ঘরে দেবদেবীদের প্রতিমা ও প্রতীক স্থাপনের রীতি প্রাচীন কাল থেকেই চলে আসছে। এক্ষেত্রে বিশ্বাস করা হয় যে ঘরে ঈশ্বরের প্রতিমাগুলি রাখা এবং প্রতিদিন পুজো করা হয়, সেখানে বাস্তু বিশুদ্ধ রাখে এবং নেতিবাচকতা দূর করে। অনেক বাড়িতেই শিবলিঙ্গকে ঠাকুরের আসনে রেখে পুজো করেন অনেকেই। জ্যোতিষশাস্ত্র মতে, শিবলিঙ্গকে অত্যন্ত সংবেদনশীল বলে মনে করা হয়। অতএব, আপনি যদি শিবলিঙ্গকে ঘরে রাখেন তবে কিছু জিনিস সব সময় মনে রাখা উচিত।
আরও পড়ুন- ফেব্রুয়ারি মাসে ৫টি গ্রহ রাশি পরিবর্তন করবে, জেনে নিন তার প্রভাবগুলি
বেদান্ত বৈদিক সনাতন ধর্মের ভিত্তি তথা বেদের শিরোভাগ; সম্পূর্ণ বেদান্তে শিব ছাড়া কারও সম্পর্কে এভাবে বলা হয়নি। শুধুমাত্র শিবের ক্ষেত্রেই বলা হয়েছে "শিব এব কেবলঃ"। শাস্ত্র মতে, সৃষ্টির পূর্বে একমাত্র শিবই বর্তমান ছিলেন। তিনিই লীলাচ্ছলে ব্রহ্মারূপে সৃষ্টি করেন, বিষ্ণুরূপ ধারণ করে পালন করেন আবার রুদ্ররূপ ধারন করে সংহার করেন। ব্রহ্মা-বিষ্ণু-হর তারই সৃষ্টি-স্থিতি-লয়ের তিনটি রূপভেদ মাত্র। তাই এই তিন রূপের মধ্যে সত্বার কোন পার্থক্য নেই। তবু সনাতন রূপ পরম শিবরূপই মূলস্বরূপ। জেনে নেওয়া যাক বাড়িতে শিবলিঙ্গ থাকলে যে নিয়মগুলি মেনে চলা উচিৎ।
আরও পড়ুন- বাড়িতে দুটো শঙ্খ ব্যবহার করেন, হতে পারে চরম বিপদ
ঘরে শিবলিঙ্গ থাকলে, দেবদেবীদের ভাঙা বা খণ্ডিত প্রতিমাগুলি ঘরে রাখা উচিত নয়। তবে শিবলিঙ্গ রাখা যেতে পারে, কারণ শিবলিঙ্গকে কখনও খণ্ডিত বলে মনে করা হয় না। শিবলিঙ্গকে নিরাকার বলে মনে করা হয়। ভাঙা শিবলিঙ্গও এই কারণে শ্রদ্ধাশীল।
শিবপুরাণ অনুসারে শিবলিঙ্গকে বাড়িতে খুব বেশি রাখা উচিত নয়। বাড়িতে একটি ছোট শিবলিঙ্গ রাখা অত্যন্ত শুভ কাজ।
বাড়িতে খুব বড় আকারের শিবলিঙ্গ রাখা একদম উচিত নয়। বাড়িতে যেখানে শিবলিঙ্গ রাখবেন, সেখানে প্রতিদিন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখবেন। শিবলিঙ্গকে ঘরে রাখতে চাইলে পবিত্রতার বিশেষ যত্ন নিন। শিবলিঙ্গ পুজো করার সময় ভক্ত যদি উত্তরের দিকে মুখ করে থাকেন তবে এটিকে সেরা হিসাবে বিবেচনা করা হয়।
প্রতিদিন সকালে ও সন্ধ্যায় শিবলিঙ্গের পুজো করুন। আপনি যদি ঠিক মতো উপাসনা করতে না পারেন তবে একটি প্রদীপ জ্বালান। সেই সঙ্গে ১০৮ বার 'ওম নমঃ শিবায় মন্ত্র' জপ করুন। মন্ত্র জপ করা উচিত রুদ্রাক্ষের জপমালা দিয়ে।
শিবলিঙ্গের পাশাপাশি সম্ভব হলে গণেশ, মাতা পার্বতী এবং নন্দীর প্রতিমাও রাখুন। পুজোর শুরুতে এটি গণেশ পুজো দিয়ে করা উচিত।
প্রতিদিন শিবলিঙ্গে জল উত্সর্গ করা উচিত। বিল্বপাত্র অর্পণ করে কর্পূর জ্বালিয়ে আরতি করুন।