মকর সংক্রান্তির দিন গঙ্গাসাগরে (Ganga Sagar) স্নানের সঙ্গে কপিল মুনির আশ্রম পরিদর্শনের রীতি বহু যুগ ধরে চলে আসছে। কপিল মুনির (Kapil Muni) আশ্রম দর্শনে ভিড় জমান শয় শয় ভক্তরা। কিন্তু, কেন এমন রীতি প্রচলিত। কে এই কপিল মুনি। জেনে নিন পৌরাণিক কাহিনি।
শুরু হয়ে গিয়েছে মকর সংক্রান্তির স্নান। আজ পুণ্যস্নানের শুভ সময় ৭.১৫ থেকে শুরু হবে, চলবে সন্ধ্যা ৫.৪৪ পর্যন্ত। মহাপুণ্য কাল সকাল ৯টা থেকে ১০.৩০ মিনিট পর্যন্ত। এরপর দুপুর ১.৩২ থেকে ৩.২৮ মিনিট পর্যন্ত। মকর সংক্রান্তির দিন গঙ্গাসাগরে (Ganga Sagar) স্নানের সঙ্গে কপিল মুনির আশ্রম পরিদর্শনের রীতি বহু যুগ ধরে চলে আসছে। কপিল মুনির (Kapil Muni) আশ্রম দর্শনে ভিড় জমান শয় শয় ভক্তরা। কিন্তু, কেন এমন রীতি প্রচলিত। কে এই কপিল মুনি। জেনে নিন পৌরাণিক কাহিনি।
বৈদিক ঋষি হলেন কপিন মুনি। ভগবত পুরাণে তাঁর আস্তিক্যবাদ ধারাটি উল্লেখযোগ্য। হিন্দুদের বিশ্বাস তিনি ব্রক্ষ্মার পৌত্র মুনির বংশধর। ভগবত পুরাণের তৃতীয় স্কন্দে তাঁর বর্ণনা রয়েছে। জানা যায়, এক সময় গঙ্গাসাগরের তীরে তাঁর আশ্রম ছিল। বর্তমানে যা সমুদ্রের তলায় চলে গিয়েছে। পরে তাঁর ভক্তরা সাগর পারে কপিল মুনির আশ্রম তৈরি করেন।
পৌরাণিক কাহিনি অনুসারে, রামের পূর্ব পুরুষ সাগর ৯৯ বার অশ্বমেষ যজ্ঞের আয়োজন করেন। এই সংবাদে ভীত হন দেবরাজ ইন্দ্র (Indra)। তিনি যজ্ঞের ঘোড়াটি চুরি করে কপিল মুনির আশ্রমের কাছে একটি গাছে বেঁধে রেখেছিলেন। এবিষয় কিছুই জানতেন না কপিল মুনি। এদিকে যজ্ঞের ঘোড়া খুঁজতে রাজা সগরের ৬০ হাজার পুত্র বের হয়েছিলেন। তাঁরা কপিল মুনির (Kapil Muni) আশ্রমের নিকট ঘোড়া খুঁজে পান। ঘটনায় কপিল মুনিকে দোষারোপ করেন তাঁরা। আচমকা ধ্যানমগ্ন মুনি চোখে খুলে তাঁকান। এরপরই মুনির অভিশাপে ভষ্ম হয়ে যায়। তাদের যদিও আবার ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়েছিল। তাঁদের বংশের পঞ্চম পুরুষ ভাগীরথ যজ্ঞ করে ব্রহ্মাকে সন্তুষ্ট করেন। শেষ পর্যন্ত তাঁর বরে গঙ্গা পৃথিবীতে প্রবাহিত হন। মা গঙ্গার পুণ্যবারিস্পর্শে বেঁচে ওঠেন সগর রাজার ষাট হাজার পুত্র। ঘটনাটি ঘটেছিল মকর সংক্রান্তির দিন।
কপিল মুনির তপস্যাস্থল ছিল এই আশ্রম। এই স্থানেরই রাজা সগরের পুত্ররা মা গঙ্গার পুণ্যবারিস্পর্শ পান। সেই থেকে মকর সংক্রান্তির (Makar Sankranti) দিন গঙ্গাসাগরের রীতি প্রচলিত হয়ে আসছে। গঙ্গা নদী ও বঙ্গোপসাগরের মিলন স্থল হল গঙ্গাসাগর। এটি তীর্থভূমি হিসেবে পরিচিত। তাই বছরের এই নির্দিষ্ট সময় এই স্থানে ভ্রমণে যান পুণ্যার্থীরা। প্রতি বছর গঙ্গাসাগর স্নান উপলক্ষ্যে সেখানে মেলা আয়োজিত হয়।