সংক্ষিপ্ত

নতুন ভোটার তালিকায় স্থান পায়নি রাজ্যের প্রায় সাত লক্ষ ভোটার। নির্বাচন কমিশন সূত্রের খবর কার্জ নিস্ক্রিয় হয়ে যাওয়ায় তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।

 

বিধানসভা ভোটের ঘণ্টা বেজে গেল। নতুন বছরের প্রথমেই রাজ্যের চূড়ান্ত ভোটার তলিকা প্রকাশ করল নির্বাচন কমিশন। তবে তালিকা থেকে বাদ গেছে প্রায় সাত লক্ষ ভোটারের নাম। তালিকায় যুক্ত হয়েছে আরও ১০ লক্ষ ৭৮ হাজার ভোটারেরর নাম। ২০২৫ সালের ১ জানুয়ারির হিসেব অনুসারে এই তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। আগামী বছর রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। তার প্রস্তুতি যেমন শাসক দল শুরু করেছে তেমনই শুরু করে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। রাজ্যে ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এবার চতুর্থ মেয়াদের জন্য ক্ষমতা ধরে রাখতে মরিয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দল ও প্রশাসনকে এখন থেকেই শক্তপোক্ত করতে উদ্যোগী হয়েছেন তিনি।

নতুন ভোটার তালিকায় স্থান পায়নি রাজ্যের প্রায় সাত লক্ষ ভোটার। নির্বাচন কমিশন সূত্রের খবর কার্জ নিস্ক্রিয় হয়ে যাওয়ায় তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। কমিশনের তথ্য অনুযায়ী যাদের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে তাদের অধিকাংশেরই মৃত্যু হয়েছে। এই রাজ্য থেকে অন্যত্র চলে দিয়েছে এমন ভোটারের সংখ্যা প্রায় ৩ লক্ষ। তাদের নামও বাদ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ৯ হাজারের কিছু বেশি ভোটারের নাম তালিকায় দুই জায়গায় নথিভুক্ত করা ছিল। সেই নামগুলিও বাদ দেওয়া হয়েছে।

এই রাজ্যের ভোটার তালিকায় নিয়ে সম্প্রতি অভিযোগ তুলেছিল বিজেপি। গত মাসেই রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী অধিকারিকের দফতরে দিয়ে দেখা করেছিল বিজেপির এক প্রতিনিধি দল। তাদের অভিযোগ ছিল ১৭ লক্ষেরও বেশি জনের নাম ভোটার তালিতায় দুইবার করে রয়েছে। বিজেপির দাবি ছিল এজাতীয় ভোটারদের সচিত্র পরিচয়পত্রে ছবি এক থাকলেও পরিচয় রয়েছে অন্য। এজাতীয় বেআইনি ভোটারের সংখ্যা রাজ্যে প্রায় ৩২ হাজার ৮৮৬ জন বলেও দাবি করেছিল বিজেপি। পাশাপাশি রাজ্যে মৃত ভোটারদের নামও ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয় না বলেও অভিযোগ করেছিল বিজেপির। কিন্তু বিজেপির অভিযোগ পুরোপুরি সত্য নয় তা প্রমাণ হয়ে গেল নির্বাচন কমিশনের নতুন তালিকা থেকে।

সম্প্রতি বাংলাদেশের অস্থিরতার কারণে সীমান্তদিয়ে অনুপ্রবেশ হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অবৈধ ভাবে বাংলাদেশ থেকে ভারতে এসে জাল নথিপত্র তৈরি করে নেওয়ার অভিযোগও উঠেছে। কলকাতায় এক অনুষ্ঠানে রাজ্যের মন্ত্রী তথা তৃণমূল কংগ্রেস নেতা ফিরহাদ হাকিম বলেছেন, জাল নথি দেখিয়ে বা ভুয়ো নাম ভোটার তালিকায় রয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখার দায়িত্ব সম্পূর্ণরূপে নির্বাচন কমিশনের। তৃণমূল-বিজেপির এই দ্বন্দ্বের মধ্যেই সোমবার নতুন ভোটার তালিকা প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন। নতুন তালিকায় বাদ গিয়েছে ৬ লক্ষ ৯৬ হাজার ১৩০ জনের নাম।

নির্বাচন কমিশনের প্রকাশিত চূড়ান্ত ভোটার তালিকায় বাংলায় ভোটারের সংখ্যা ৭ কোটি ৬৩ লক্ষ ৯৬ হাজার ১৬৫ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটারের সংখ্যা ৩ কোটি ৮৭ লক্ষ ৯৩ হাজা ৭৪৩ জন। মহিলা ভোটারের সংখ্যা ৩ কোটি ৭৬ লক্ষ ৬১১ জন। রাজ্যে তৃতীয় লিঙ্গের ভোটারের সংখ্যা ১ হাজার ৮১১ জন। বর্তমানে দেশে চার বার ভোটার তালিকায় নাম সংযোজন-বিয়োজন করা হয়। এর পরে এপ্রিল, জুলাই এবং অক্টোবর মাসে পুনরায় এই প্রক্রিয়া হবে।

সোমবার এই রাজ্যের পাশাপাশি দিল্লিরও ভোটার তালিকা প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন। দিল্লিতে ভোটারের সংখ্যা ১ কোটি ৫৫ লক্ষ ২৪ হাজাক ৮৫৮ জন। দিল্লিতে বিধানসভা নির্বাচনের কাউন্টডাউন শুরু হয়ে গেছে। ইতিমধ্যেই কংগ্রেস, বিজেপি ও আপ বিধানসভা নির্বাচনে প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করতে শুরু করেছে। দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনে আম আদমি পার্টির প্রধান প্রতিপক্ষ বিজেপি। যদিও খুব একটা পিছিয়ে থাকবে না কংগ্রেস।

আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।