
প্রেম-ভালবাসা-বিচ্ছেদ-বিরহে যার গান ছাড়া পরিপূর্ণ হয় না সেই মানুষটা আর নেই। তবে শুধু নেই বললে ভুল হবে কিছু মানুষের গাফিলতির জেরেই চলে গেলেন জনপ্রিয় সঙ্গীত শিল্পী কেকে। তবে তিনি চলে গেলেও সারা জীবন সবার মনে অমলিন হয়ে থাকবে কার স্মৃতি। তিনি যে কতটা লম্বা রেসের ঘোড়া তা শেষ দিন অবধি সকলকে বুঝিয়ে দিয়ে গেলেন। একদিকে প্রচন্ড গরম। তার উপর কাজ করছে না এসি, প্রয়োজনের তুলনায় অনেক বেশি জনসমাগম সব মিলিয়ে প্রচন্ড কষ্ট পাচ্ছিলেন কেকে, কিন্তু সেই সমস্ত শারীরিক কষ্টকে উপেক্ষা করেও ঘাম মুছতে মুছতে আর জল খেয়েই ফের যেন মঞ্চে দাঁপিয়ে বেড়াচ্ছিলেন বছর ৫৩-র কৃষ্ণকুমার কুন্নাথ। এটাই যে জীবনের শেষ পল তা একটুও টের পাননি গায়ক। তবে শেষ গান করার পরই শরীরে যে প্রবল কষ্ট অনুভব করছিলেন তা এতক্ষণে সকলেই দেখে নিয়েছেন সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে। আর কেকে-র লাইভ কনসার্টের ভিডিও নিয়ে এখন ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন ভক্তরা। কেন এমন ব্যবস্থাপনা, তা নিয়ে উঠছে হাজারো প্রশ্ন। ইতিমধ্যেই ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে জানা গিয়েছে স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে গায়কের। তবে চূড়ান্ত রিপোর্ট ৭২ ঘন্টার পর জানা যাবে।
জনপ্রিয় সঙ্গীত শিল্পী কেকে-র আকস্মিক প্রয়াণে শোকস্তব্ধ গোটা ভারত। কেকে আর নেই। এখন যেন কথাটা ঠিক বিশ্বাস হচ্ছে না। সকলের মন খারাপ করে না ফেরার দেশে চিরজীবনের মতো চলে গেলেন জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী কেকে। সঙ্গীতজগতেরও কেউই মেনে নিতে পারছেন না। তবে কেকে-র অকাল মৃত্যু নিয়ে কী বলছেন ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরা। তবে প্রেক্ষাগৃহের অস্বস্তিকর পরিবেশ, নাকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে অনেক বেশি দেরি করে ফেলেছেন বলেই তার মৃত্যু উঠছে হাজারো প্রশ্ন।
ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন হৃদরোগ জনিত কারণেই মৃত্যু হয়েছে গায়কের। তারা জানিয়েছেন হৃদপিন্ডের কাজ আচমকা বন্ধ হওয়ায় মস্তিষ্কে রক্ত সঞ্চালন ব্যাহত হয়। আর তার জেরেই মৃত্যু বলে অনুমান করা হচ্ছে। এবং এই কারণেই হোটেলের ঘরে পড়ে গিয়েছিলেন। এমনকী প্রেক্ষাগৃহের মধ্যেও কেকে-র শরীরে যে ধরনের অস্বস্তি হচ্ছিল সেগুলি সবই হৃদরোগের উপসর্গ ছিল। তাই এখন পর্যন্ত হৃদরোগকেই মৃত্যুর কারণ বলে মনে করা হচ্ছে।
৫.১৫-র বিশেষ বিমান করে নিয়ে যাওয়া হবে কেকে-র মরদেহ। তার আগে প্রয়াত সঙ্গীতশিল্পীকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় কেকে-কেও গান স্যালুট দেওয়া হয়েছে রবীন্দ্র সদনে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে গান স্যালুট দেওয়া হল কেকে-কে। চোখের জলে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে উপচে পড়েছিল ভিড়। প্রথম দমদম বিমানবন্দরে গান স্যালুট দেওয়ার কথা উঠলেও পরে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন রবীন্দ্র সদনেই গান স্যালুট দেওয়া হবে কেকে-কে। সমস্ত বিখ্যাত শিল্পীদের এই রবীন্দ্র সদনেই গান স্যালুট দেওয়া হয়। সেই মতোই কেকে-কেও রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় গান স্যালুট দেওয়া হল। স্ত্রী জ্যোতিকৃষ্ণ ও ছেলে নকুল কৃষ্ণ কুন্নাথের সঙ্গে কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।কলকাতায় গান গাইতে আসাটাই যে জীবনের শেষ গান হবে তা মনে হয় কেউ ভাবকে পারেননি। মাত্র দুদিনের জন্য কলকাতায় অনুষ্ঠান করতে এসে যে তিনি আর বাড়ি ফিরবেন না তার দুঃস্বপ্নেও ভাবতে পারেননি কেকে-র স্ত্রী জ্যোতিকৃষ্ণ। কেকে-র প্রয়াণে তার এতটাই শোকাহত যে সংবাদমাধ্যমকে একটা কথারও জবাব দেননি প্রয়াত গায়কের পরিবার।