শিবপুরাণ আঠারোটি মহাপুরাণের অন্যতম এবং সংস্কৃত ভাষায় লিখিত হিন্দু ধর্মগ্রন্থ। এই পুরাণটি মূলত হিন্দু দেবতা শিব ও দেবী পার্বতীকে কেন্দ্র করে রচিত হলেও এতে অন্যান্য দেবদেবীর উল্লেখ রয়েছে। শিবপুরাণের বিষয়বস্তুর মধ্যে শিবসংক্রান্ত ঘটনাবলি, সৃষ্টিতত্ত্ব, পৌরাণিক উপাখ্যান, দেবদেবীর সম্পর্ক, নীতিকথা, যোগ, তীর্থস্থান, ভক্তি, নদী, ভূগোল প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য। দ্বিতীয় সহস্রাব্দের শুরুর দিকে শিবের উপাসনা এবং ঐতিহাসিক তথ্যাবলির এক গুরুত্বপূর্ণ উৎস শিবপুরাণ। এই গ্রন্থের একটি অংশে, শিব মন, বাক্য এবং কর্মের মাধ্যমে মানুষের দ্বারা করা পাপ সম্পর্কে বলেছেন। যার মধ্যে ৫ ধরণের পাপ বর্ণিত হয়েছে যা অজান্তেই আমরা করে থাকি। এই পাপগুলি এড়াতে এই শাস্ত্রে দেওয়া রয়েছে প্রতিকারও। জেনে নেওয়া যাক এই পাপগুলি কী কী...
আরও পড়ুন- ফাল্গুন মাস কেমন প্রভাব ফেলবে মিথুন রাশির উপর, দেখে নিন
মানসিক- মনের মধ্যে ভুল চিন্তা ভাবনা করা মানসিক পাপের অধীনে আসে। আমরা অনেক সময় এই ধরনের ভুল করে থাকি। আর আমাদের মনকে নিয়ন্ত্রণ করার এই ক্রিয়া নামটি হ'ল যোগ। অতএব, প্রতিদিন আমাদের অবশ্যই ধ্যানের মধ্যে দিয়ে এই মানসিক যোগ বৃদ্ধি করতে হবে।
আরও পড়ুন- কেমন কাটবে শনিবার সারাদিন, দেখে নিন আজকের রাশিফল
বাচিক- অনেক সময়, কথা বলার সময় কোনও বলা কথা শ্রোতার উপর কী প্রভাব ফেলবে তা আমরা খেয়াল করি না। কাউকে আঘাত করে এমন কিছু কথা বলাও তাকে বাচিক পাপ হিসেবে বিবেচিত হয় শিব পুরানে। সুতরাং কারও সঙ্গে কথা বলার সময়, মনে রাখবেন যে আমাদের কথাগুলি কোনও মানুষকে যেন কোনওভাবে তাঁর ভাবাবেগে আঘাত না করে।
আরও পড়ুন- ১১৭ বছর পর আজকের এই মহাযোগ, এই তিথিতেই কাটিয়ে উঠুন কালসর্প দোষ
শারীরিক- প্রকৃতি ঈশ্বরের স্বরূপ। আমরা প্রতিনিয়ত এই প্রকৃতিকেই নানা ভাবে ধ্বংসের মুখে নিয়ে যাচ্ছি। গাছ কেটে ফেলছি, প্রাণী হত্যা করছি। অজান্তে এমন কাজ বহু করছি যা প্রকৃতির নিয়ম বিরুদ্ধ। তাই এই ধরনের কাজ করা থেকে বিরত থাকতে হবে। আমাদের স্বার্থেই প্রকৃতিকে রক্ষা করার দায়িত্ব আমাদেরই।
নিন্দা- অন্যের নিন্দা করার অভ্যাস প্রায় প্রত্যেক মানুষের মধ্যেই রয়েছে। আমরা এমনকি নিন্দা করার সময় তপস্বী, গুরুজন, প্রবীণ ব্যক্তি সকলের বিরুদ্ধে গিয়ে কটু কথা বলে ফেলি। শিবপুরাণ মতে, প্রবীণদের সর্বদা সম্মান করা উচিত। যদি তাঁদের কার্যে কোনও প্রকার ভুল হয়ে থাকে তবে তা কটু কথা দ্বারা নয় বুঝানোর চেষ্টা করুন।
ভুল সানিধ্য- চুরি, হত্যা এবং ব্যভিচার পাপ, এই সমস্ত কাজের সঙ্গে যারা যুক্ত তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখাও পাপের মধ্যেই পড়ে। এই পাপ এড়াতে মুনি ঋষিরা সৎসংগঠনের ব্যবস্থা করেছেন। যখনই কোনও সুযোগ আছে, একজন সৎ ব্যক্তির সঙ্গে গিয়ে আলোচনা করুন। তিনিই আপনাকে সঠিক পথের দিশা দেখাবেন।