হিন্দু শাস্ত্রে বর্ণিত, এই আড়ম্বরহীন দেবতা সর্বদা মানুষের সঙ্গে থাকেন। তবে, তাঁর কৃপা পাওয়ার জন্য মানুষের চরিত্রের মূলে এই গুনগুলি থাকা আবশ্যিক।
রুদ্র মূর্তি থেকে তুষ্ট মূর্তি, মানুষের সবরকম আবেগের সঙ্গেই জরিয়ে থাকেন ভগবান শিব। তিনি যেমন রাগে নটরাজ, ঠিক তেমনই ভক্তদের পুজোয় তুষ্ট হয়ে যান খুব সহজ সাবলীল নৈবেদ্য পেলেই। তাই, ভগবান শিবের পুজো করার জন্য কোনও অতিরিক্ত আতিশয্যের প্রয়োজন হয় না। হিন্দু শাস্ত্রে বর্ণিত, এই আড়ম্বরহীন দেবতা সর্বদা মানুষের সঙ্গে থাকেন। তবে, তাঁর কৃপা পাওয়ার জন্য মানুষের চরিত্রের মূলে এই গুনগুলি থাকা আবশ্যিক।
-
প্রথম হল, দেবাদিদেব মহাদেবের কৃপা পাওয়ার জন্য মানুষকে অত্যন্ত সহজ এবং স্বাভাবিক থাকতে হয়। জীবন-ধারণের মধ্যে কোনও অতিরিক্ত আতিশয্য তিনি পছন্দ করেন না। যেসব মানুষের মনে বহু জটিল প্যাঁচ থাকে, যাঁরা খারাপ কাজ করার জন্য ইচ্ছা করে মিথ্যা কথা বলেন, অন্য মানুষের মনে আঘাত দেন, অর্থাৎ, যাঁদের সত্য সহজ জীবনধারণের মধ্যে বহুল জটিলতা থাকে, দেবতা নীলাম্বর কখনওই সেইসব মানুষদের সঙ্গে থাকেন না।
-
দ্বিতীয় হল, যেসমস্ত মানুষ অন্যান্য প্রাণীদের অকারণে আঘাত করেন, ভগবান শিব কখনওই তাঁদের আশীর্বাদ করেন না। প্রকৃতির সঙ্গে জুড়ে থাকাই তাঁর বৈশিষ্ট্য়। প্রকৃতিকে অকারণ বিনষ্ট করলে তিনি রুষ্ট হন।
-
দেবাদিদেব মহাদেব কখনও অহংকারী ব্যক্তির সঙ্গে থাকেন না। যেসমস্ত মানুষ নিজের জীবনের অর্জন বা ক্ষমতা নিয়ে অহংকার করেন এবং অন্যদের ছোট করে দেখেন, তাঁদের ওপর কখনওই দেবতার আশীর্বাদ থাকে না। কারণ, তাঁর কাছে ধনী-গরিব, শিক্ষিত-অশিক্ষিত সকল মানুষই সমান। তাই, যাঁরা সবসময় অতিরিক্ত অহংকারে ডগমগ থাকেন, সেইসব ব্যক্তিরা ভগবান শিবের খুবই অপ্রিয় পাত্র হন।
-
যেসব মানুষ সারাজীবন ধরে অন্য মানুষ বা প্রাণীদের সাহায্য করেন এবং সাহায্য করার জন্য উদগ্রীব থাকেন, তাঁরা প্রত্যেকটি পদক্ষেপে ভোলানাথের আশীর্বাদধন্য হন। মানুষ যদি নিজের শক্তির দুর্ব্যবহার না করে সেই শক্তি সবসময় অন্যদের ভালো কাজের জন্য নিয়োগ করেন, তাহলে মহাদেব তাঁর প্রতি খুবই তুষ্ট হন।