মোদী-রাহুল থেকে পাকিস্তান, 'সবক‍' শিখিয়ে ভোটের মুখে নায়ক ফেসবুক

লোকসভা ভোটের মুখে সব দলকে কড়া দাওয়াই দিয়ে নায়কের আসনে আপাতত ফেসবুক। ভুঁয়ো খবর ছড়ানো এবং অসঙ্গতিপূর্ণ তথ্য ছড়ানোর বিরুদ্ধে লোকসভা ভোটের আগে জোরকদমে মাঠে নামল ফেসবুক।

arka deb | Published : Apr 22, 2019 12:03 PM IST / Updated: Apr 27 2019, 04:42 PM IST

অবাধ্য ছাত্রকে কান ধরে শিক্ষা দেওয়া। আর তাতেই নরেন্দ্র মোদী থেকে রাহুল গান্ধী সবাই সিধে। লোকসভা ভোটের মুখে সব দলকে কড়া দাওয়াই দিয়ে নায়কের আসনে আপাতত ফেসবুক।

ভুঁয়ো খবর ছড়ানো এবং অসঙ্গতিপূর্ণ তথ্য ছড়ানোর বিরুদ্ধে লোকসভা ভোটের আগে জোরকদমে মাঠে নামল ফেসবুক। প্রথমেই রোষের মুখে পড়ল কংগ্রেস। কংগ্রেসের আইটি সেলের নিয়ন্ত্রণে থাকা ৬৮৭টি পেজকে সরানো হল ফেসবুক থেকে।

ভোট প্রচারে রাজনৈতিক নেতারা আগে দেওয়াল এর সদ্ব্যবহার করতেন। যুযুধান পক্ষের বিরুদ্ধে বিষোদগার হোক বা কাজের ফিরিস্তি, রাত জেগে লেখা দেওয়ালেই ফুটে উঠত রাজনীতির কারবারিদের তামাম লক্ষ্য। দিন বদলেছে, ডিজিটাল জামানায় রাজনৈতিক নেতাদের প্রথম পছন্দ ভার্চুয়াল দেওয়াল। একাধিক পেজ থেকে দিন রাত রাজনৈতিক দলগুলির প্রচার চলে। মাঝে মাঝেই সেখানে রঙ চড়ানো হয়। তথ্য বিকৃতিও ঘটে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় এই পেজগুলির নিয়ন্ত্রক দলেরই  আইটি সেল। ভোটের মুখে সেই পাক পরিষ্কারেই নেমেছে ফেসবুক।

সোমবার ফেসবুকের নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়ের প্রধান ন্যাথনিয়েল গ্লেচার সাংবাদিকদের জানান, "ভুঁয়ো অ্যাকাউন্ট বানিয়ে অসত্য তথ্য ছড়ানো হচ্ছিল। এই কারণেই অ্যাকাউন্টগুলি বন্ধ করা হয়েছে। এই কাজে জড়িত ব্যক্তিরা কংগ্রেসের আইটি সেলের মদতপুষ্ট‍।"

এখানেই শেষ নয়। ফেসবুকের তদন্তে উঠে এসেছে পাকিস্তানের নামও। দেখা যাচ্ছে পাকিস্তান মিলিটারির জনসংযোগ বিভাগের কর্মীরা ফেক অ্যাকাউন্ট করে কাশ্মীর সমস্যা-সহ একাধিক স্পর্শকাতর বিষয়ে গুজব ছড়াচ্ছে। এই ধরণের ১০৩ টি পেজের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে ফেসবুক।

বারসন কোন ও ওলফ এর সৌজন্যে ওয়ার্ল্ড লিডারস অন ফেসবুক নামক এক সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে, এই সমীক্ষা আরও জানাচ্ছে, ২০১৪ সালে ভোটের দিন ঘোষণা থেকে শুরু করে শুরু করে ভাগ্য নির্ধারণ হওয়া পর্যন্ত সময়ে ভারতের নির্বাচন নিয়ে ফেসবুকে ২ কোটি ৯০ লক্ষ লোক ২২ কোটি ৭০ লক্ষ ইন্টারকশ্যানে (পোস্ট, লাইক, কমেন্ট, শেয়ার) জড়িয়েছে। পরিসংখ্যান বলছে এই বাদানুবাদ ফেসবুকে গোটা ভারতবর্ষের বাদানুবাদের ২/৩ অংশ। খুব স্বাভাবিক ভাবেই পাঁচ বছর পেরিয়ে অব স্থা আরও ঘোরালো।  এই অবস্থায় লোকসভা নির্বাচনের মুখেই শুধু কংগ্রেসই নয়, সব রাজনৈতিক দলেরই ফেসবুক-যোগ খতিয়ে দেখতে চাইছে জুকেরবার্গের সংস্থা। 

মুখে যতই আস্ফালন করুন না কেন, ভারতীয় নেতারা জানেন ফেসবুক তাদের বড় ভরসা। লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে তার থেকে বড় হাতিয়ার আর নেই। এই অবস্থায় ফেসবুক পরিত্রাতার ভূমিকা অভিনয় করছে যেন। যদিও নিন্দুকদের বক্তব্য, ঠগ বাছতে গা উজার হয়ে যাবে।
 

Share this article
click me!