সংক্ষিপ্ত
“পশ্চাতে রেখেছ যারে সে তোমারে পশ্চাতে টানিছে”, রবি ঠাকুরের উক্তি মাথায় রেখেই গ্রামের শিশুদের শিক্ষার ভার নিল শহরের স্কুল-কলেজের পড়ুয়ারা।
“হে মোর দুর্ভাগা দেশ, যাদের করেছ অপমান,/ অপমানে হতে হবে তাহাদের সবার সমান”, কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরই বাংলার তরুণ প্রজন্মের আদর্শ হয়ে উঠলেন শহর থেকে গ্রামে। কে বলে ইংরেজি শিক্ষায় পিছিয়ে আছে গ্রামবাংলার ছেলেমেয়েরা? এবার তাদেরই শিক্ষার আলোয় নিয়ে এলেন শহরের ছাত্রছাত্রীরা। সুন্দরবন এবং দক্ষিণ ২৪ পরগণার প্রত্যন্ত অঞ্চলে প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের জন্য ইংরেজি শিক্ষার ক্লাস শুরু করলেন শহরের স্কুল, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। 'আংরেজ়ি মাধ্যম' নামে অভিহিত, রোটারি ক্লাব অফ কলকাতা আভ্যান্নার উদ্যোগটি হল এমন শিশুদের মধ্যে ইংরেজি লেখা এবং বলার দক্ষতা বাড়ানোর একটি প্রয়াস যাদের ভাষায় পারদর্শী হওয়ার সুযোগ নেই। 'একেকজন একেকজনকে শেখান' ধারণার উপর ভিত্তি করে, কথা বলার দক্ষতা, প্রাথমিক ইংরেজি জ্ঞান এবং লেখার দক্ষতা বিকাশের উপর নজর রেখে একটি পাঠ্যক্রম তৈরি করা হয়েছে। প্রকল্পটি ২০২২ সালের অগাস্ট মাসে শুরু হয়েছিল এবং টানা ছয় মাস ধরে চলেছে।
বিড়লা ভারতী স্কুলের ৫০ জন ছাত্রছাত্রী এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় এবং যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কয়েকজন ছাত্রছাত্রীর উদ্যোগে এটি এখন আরও ছয় মাসের জন্য বাড়ানো হয়েছে। বিড়লা ভারতী স্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র সিদ্ধার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, "আমি বাসন্তীর চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রীকে পড়াচ্ছি এবং তিন মাসে তার উন্নতি হয়েছে।" ফেব্রুয়ারীতে যোগদান করা যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজীর ছাত্রী বৃষ্টি রায় বারুইপুরের নয় বছর বয়সী পড়ুয়াকে পড়াচ্ছেন। তিনি বলেছেন, “আমি একজন শিক্ষক হতে চাই এবং আমি অভিজ্ঞতা অর্জন করছি।”
বিড়লা ভারতী স্কুলের অধ্যক্ষা অপলা দত্ত বলেন, “আমরা একমাত্র শহরের স্কুল, যারা এখনও এই মহৎ উদ্যোগের অংশ হয়ে আছি।” রোটারি ক্লাব অফ ক্যালকাটা অভ্যান্না, বিড়লা ভারতী স্কুল, ক্যালকাটা ইন্টারন্যাশনাল স্কুল, ডিপিএস রুবি পার্ক, মহাদেবী বিড়লা ওয়ার্ল্ড একাডেমি, সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ, প্র্যাট মেমোরিয়াল, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়-এর মতো প্রতিষ্ঠানের স্বেচ্ছাসেবকদের নিয়ে প্রকল্পটি শুরু করেছে। রোটারি ক্লাব অফ ক্যালকাটা আভ্যান্নার সভাপতি শীলা জানকিরাম বলেন, “গ্রামাঞ্চলে ইংরেজি শিক্ষকের অভাব রয়েছে এবং প্রাথমিক ইংরেজি শেখার দাবি রয়েছে। এটি বাংলায় প্রথম ভার্চুয়াল মিশ্রিত ই-লার্নিং প্রকল্প যেখানে মূল লক্ষ্য ইংরেজি।” প্রকল্পের সদস্য জিয়া শ বলেছেন, “আমি আমার এলাকার একজন ছাত্রকে পড়িয়েছিলাম, যে তখন প্রথম শ্রেণীতে ছিল। সে দ্বিতীয় শ্রেণিতে উন্নীত হয়ে গেছে, কিন্তু ছয় মাসের প্রকল্প শেষ হওয়ার পরেও সে তার প্রশ্ন নিয়ে আমার কাছে এসেছিল।”
শহরের অন্যান্য স্কুল, যেমন প্রমীলা মেমোরিয়াল অ্যাডভান্সড স্কুল এবং ডিপিএস মেগা সিটি এই প্রকল্পের একটি অংশ হওয়ার জন্য আলোচনা শুরু করেছে।
আরও পড়ুন-
সাভারকারকে অপমান করবেন না, বিরোধী জোটে ফাটল তৈরি হবে: রাহুল গান্ধীকে উদ্ধব ঠাকরের সতর্কবার্তা
ঘণ্টার পর ঘণ্টা নগ্ন দেহে সিলিন্ডারে বাঁধা অবস্থাতেই পড়ে ছিল তিলজলার ধর্ষিতা শিশু, পুলিশের চূড়ান্ত গাফিলতির অভিযোগে থানা ঘেরাও
সোম ও মঙ্গলবার কাজে বেরোনোর আগে দেখে নিন কোন সময়ে বন্ধ রাখা হবে কোন কোন রাস্তা