মহাদেবের মত বাস্তবেও বিষ পান করে জীবিত ছিলেন এই মহিলা, জেনে নিন কৃষ্ণভক্ত মীরার অজানা কাহিনী

Published : Dec 20, 2022, 11:59 AM ISTUpdated : Dec 20, 2022, 12:19 PM IST
Meerabai

সংক্ষিপ্ত

মীরা শ্রী কৃষ্ণের ভক্ত ছিলেন, কিন্তু শ্রী কৃষ্ণের সঙ্গে সংযোগ এবং শ্রী কৃষ্ণের সঙ্গে মিলিত হওয়ার সময় কালে, মীরার সঙ্গে এমন অনেক ঘটনা ঘটেছিল, যার সম্পর্কে অনেকেই জানেন না, এগুলো জানলে তবেই আপনি মীরার ভক্তি সম্পর্কে জানতে এবং বুঝতে পারবেন। 

একজন ভক্ত কেমন হওয়া উচিত এবং ভক্তি কেমন হওয়া উচিত তার সেরা উদাহরণ হল মীরা বাই। শৈশবে তার সঙ্গে এমন একটি ঘটনা ঘটেছিল, যার পরে মীরা তার কৈশোর থেকে তার মৃত্যু পর্যন্ত শ্রী কৃষ্ণকে তার সবকিছু হিসাবে গ্রহণ করেছিল এবং কেবল তাকে স্মরণ করে তার মধ্যে লীন হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু মীরা বাই সম্পর্কে কতটুকু জানেন শুধুমাত্র 'শ্রী কৃষ্ণ ভক্ত'। মীরা শ্রী কৃষ্ণের ভক্ত ছিলেন, কিন্তু শ্রী কৃষ্ণের সঙ্গে সংযোগ এবং শ্রী কৃষ্ণের সঙ্গে মিলিত হওয়ার সময় কালে, মীরার সঙ্গে এমন অনেক ঘটনা ঘটেছিল, যার সম্পর্কে অনেকেই জানেন না, এগুলো জানলে তবেই আপনি মীরার ভক্তি সম্পর্কে জানতে এবং বুঝতে পারবেন।

কে ছিলেন মীরাবাঈ-

মীরাবাঈ শুধু একটি নাম নয়, তার রয়েছে ভক্তি, বিশ্বাস ও শ্রদ্ধার মর্যাদা। মীরাবাঈ ১৫০৪ খ্রীষ্টাব্দে মেরতাতে রাজা রতন সিংহের বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। মীরা ছিলেন যোধপুরের রাঠোর রতন সিংয়ের একমাত্র মেয়ে। রাজপুতানা জাতিতে জন্ম নেওয়া মীরাবাঈয়ের বাড়ির বাইরে বেরোতে কঠোর নিষেধাজ্ঞা ছিল। কিন্তু শৈশবে মীরার সঙ্গে এমন একটি ঘটনা ঘটেছিল, যার পরে তিনি সম্পূর্ণরূপে শ্রী কৃষ্ণের ভক্ত হয়েছিলেন।

আট বছর বয়সে মীরাবাঈ শ্রীকৃষ্ণকে স্বামী হিসেবে গ্রহণ করেন-

মীরাবাঈয়ের বয়স যখন আট বছর, লোকালয়ে বিয়ের হচ্ছে দেখে মীরাবাঈ তাঁর মাকে জিজ্ঞেস করলেন তাঁর বর কে? মীরাবাঈয়ের সন্তানের কৌতূহল কমাতে করতে, তাঁর মা বললেন, তোমার স্বামী শ্রীকৃষ্ণ। এই ঘটনার পর মীরাবাঈ শ্রী কৃষ্ণকে নিজের সর্বস্বরূপে গ্রহণ করেন এবং তাঁর ভক্তিতে নিমগ্ন হন। তিনি শ্রী কৃষ্ণের মূর্তিকে স্নান করেন, নতুন পোশাক পরেন, খাবার দেন, গান করেন এবং নাচ করেন। বয়ঃসন্ধিকালে মীরা কৃষ্ণকে তার স্বামী মনে করতেন। তাই মীরা সর্বদা কৃষ্ণের ভক্তিতে মগ্ন হয়ে গান গাইতেন।

যাকে বিয়ে করেছিলেন মীরাবাঈ-

মীরাবাঈ মহারানা সাঙ্গের পুত্র ভোজরাজের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন, যাকে পরবর্তীতে মহারানা কুম্ভ বলা হতো। বিয়ের প্রথম দিনই মীরা তাঁর স্বামীকে বলেছিলেন যে তাঁর স্বামী একমাত্র শ্রীকৃষ্ণ। কিন্তু মহারানা কুম্ভ মীরার এই আলোচনাকে একটি রসিকতা বলে মনে করেন। তবে, ধীরে ধীরে শ্রী কৃষ্ণের প্রতি মীরার ভক্তি দেখে তিনিও নিশ্চিত হন যে মীরা শ্রী কৃষ্ণের জন্য পাগল। বিয়ের পরও মীরা শ্রীকৃষ্ণের ভক্তিতে মগ্ন হতে থাকে। তিনি মন্দিরে গিয়ে কৃষ্ণের মূর্তির সামনে গান গাইতেন এবং নাচতেন। মীরার এসব কর্মকাণ্ডে তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন রেগে যেতে থাকে।

যখন মীরাকে পান করতে হয়েছে বিষ-

কিছুকাল পর মীরার স্বামী যুদ্ধের সময় মারা যান। স্বামীর মৃত্যুর পর শ্বশুরবাড়ির লোকজন মীরাকে সতীদাহ করতে বললে মীরা বলেন, আমার স্বামী শ্রীকৃষ্ণ। মীরা তাঁর স্বামীর মৃত্যুর পরেও মন্দিরে যেতে শুরু করে এবং গান গেয়ে নাচতে শুরু করে। এতে তাঁর শ্বশুরবাড়ির লোকজন মীরাকে ব্যভিচারিণী হিসেবে অভিযুক্ত করে এবং মীরাকে এক মজলিসে বিষ পান করতে বলা হয়। শ্রীকৃষ্ণের নাম জপ করতে করতে মীরাও বিষ পান করেন। উপস্থিত সবার মনে হয় মীরা এখন আর বাঁচবে না। কিন্তু মীরার জন্য বিষের পেয়ালা অমৃত হয়ে গেল। শ্রীকৃষ্ণের কৃপায় মীরার উপর বিষের কোন প্রভাব পড়েনি।

কিভাবে মীরা মারা গেল-

শ্বশুরবাড়িতে অনেক অত্যাচার সহ্য করার পর, অত্যাচার সহ্যের বাইরে চলে গেলে মীরা প্রাসাদ ত্যাগ করে বৃন্দাবনে চলে যান বহু স্থানে তীর্থযাত্রা করে। অন্যদিকে মীরা প্রাসাদ ত্যাগ করার কারণে রাজ্যে অশান্তি শুরু হয়। ব্রাহ্মণরা বলল, মীরা ফিরে এলে সব ঠিক হয়ে যাবে। মীরার সন্ধানে দুজন সৈন্যও পাঠানো হয়েছিল, তারা মীরাকে তাদের সঙ্গে ফিরে আসার জন্য অনুরোধ করেছিল, কিন্তু মীরা প্রত্যাখ্যান করেছিল। সৈন্যরা বলল, আমাদের সঙ্গে জীবিত না ফিরলে আমরাও ফিরব না, আমাদের পরিবারের কথা ভাবুন।

মীরা সৈন্যদের বলল, আমি যদি তোমাদের আসার আগেই পৃথিবী ছেড়ে চলে যেতাম, তাহলে কি তোমরা খালি হাতে ফিরতে? সৈনিক বলল তখন তাকে ফিরতে হবে। একথা শুনে মীরা একটি তারযুক্ত যন্ত্র, একটি তারা তুলে নিয়ে শ্রীকৃষ্ণের স্তব করতে লাগলেন। মীরার চোখ থেকে প্রেমের অশ্রু প্রবাহিত হতে থাকে এবং একই সঙ্গে মীরা শ্রী কৃষ্ণের মূর্তির মধ্যে লীন হয়ে যায়।

PREV
click me!

Recommended Stories

Love Horoscope: সঙ্গী আজ আর্থিক বিষয়েও আপনাকে সাহায্য করবে! দেখে নিন আপনার আজকের প্রেমের রাশিফল
Money Horoscope: আজ আর্থিক বিষয়ে প্রচুর লাভবান হবেন! দেখে নিন আজকের আর্থিক রাশিফল