অক্ষয় তৃতীয়া হল চান্দ্র বৈশাখ মাসের শুক্লাতৃতীয়া অর্থাৎ শুক্লপক্ষের তৃতীয়া তিথি। হিন্দু ও জৈন ধর্মাবলম্বীদের কাছে এটি একটি বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ তিথি।এই শুভদিনে জন্ম নিয়েছিলেন বিষ্ণুর ষষ্ঠ অবতার পরশুরাম। বেদব্যাস ও গণেশ এই দিনে মহাভারত রচনা আরম্ভ করেন। এদিনই সত্য যুগ শেষ হয়ে ত্রেতাযুগের সূচনা হয়। এদিনই রাজা ভগীরথ গঙ্গা দেবীকে মর্ত্যে নিয়ে এসেছিলেন। এদিনই কুবেরের তপস্যায় তুষ্ট হয়ে মহাদেব তাকে অতুল ঐশ্বর্য প্রদান করেন। এদিনই কুবেরের লক্ষ্মী লাভ হয়েছিল বলে এদিন বৈভব-লক্ষ্মীর পূজা করা হয়। আগামীকা রবিবার ২৬ এপ্রিল ২০২০ শুভ অক্ষয় তৃতীয়া পালন।
আরও পড়ুন- আপনার কি বৃষ লগ্ন, তবে আপনার মধ্যে রয়েছে এই বিশেষ গুণগুলি
সমস্ত নিয়ম মেনে এই দিনে ব্রত পালন করলে সকল সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন। অক্ষয় তৃতীয়া ব্রত বাংলার হিন্দুসমাজের অশাস্ত্রীয় ব্রতগুলির অন্তর্গত একটি ব্রত। গ্রামীণ বাংলার বাঙালি হিন্দুঘরের পুরুষ এবং মহিলারা সর্বসুখের অধিকারী হতে এবং মৃত্যুর পর বৈকুণ্ঠবাসের সৌভাগ্যলাভ করতে এই ব্রত পালন করেন। এটি বৈশাখ মাসের শুক্লপক্ষে অক্ষয় তৃতীয়া তিথিতে পালন করা হয়। পরপর আট বছর ব্রতটি উদযাপন করতে হয়। অক্ষয় তৃতীয়া ব্রত পালনের প্রথম পর্যায়ে প্রয়োজনীয় উপকরণ অর্থাৎ নতুন কাপড়, কলসী, যব, ভুজ্জি, তালপাতার পাখা ও গামছা প্রদান করতে হয়। দ্বিতীয় পর্যায়ে প্রথমে যব দিয়ে লক্ষ্মী-নারায়ণ পূজা করতে হয়। তারপর ভুজ্জি, জলভরা কলসী, তালপাতার পাখা,গামছা বা নতুন কাপড় ব্রাহ্মণকে প্রদান করতে হয়।
আরও পড়ুন- বৈশাখ মাস কেমন প্রভাব ফেলবে তুলা রাশির উপর, দেখে নিন
বিনায়ক গনেশের আরেক নাম আর সেই কারণে অনেকেই তাই এই উপবাস থেকে ব্রত পালন করেন। এই তিথিতে, সিদ্ধিদাতা গণেশকে দিনে দুবার, একবার বিকেলে এবং একবার বিকেলে আরাধনা করা হয়। শুক্লপক্ষের তৃতীয়া তিথিতে ব্যবয়ার জন্য শুভ দিন হিসেবে পালন করা হয়। এই দিনে তাই পয়লা বৈশাখের মত হালখাতার পুজো করা হয়। অক্ষয় তৃতীয়া পালনের জন্য সকাল বেলা তাড়াতাড়ি উঠে স্নান সেরে নিন। তারপরে, গণেশ পুজোর প্রস্তুতি শুরু করুন। লক্ষী ও গণেশের মূর্তির বা প্রতিকৃতিতে সিঁদুরের ফোঁটা দিন। ঠাকুরের জন্য ভোগ, ফল বা মিষ্টি নিবেদন করুন। নিয়ম এবং সংযম পালন করে সিদ্ধিদাতার আরাধণা করুন। সন্ধ্যায় আবার হাত-মুখ ধুয়ে গণেশের আরতি করুন। রাতে চাঁদের উপাসনা করে অর্ঘ্য অর্পণ করুন। এরপরে, পরিবারের সঙ্গে প্রসাদ বিতরণ করে উপবাস ভঙ্গ করুন। এই নিয়ম পালনে মনের সকল ইচ্ছা পূরণ ও সংসারের সমৃদ্ধি ফিরিয়ে আনুন।