সংক্ষিপ্ত

১৯৮৬ সাল থেকে ২০১৯ প্রায় ৩৫ বছর ধরে এই মেলা টাকি এরিয়ান ক্লাবের মাঠে অনুষ্ঠিত হয়ে চলেছে। তবে ২০২০ সাল থেকে করোনা মহামারীর জন্য বন্ধ ছিল এই টাকি বই মেলা। কিন্তু বর্তমানে। রাজনীতির বেড়াজালে অনিশ্চিত ভবিষ্যতের পথে টাকি বইমেলা।

বিগত প্রায় ৩৫ বছর ধরে উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বসিরহাট মহাকুমার(Basirhat subdivision) ভারত-বাংলাদেশ টাকি সীমান্তের(India-Bangladesh Taki border) ইচ্ছামতী পাড়ে টাকি সাংস্কৃতিক গ্রামীণ বইমেলা(Taki Cultural and Rural Book Fair) এক প্রাচীন ঐতিহ্য বহন করে চলেছে। ১৯৮৬ সাল থেকে ২০১৯ প্রায় ৩৫ বছর ধরে এই মেলা টাকি এরিয়ান ক্লাবের মাঠে অনুষ্ঠিত হয়ে চলেছে। তবে ২০২০ সাল থেকে করোনা মহামারীর জন্য বন্ধ ছিল এই টাকি বই মেলা। কিন্তু মহামারির(Corona Pandemic) প্রকোপ কমার পরেও বইমেলা বন্ধ রাখারই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। রাজ্য শিক্ষা দপ্তর যখন ছাত্র ছাত্রীদের স্কুলমুখী করতে উদ্যোগী হয়েছেন তখন হটাৎ করে এই বই মেলা কেন বন্ধ হয়ে গেলো সেটা নিয়ে রহস্য দানা বেধেছে বসিরহাটবাসীর মনে।

এদিকে প্রতিবছর ১০ ডিসেম্বরের মধ্যেই সাধারণত মেলা শুরু হয়ে যায়। কিন্তু এবছর সেই সময় পার হলেও এখনও শুরু হয়নি মেলা। তবে টাকি সাংস্কৃতিক ও গ্রামীণ বইমেলা শুরু করার জন্য প্যান্ডেল বাধার কাজ প্রায় শেষ। কিন্তু মেলা শুরু করতে গিয়েই বাঁধে বিপত্তি। সহজ কথায় রাজনীতির বেড়াজালে অনিশ্চিত ভবিষ্যতের পথে টাকি বইমেলা। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে দীর্ঘদিন ধরেই মেলা কমিটিতে নেতৃত্ব করে আসছে সিপিআইএম(CPIM) পরিচালিত কমিটির লোকজন। মেলা কমিটির হিসাব পরীক্ষক অনুপ চক্রবর্তী অভিযোগ করেন কিছু লোক অযথা ঝামেলা সৃষ্টি করার কারণে মেলা বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছি। অন্য দিকে টাকি পৌরসভা উপ পৌর প্রশাসক আজিজুল গাজী অভিযোগ করেন, প্রচুর আর্থিক অনুদান দিয়েই মেলাটিকে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করা হয়েছে এতদিন ধরে। কিন্তু অনেকেই এখন সাম্মানিক পদ ছাড়তে রাজি হচ্ছেন না। পাশাপাশি স্থানীয় বিধায়ক এবং স্বয়ং রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি লাগাতে দেওয়া হয় না মেলার মঞ্চে বা তোরণ গেটে। এই নিয়ে নতুন প্রজন্ম তীব্র প্রতিবাদ জানায়। আমরা পৌরসভার পক্ষ থেকে আর্থিক, প্রশাসনিক সবরকম সাহায্য করি। কিন্তু আমরা কোন সম্মান পাই না।

আরও পড়ুন- জাতীয় সড়ক অবরোধ, ১১ দফা দাবি নিয়ে বাঁকুড়ায় বড়সড় বিক্ষোভ বামেদের

টাউন তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সভাপতি প্রদ্যুৎ দাস বলেন,  “করোনা আবহে আর্থ সামাজিক উন্নয়নে রাজ্য সরকার যেখানে মানুষকে বিনামূল্যে দুয়ারে রেশন পাঠাচ্ছে, স্বাস্থ্য সাথী কার্ডের মাধ্যমে বিল মূল্যে চিকিৎসা  পরিষেবা চালু করেছে সেখানে ২০ টাকা করে টিকিট কেটে কেন এই বই মেলা দেখতে আসবে মানুষ। রোজগার নেই বহু মানুষের, কাজ হারিয়েছেন অনেকে, তারা কোথা থেকে পাবে টাকা। পাশাপাশি দীর্ঘ ৩৫ বছর এই মেলার নির্দিষ্ট কোনও হিসাব পাওয়া যায়নি এখনও পর্যন্ত। আমরা জানতে চাইলে তখনই  ঝামেলার সৃষ্টি হয়। সামনে পৌরসভা নির্বাচন তাই তৃণমূল কংগ্রেস ওপর দায় চাপিয়ে এই মেলা বন্ধ করে দিয়েছে সিপিআইএম ও বিজেপি। এটা সম্পূর্ণ চক্রান্ত। আমাদের দাবি এই মেলা করতে হবে বিনামূল্যে। সংস্কৃতি, কৃষ্টি, বিনোদন সব রকমের স্বাদই পাবে মানুষ বিনা পয়সায়।