সংক্ষিপ্ত

“আমাদের দেশে রাষ্ট্রপতি শাসন তৈরি করে দেওয়া দরকার।” ভোট নিয়ে ক্ষোভ উগড়ে দিলেন ভাস্কর, খরাজ, দোলনরা…..

সামনেই লোকসভা ভোট। তারমধ্যে তীব্র দাবদাহ। এদিকে ভোটের প্রচারে বেরিয়েছেন তাবড় তাবড় অভিনেতারা। লোকসভা ভোটে যেন তারকা প্রার্থীর ভিড়। কিন্তু এই বিষয়ে কী মতামত অন্যান্য টেলি অভিনেতাদের। লোকসভা ভোট নিয়ে কী প্রত্যাশা তাঁদের? এই নিয়ে টিভি নাইন বাংলার কাছে মুখ খুললেন অভিনেত্রী দোলন রায়, অভিনেতা খরাজ মুখোপাধ্যায় এবং ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়রা।

কী দেখে অভিনেতা ভোট দেন এই প্রসঙ্গে ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, “সত্যি বলতে গেলে ভোট দিতে যেতে আমার খুবই ভয় লাগে জানেন। পান থেকে চুন খসলেই গুলি চালিয়ে দেয়। যুদ্ধকালীন একটা পরিস্থিতি তৈরি হয় চারপাশে। ভোট না অন্য কিছু! মনে হয় চোরের দায়ে ধরা পড়েছি। অনেকগুলো বছর আগে বাবার হাত ধরে ভোট দিতে যেতাম। একটা পরিচয়পত্র দেখালেই ভোট দিয়ে চলে আসতে পারতাম। এখন কত কড়াকড়ি। মেরে ডান্ডা করে দিই ঠান্ডা টাইপের একটা পরিস্থিতি ছিল না সেই সময়। এখন যদি সত্যিই কোথাও পান থেকে চুন খসে যায়, যার গুলি লাগার কথা তার লাগে না, অন্য কোনও নিরপরাধ মানুষ বেঘোরে প্রাণ হারায়। আমি কিন্তু বেশিরভাগ সময় ভোটই দিই না। আপনাদের প্রতিবেদনে সোজাসুজি লিখে দিন খরাজ মুখোপাধ্যায় ভোট দিতে যেতে ভীষণ ভয় পান। ওরকম একটা গোলাগুলি পরিস্থিতির মধ্যে আমি ভোট দিতে যাব কেন বলুন তো! আমাদের দেশে রাষ্ট্রপতি শাসন তৈরি করে দেওয়া দরকার। রাস্তায় মিলিটারি ঘুরে বেড়াবে, সেটাই ভাল হবে। সব লাইনে চলে আসবে।” ঠোঁটের আগায় বিতৃষ্ণা নিয়েই কথা বললেন তিনি।

অন্যদিকে অভিনেত্রী দোলন রায় জানান, “আমি আর ভোট দিই না জানেন। আর যদি দিতে যাইও, সেটা নোটাকে দিই। এছাড়া ভোট দেওয়ার কোনও ইচ্ছা আমার। আমি দেব না ভোট। যে পার্টিই শাসনে আসুক না কেন, আমি তার

থেকে কোনও প্রত্যাশাই রাখি না। একটাই চাহিদা আমার-ভোটফোট সব বন্ধ হয়ে যাক এই দেশে। ভারতে মিলিটারি শাসন তৈরি হোক। সবকটা দলই তো চোর। ফলে ভোট দেওয়ার কিছু নেই। সব চোর। একটা চোরের দেশে আমরা থাকছি। পোড়া দেশ। মিলিটারি শাসন তৈরি না হলে সব রসাতলে যাবে।” দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলে উত্তর দেন অভিনেত্রী।

ভোট প্রসঙ্গে একগুচ্ছ ক্ষোভ উগড়ে দেন খরাজ মুখোপাধ্যায়। তিনি জানান, “অনেক কথা বলতে ইচ্ছা করছে জানেন। কিন্তু সত্যি কথা বলতে আমি কুণ্ঠিত। আমার ভোট দিতে যেতেই ইচ্ছা করছে না। এর কারণ, আমি ভোট দেব রোদে দাঁড়িয়ে, আমার নাগরিকত্বের সাক্ষ্য দেব, তারপর যাঁকে ভোট দেব, তিনি আমার জন্য কিছুই করবেন না। কিছুই হবে না আমার জন্য। এই বয়সে এসে এটাই আমার উপলব্ধি যে, সত্যি কিছুই হয় না ভোট-ফোট দিয়ে। সারমর্ম একটাই- যে যায় লঙ্কায়, সেই হয় রাবণা সিপিএম হোক, তৃণমূল হোক কিংবা বিজেপি, কংগ্রেস। কেউ কিছু করে না সাধারণ মানুষের জন্য। যদিও বা কিছু ঘোষণা করে, সবই চুরিচামারি হয়ে তাঁদেরই পকেটে চলে যায়। ওই যে সকলে বলছেন না, ভোটের দিন মাংস-ভাত খেয়ে বাড়িতে থেকো না, ভোটটা দিয়ে এসো। এটা নাগরিকত্বের অধিকার। হ্যাঁ, আমি আমার নাগরিকত্বের অধিকার প্রয়োগ করলাম। যাঁকে ভোট দিলাম, তিনি পাঁচ বছর ধরে চুরিই করে গেলেন। তাই আমার ভোট দিতে যেতে ইচ্ছা করে না। একদমই ইচ্ছে করে না। হয়তো যাব ভোট দিতে। আমি আবার ভোট দিতে গেলে আমার পাড়ায় খুবই উল্লাস হয়। সকলে প্রশ্ন করেন, আমি কেন ভোটে দাঁড়ালাম না। আমি দাঁড়ালে সকলে নাকি আমাকে ভোট দিতেন। কিন্তু আমি কোনও রাজনৈতিক দলের রং গায়ে মেখে লোকের জন্য কিছু করব না। করলে নিজের ক্ষমতায়, নিজের রোজগারে যতটা দরকার কতটাই করব।”