সংক্ষিপ্ত
গঙ্গাসাগর মেলায় প্রচুর ভিড় হয়। আর সেই ভিড়কেই কাজে লাগাতে চাইছে বাংলাদেশের অবৈধ অনুপ্রবেশকারীরা। জলপথেই গঙ্গাসাগর মেলা দিয়ে তারা বাংলাদেশ থেকে ভারতে আসবে।
চলতি বছর গঙ্গাসাগর মেলা রয়েছে যথেষ্ট ঝুঁকির মধ্যে। কারণ অন্যান্যবারের মত এবারও গঙ্গাসাগর মেলায় ভিড় হবে বলে অনুমান করছে প্রশাসন। ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে সাগরমেলার প্রস্তুতি। এই অবস্থায় গোয়েন্দাদের হাতে এসেছে ভয়ঙ্কর তথ্য। যা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে প্রশাসনের। পাশাপাশি শুরু হয়েছে তারই প্রস্তুতি। গঙ্গাসাগর মেলার প্রস্তুতি দেখতে সাগরদ্বীপে যাচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই পরিস্থিতিতে রাজ্য পুলিশ ইতিমধ্যেই নদীপথে কড়া নজরদারি শুরু করেছে।
গোয়েন্দের হাতে আশা তথ্যঃ
গঙ্গাসাগর মেলায় প্রচুর ভিড় হয়। আর সেই ভিড়কেই কাজে লাগাতে চাইছে বাংলাদেশের অবৈধ অনুপ্রবেশকারীরা। জলপথেই গঙ্গাসাগর মেলা দিয়ে তারা বাংলাদেশ থেকে ভারতে আসবে। এই বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকার ইতিমধ্যেই সতর্ক করেছে রাজ্য সরকারকে। নবান্ন সূত্রের খবর ইতিমধ্যেই অনুপ্রবেশ রুখতে বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছে
রাজ্য প্রশাসনের পদক্ষেপঃ
অনুপ্রবেশ রুখতে সক্রিয় রাজ্য প্রশাসন। জলপথে নজরদারি বাড়িয়েছে। সাগরের মিলনস্থলে বেড়েছে পুলিশি নিরাপত্তা। রাজ্যের তরফে এই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সুন্দর জেলা পুলিশ প্রশাসনকে। সাংবাদিক বৈঠক করে এই বিষয়ে জেলা পুলিশের তরফে অবস্থান স্পষ্ট করা হয়েছে। রাজ্য পুলিশ সূত্রের খবর, সাংবাদিক বৈঠক করা হয়েছে মূলত অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের বার্তা দেওয়া। অনুপ্রবেশ রুখতে রাজ্য পুলিশ যে সতর্ক রয়েছে তাও স্পষ্ট করে দেওয়া। সুন্দরবন জেলা পুলিশের তরফ খেকে কোটেশ্বর রাও বলেছেন, 'গঙ্গাসাগর মেলায় মোট ১২ হাজার পুলিশবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। নদীপথে যাতে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে, সেই জন্য বিশেষ ভাবে নজরদারি চালানো হচ্ছে।' সম্প্রতি মুর্শিদাবাদ থেকে ধরা পড়েছে জামাত - উল - মুজাহিদিন বাংলাদেশ- এই সংগঠনের জঙ্গি। পাশাপাশি অসম থেকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্যদিকে বাংলাদেশের পরিস্থিতি অস্থির। আর সেই কারণে বাংলাদেশ থেকে সাধারণ মানুষের অনুপ্রবেশ একটি উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়াচ্ছে রাজ্যের কাছে। তাই প্রথম থেকেই সতর্ক রয়েছে প্রশাসন। সম্প্রতি হাবড়া, ক্যানিং-এ গ্রেফতার করা হয়েছে কয়েক জনকে। যা রাজ্য পুলিশের উদ্বেগ বাড়িয়ে দিয়েছে।
গঙ্গাসাগর মেলাঃ
গঙ্গাসাগর মেলা ধর্মীয় মেলা। দেশের নানা প্রান্ত থেকে মানুষ আসেন পূণ্যস্নানের জন্য। আগামী ১০-১৫ জানুয়ারি গঙ্গাসাগর মেলা। সাগরদ্বীপের পবিত্র অঞ্চলে অন্যবারের মত এবারও বসছে মেলা। যার প্রস্তুতিত তুঙ্গে। রাজ্যের পাশাপাশি কেন্দ্রও মেলার জন্য সহযোগিতা করে। পূর্বরেল ১২টি বিশেষ ট্রেন চালাবে বলে আগে থেকেই ঘোষণা করেছে। অন্যদিকে রাজ্য সরকার গঙ্গাসাগর উপলক্ষ্যে চালায় বাস ও বিশেষ ভেসেল। এবারও তার ব্যবস্থা করা হবে। নবান্ন সূত্রে খবর, গঙ্গাসাগর মেলায় আসার ক্ষেত্রে মূলত দু’টি পথকে ব্যবহার করেন তীর্থযাত্রীরা। সবচেয়ে বেশি তীর্থযাত্রী আসেন কাকদ্বীপের লট নম্বর-৮ থেকে। সাগরের দ্বিতীয় প্রবেশপথ হল নামখানার চেমাগুড়ি থেকে। দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার সুন্দরবন জলসীমানা প্রায় ১৫০ কিমি বিস্তীর্ণ।
জলপথে নিরাপত্তাঃ
মেলার সময় বঙ্গোপসাগরে উপকূলরক্ষী বাহিনী ও নৌবাহিনী কড়া নজরদারি চালানো শুরু করেছে। সুন্দরবন পুলিশ জেলার পক্ষ থেকেও বঙ্গোপসাগর এবং নদীতে এফআইবি দিয়ে সার্চিং অপারেশন ও পেট্রলিংয়ের কাজ চালানো হচ্ছে। গোবর্ধনপুর, নামখানা, ফ্রেজারগঞ্জ, কাকদ্বীপ ও সাগর জুড়ে চলছে এই পেট্রলিং। এমনকি মৎস্যজীবীদের ট্রলারেও তল্লাশি চালানো হচ্ছে। মৎস্যজীবীদের বৈধ পরিচয়পত্র, লাইসেন্স খতিয়ে দেখছে জেলা পুলিশ। জলপথে অচেনা কিছু চোখে পড়লে পুলিশকে খবর দিতে বলা হয়েছে মৎস্যজীবীদের। উপকূলরক্ষী বাহিনী, নৌবাহিনী এবং বিএসএফের সঙ্গে সমন্বয় রেখেই নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা হচ্ছে।
কুম্ভমেলাতে হামলার ছকঃ
অন্যদিকে এবার প্রয়াগরাজে মহাকুম্ভ মেলাতেও হামলার ছক কষেছে খালিস্তানি জঙ্গিরা। পান্নুম কুম্ভমেলায় জঙ্গি হামলা চালাতে পারে বলে হুমকি দিয়েছে। গোয়েন্দাদের অনুমান সাধুর ছদ্মবেশে জঙ্গিরা হামলা চালাতে পারে। আর সেই কারণে সাধুদেরও পরিচয়পত্র নিয়ে আসার নির্দেশ জারি করেছে। মোটকথা শান্তিপূর্ণ ভাবে কুম্ভমেলা আয়োজন ও সমাপ্তি করাই এখন উত্তরপ্রদেশ ও ভারতের প্রশাসনের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ।
আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।