সংক্ষিপ্ত
অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল নিয়ে স্কুলে আসা চলবে না, ছাত্রছাত্রীদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে বিজ্ঞপ্তি জারি করল বাঁকুড়ার সোনামুখী বি জে হাই স্কুলের কর্তৃপক্ষ। অভিভাবক থেকে শুরু করে সোশ্যাল মিডিয়ার নেটিজেনদের প্রভূত সমর্থন।
বর্তমান সমাজ ব্যবস্থায় মোবাইল ফোন প্রতিটা মুহূর্তে মানুষের কাছে হয়ে উঠেছে খাদ্য ও পানীয়ের মতোই অত্যন্ত জরুরী। মোবাইল ফোন নেই এমন ব্যক্তি বা মানুষ এখন খুঁজে পাওয়া প্রায় দুষ্কর।
মোবাইল, বিশেষ করে অ্যান্ড্রয়েড সেট ব্যবহারকারীদের ক্ষেত্রে যেমন ভালো দিক আছে, তেমনই এর খারাপ দিকটাও অনেক বার খবরের কাগজে শিরোনাম হয়ে দেখা দেয়। বিশেষ করে ছাত্রছাত্রীদের ক্ষেত্রে তো মোবাইল ফোন এখন মারাত্মক একটা মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অভিভাবক থেকে শুরু করে শিক্ষক শিক্ষিকা, প্রত্যেকেই এ নিয়ে যথেষ্ট চিন্তিত।
২০২২ সালের এপ্রিল মাসেই মধ্য শিক্ষা পর্ষদ বিজ্ঞপ্তি জারি করে নির্দেশ দিয়েছিল, স্কুলের সীমানার ভিতরে ছাত্রছাত্রীরা কোনওভাবেই মোবাইল ফোন নিয়ে ঢুকতে পারবে না। শিক্ষকদের ক্ষেত্রেও ক্লাসরুম ও ল্যাবরেটরির ভেতরে মোবাইল ফোনের ব্যবহার বন্ধ করতে বলা হয়েছিল সেই নিষেধাজ্ঞায়।
এবার বাঁকুড়ার সোনামুখী বি জে হাই স্কুলের ছাত্র ছাত্রীদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে বিজ্ঞপ্তি জারি করে অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল নিয়ে স্কুলে আসায় দাঁড়ি টেনে দিল স্কুল কর্তৃপক্ষ। বিজ্ঞপ্তিটি ফেসবুকে ভাইরাল হওয়ার পর সাংবাদিকের প্রশ্নের উত্তরে বি জে হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক মনোরঞ্জন চোংরে বলেন, “ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াশোনার প্রতি একাগ্রতা ও দায়বদ্ধতার যথেষ্ট অভাব লক্ষ্য করা গেছে ক্লাসের মধ্যে। এর অন্যতম কারণ হল, প্রত্যেকের হাতে হাতে এন্ড্রয়েড মোবাইল ফোন থাকা। ধরুন, ক্লাসে শিক্ষক পড়াচ্ছেন অথচ পেছনের সারিতে বসে লুকিয়ে ছাত্র-ছাত্রীরা মোবাইলে গেম খেলছে বা ফেসবুক কিংবা হোয়াটসঅ্যাপে ব্যস্ত রয়েছে। এর ফলে পড়াশোনার প্রচণ্ড ক্ষতি হচ্ছে। ব্যাপারটা আমি পর্যবেক্ষণ করেছি এবং আমার মনে হয়েছে মোবাইল ফোন স্কুলে নিয়ে আসা নিষিদ্ধ করলে ছাত্রছাত্রীরা পড়াশুনার প্রতি মনোনিবেশ করতে পারবে। অন্যদিকে টিফিনের সময় কেউ মোবাইল ফোন নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়বে না, ছাত্র-ছাত্রীরা আবার আগের মতোই খেলার মাঠে একটু খেলাধুলো বা দৌড়ঝাঁপ করবে। এতে যেমন ছাত্র-ছাত্রীদের শারীরিক গঠন ভালো হবে, তেমনই মনও বেশ উৎফুল্ল হবে, যা পড়াশোনার ক্ষেত্রে খুবই দরকার। এইসব নানান দিক ভাবনা-চিন্তা করেই শেষ পর্যন্ত আমি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে মোবাইল ফোন নিয়ে স্কুলে আসা নিষিদ্ধ করেছি।”
অভিভাবক থেকে শুরু করে যাঁরা ফেসবুকে দেখেছেন, তাঁদের সাক্ষাৎকারেও সমর্থন উঠে এসেছে প্রধান শিক্ষকের সিদ্ধান্তের পক্ষে। তাঁদের বক্তব্য, ‘প্রধান শিক্ষকের এই সিদ্ধান্ত একেবারেই সঠিক। এতে ছাত্র-ছাত্রীদের উপকারই হবে’। ওন্দার এক যুব সমাজের কর্মী বলেন যে, এই ধরনের নির্দেশিকায় তিনি খুশি এবং এই নির্দেশিকা পশ্চিমবঙ্গের সমস্ত স্কুলে হওয়া উচিত।
আরও পড়ুন-
'পার্থ-মানিক মেধা চোর', হাতে শুকনো রুটি ও ভাত নিয়ে বিক্ষোভ টেট উত্তীর্ণ চাকরিপ্রার্থীদের
হাতে মদের বোতল-সিগারেট সঙ্গে উদ্দাম নাচ, স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের পিকনিকের ভিডিও ভাইরাল
প্রথম স্থানে রাজ্যের ৬ পরীক্ষার্থী, গেম খেলেও মেধা তালিকায় জায়গা করে নিল এই পড়ুয়া