বিতর্কিত ভিডিওটি শনিবার নীলসুনীল নামে এক টুইটার ব্যবহাহরকারী নিজের সোশ্যাল মিডিয়া থেকে শেয়ার করেছিল। সেই ভিডিওতে বাংলাদেশের এক ইমামকে বলতে শোনা গেছে, 'আমরা মুসলিম, আমরা মূর্তি ধ্বংস করার জন্য জন্ম নিয়েছি।
দূর্গা পুজোকে কেন্দ্র করে রীতিমত আশান্ত বাংলাদেশ (Bangladesh)। প্রতিবেশী এই দেশে কুমিল্লা থেকে শুরু করে নোয়াখালি -- বিক্ষিপ্তভাবে আক্রান্ত হয়েছে সংখ্যালঘু হিন্দুরা (Hindu)। কমপক্ষে ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনার তদন্ত চলছে। গ্রেফতারও করা হয়েছে হিংসার ঘটনায় জড়িত সন্দেগে প্রায় ৩০ জনকে। তারই মধ্যে বাংলাদেশের এক মুসলিম ধর্মগুরুর (Muslim Imam) একটি ভিডিও ভাইরাল (Viral Video) হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় যা নিয়ে রীতিমত শোরগোল পড়ে গেছে।
বিতর্কিত ভিডিওটি শনিবার নীলসুনীল নামে এক টুইটার ব্যবহাহরকারী নিজের সোশ্যাল মিডিয়া থেকে শেয়ার করেছিল। সেই ভিডিওতে বাংলাদেশের এক ইমামকে বলতে শোনা গেছে, 'আমরা মুসলিম, আমরা মূর্তি ধ্বংস করার জন্য জন্ম নিয়েছি। আমার হাত দিয়ে কোনও মূর্তি বা ছবি তৈরি হবে না। কোনও ছবি টানাবো না। মনে রাখতে হবে আমরা এমন একটা সম্প্রদায় থেকে এসেছি যেখানে মূর্তি ধ্বংস করাই আদর্শ। তা আমাদের রক্তের সঙ্গে মিশে গেছে।'
সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া এই ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি এশিয়ানেট নিউজ বাংলা। তবে ভিডিওটিতে আওহিদ মিডিয়া নামে একটি ইসলামি ইউটিউব চ্যালেনের ওয়াটারমার্ক রয়েছে। এই ইউটিউব চ্যালেনের গ্রাহক সংখ্যা প্রায় দেড় লক্ষ। এটি মূলত বাংলাদেশেরই একটি সোশ্যাল মিডিয়া চ্যানেল।
একটি সূত্র মনে করছে ভিডিওতে যে ধর্মগুরির বক্তব্য রয়েছে তাঁর নাম আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফ। ইউটিউবে যে ভিডিওটি রয়েছে সেটি প্রায় সাত মিনিটের। ভিডিওটি আপলোড করা হয়েছিল ২০১৬ সালের ৬ জুন। তাই ভিডিওটি প্রায় ৫ বছর পুরনো। সেই ভিডিওই এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘুরছে। ভিডিওর মূল বক্তব্যই হল মূর্তি পুজারীদের বিরোধীতা করা। হিন্দুদের নাম না করলেও ভিডিওটিতে হিন্দু বিদ্বেষ রয়েছে।
Bangladesh: পীরগঞ্জ হিংসার অন্যতম চক্রী ধৃত, হিন্দুদের ওপর হামলার কারণ জানাল RAB
China: নতুন সীমান্ত আইন চিনে, ভারতের ওপর চাপ বাড়াতেই কি কঠোর বেজিং
Pak Terrorist: পুঞ্চ এনকাউন্টারে নিহত পাক-জঙ্গি জিয়া মুস্তাফা, ২৪ কাশ্মীরি পণ্ডিত হত্যার মাস্টারমাইন্ড
আব্দুর বাজ্জাক বিন ইউসুফ সম্পর্কেও বেশ কিছু তথ্য পাওয়া গেছে। এই ধর্মগুরুর জন্ম বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলে। ভারতেই এসেছিলেন তিনি। এই দেশ থেকেই ইসলামিক স্টাডিজে উচ্চ শিক্ষা লাভ করেন। তিনি দুবার দাওরা হাদিস সম্পন্ন করেন। প্রথমটি এই রাজ্যের মালদা জেলার খানপুর থেকে। দ্বিতীয়বার উত্তর প্রদেশের দারুল উলূম মুনাথভঞ্জন থেকে। একটি মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষকেরও দায়িত্ব সামলেছে। বাংলাদেশের একাধিক টিভি চ্যানেলের অধিবেশনে তিনি পরিচিত মুখ। একটি সূত্র বলছে হিন্দু বিরোধী প্রচারের জন্য এই ধর্মগুরু ভারত সফর করেন। ২০১৮ সালে মালদা, মুর্শিদাবাদ ও হাওড়ায় সভাও করেছিলেন তিনি।
সম্প্রতি বাংলাদেশ একাধিক জায়গায় হিন্দুদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনায় বাংলাদেশ প্রশাসন তদন্ত শুরু করেছে। সেদেশের প্রশাসনের মতে সোশ্যাল মিডিয়ায় উস্কানিমূলত পোস্টও এই হামলার জন্য দায়ি। পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পীরগঞ্জে হিন্দুদের ওপর হামলার ঘটনা যে সোশ্যাল মিডিয়ায় উস্কানিমূলক মন্তব্যের জন্য দায়ি-- তেমনটাও দাবি করছে বাংলাদেশ প্রশাসন। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের এক মুসলিম ধর্মগুরুর পুরনো ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়ায় নতুন অশান্তির আশঙ্কা করছেন অনেকেই।