ঘূর্ণিঝড় সিতরাং বাংলাদেশে প্রাণ কাড়ল ১৬ জনের, বৃষ্টিতে সর্বনাশ হচ্ছে চাষের

সিতরাং-এর দাপটে লন্ডভন্ড বাংলাদেশ। এখনও পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ১৬ জনের। বিপর্যস্ত বরিশাল, খুলনা, চট্টোগ্রাম-সহ বিস্তীর্ণ এলাকা।  
 

Web Desk - ANB | Published : Oct 25, 2022 10:37 AM IST

সিতরাং-এর দাপটে লন্ডভণ্ড বাংলাদেশের বিস্তীর্ণ এলাকা। এখনও পর্যন্ত ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। ১০ লক্ষেরও বেশি মানুষ আশ্রয় নিয়েছে ত্রাণ শিবিরে। উপকূলবর্তী ১৫টি জেলায় ১ কোটিরও বেশি মানুষ বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় রয়েছে। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের স্কুলগুলি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। 

ঘূর্ণিঝডড সিতরাং সোমবার গভীর রাতে বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে আঘাত হানে। কিন্তু ভয়ঙ্কর খারাপ এই আবহাওয়ার কারণে বিপর্যস্ত স্থানীয় বাসিন্দাদের জীবন। অধিকাংশ মানুষকেই সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে ত্রাণ শিবিরে। বাংলাদেশের এক প্রাশাসিক আধিকর্তা জানিয়েছেন ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে গাছ পড়ে। উত্তরে যমুনা নদীতে নৌকাডুবে এক জনের মৃত্যু হয়েছে। তিনি আরও জানিয়েছেন , যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে আর সেই কারণে ক্ষয়ক্ষতির পুরো রিপোর্ট এখনও পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। 

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রকের কর্তা কামরুল আহসান এএফপি-কে জানিয়েছেন, দুর্গম দ্বীপ আর নদীর তীরবর্তী অঞ্চল থেকে কয়েক হাজার মানুষকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। রাতে ত্রাণশিবিরে কাটিয়ে এদিন সকালে অনেকেই ফিরে গেছেন। কিন্তু ঘূর্ণিঝড় বর্তমানে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। বেশ কয়েকটি এলাকায় প্রবল বৃষ্ট হচ্ছে। সিতরাং-এর প্রভাব গিয়ে পড়েছে উপকূলবর্তী এলাকা থেকে কয়েক মাইল দূরে ঢাকাতেও। 

বাংলাদেশের আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে সিতরাং-এর ফলে বরিশাল ও খুলনাতে সোমবারই ৩২৪ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। মাদারীপুরে বৃষ্টি হয়েছে ৩১০ মিলিমিটার। যা ২০১৯ সালের পর সর্বাধিক। আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে বাংলাদেশের স্থানীয় সময় রাত ৯টার পর উপকূলে আছড়ে পড়ে সিতরাং। রাত একটা থেকেই প্রভাব হারাতে শুরু করে। 

আবহাওয়া দফতর জানিয়েছেন, রাত ঘূর্ণিঝড়ের সবথেকে বেশি প্রভাব পড়েছে কক্সবাজার। সেখানে বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৭৮ কিলোমিটার। একই রকম দাপট ছিল চট্টোগ্রামে। 

বাংলাদেশের প্রাকৃতিক দুর্যোগের সবথেকে বড় আতঙ্ক হল সাপ। মহেশখালীর বাসিন্দা তাহমিদুল ইসলাম জানিয়েছেন তাঁর সিতরাং-এর দাপটে ধ্বংস হয়ে গেছে বাড়ি। বাড়িতে প্রচুর সাপ ঢুকেছে। জলে ভাসছে গোটা বাড়ি। জেলা প্রশাসনের এক কর্তা জানিয়েছেন, বরিশালে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। প্রচণ্ড বৃষ্টি আর প্রবল বাতাস সবজি চাষের সর্বনাশ করেছে। 

মানুষ আর ঠিক কতটা নির্মম হবে? রক্তাক্ত কিশোরী হাসপাতালে না দিয়ে তার ভিডিও করতেই ব্যস্ত জনতা

মধ্যরাতে বাংলার উপকূল পার হবে সিতরাং,রীতিমত গতি বাড়িয়ে এগিয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড়

সাইক্লোন সিতরাং সতর্কতা বাংলাদেশের ১৩টি জেলায়,বৃষ্টি মাথায় নিয়েই ত্রাণ শিবিরে যাচ্ছেন দুর্গতরা
সিতরাং মোকাবিলার জন্য সবধরনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছে বাংলাদেশ।  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রেস সচিব ইহসানুল করিম জানিয়েছেন, ঘুর্ণিঝড়ড সিতরাং বাংলাদেশে আছড়ে পড়বে  এই খবর পাওয়ার পরই তৎপর প্রধানন্ত্রী। সর্বস্তরের কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। পুরো পরিস্থিতির দিকে তিনি নজর রাখছেন। জীবন ও সম্পদ রক্ষার সর্বাধিক প্রস্তুতি গ্রহণ করার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি আওয়ামিলিগের স্থানীয় নেতাদের সঙ্গেও কথা বলছেন। প্রয়োজনীয় ত্রাণ ও সাহায্য যাতে দুর্গতা পায় তারও নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। দলের নেতা ও কর্মীদের সবথেকে খারাপ পরিস্থিতির মোকাবিলা করার জন্য প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন শেখ হাসিনা। এছাড়াও প্রধানমন্ত্রী শেষ হাসিনা একটি কন্ট্রোলরুম খুলেছেন। যেখান থেকে আগামী ২৪ ঘণ্টা পরিষেবা দেওয়া হবে। 

Share this article
click me!