূল কর্মী ছিলেন। সেই দিন তাঁর মোটরবাইক আটক করে মাথায় গুলি চালায় দুষ্কৃতিরা। তাঁকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে (Rampurhat Medical College Hospital) নিয়ে গিয়েছিলেন সেই ভাদুই। সেখান থেকে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। কিন্তু পথেই মারা যান বাবর। 

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বাবর এক সময় ট্রাক্টর চালাতেন। পরে রামপুরহাট (Rampurhat) শহরে এক মুরগি  ব্যবসায়ীর গাড়ি চালাতে শুরু করেন তিনি। কিন্তু তাঁর দাদা পঞ্চায়েতের উপপ্রধান হয়ে ক্ষমতায় এলে সেই সকল কাজ ছেড়ে ঠিকাদারি ও দাদার বিভিন্ন ব্যবসার দেখাশোনা করতে শুরু করেন তিনি। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, বড়শাল গ্রাম পছায়েতের উপপ্রধান ভাদুর নানা ব্যবসা নিয়েই তাঁর সঙ্গে অন্য একটি গোষ্ঠীর দ্বন্দ্ব শুরু হয় দীর্ঘ দিন আগেই। অভিযোগ আক্রোশ গিয়ে পড়ে বাবর এবং ভাদুর উপর। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, ভাদুর বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর নেতৃত্বে ছিল ওই এলাকারই বাসিন্দা পলাশ শেখ, সোনা শেখ, লালন শেখ, সঞ্জু শেখ, মহি শেখ, হানিফ শেরা, চেরা শেখরা। যাদের বিরুদ্ধে বাবরের পাশাপাশি ভাদুকেও খুনের অভিযোগ উঠছে।  

প্রসঙ্গত, ইতিমধ্যে ভাদুর মৃত্যুর পর থেকেই অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে ওই গ্রাম জুড়ে। গ্রামেরই কয়েকটি বাড়িতে পর পর আগুন লেগে যায়। প্রথমদিকে, খবর আসে আগুনে ঝলসে মৃত্যু হয়েছে ৩ জনের। কিন্তু ঘড়ির কাঁটার হাত ধরে বাড়তে শুরু করে মৃতের পরিমান। দমকলের হিসাব অনুযায়ী, এখনও পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে মোট ৮ জনের। শুরু হয়ে গিয়েছে রামপুরহাট কান্ডের তদন্ত, গঠন করা হয়েছে সিটও। এই ঘটনা নিয়েই উত্তাল বাংলার রাজ্য-রাজনীতি। ইতিমধ্যেই প্রশাসনিক অচলাবস্থার অভিযোগে তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলে রাস্তায় নেমেছে বিরোধীরা।