সুশান্ত সিং রাজপুত আর নেই। এখনও তার অনেক ভক্তই মনে-প্রাণে এই খবর বিশ্বাস করে উঠতে পারছেন না। কিন্তু রুপোলি জগতের নায়ক বিগত কয়েক মাস ধরেই ক্লিনিক্যাল ডিপ্রেশনে ভুগছিলেন। তিন -তিনমাস ছিলেন গৃহবন্দি। এমনকি বন্ধুদের সঙ্গেও ছিল না বাক্যালাপ। প্রাথমিক ভাবে ময়নাতদন্ত রিপোর্টে উঠে আসছে বলিউজের ডিটেক্টিভ বোমক্যাশ বক্সি জীবনযুদ্ধে হেরে গিয়ে আত্মহত্যাই করেছেন। পুলিশও তদন্তে এমনটাই ইজ্ঞিত দিচ্ছে। কিন্তু পরিবারের দাবি তাঁদের ছেলেকে পরিকল্পিত ভাবেই খুন করা হয়েছে। দাবি উঠছে সিবিআই তদন্তেরও।
কিন্তু নিজের শেষ ছবি ছিছোড়েতে যিনি বাঁচার শিক্ষায় দিয়েছিলেন তিনি কেন এভাবে মাত্র ৩৪ বছরে হার মেনে চলে গেলেন। জানা যাচ্ছে অবসাদে ভোগা সুশান্ত ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে কখনও কারও সঙ্গেই কথা বলতেন না। এমনটাই জানাচ্ছেন তাঁর কাছের পরিচিতরাই। ব্যক্তিগত বেশ কিছু সম্পর্ক থাকলেও তাঁর জেরে আত্মহত্যা কিনা তা এখনও জানা যায়নি। কিছুদিন আগেই মিলেছিল সুশান্ত সিংয়ের প্রাক্তন ম্যানেজারের আত্মহত্যার খবর। গত সোমবার মুম্বইয়ের মালাডের একটি বহুতল থেকে ঝাঁপ দেন দিশা সালিয়ান। যে খবরে ভেঙে পড়েছিলেন সুশান্ত। তবে কী কারণে সুশান্ত নিজেকে শেষ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন, তা এখনও স্পষ্ট নয়। এখনও পর্যন্ত সুশান্তের ফ্ল্যাট থেকে কোনও সুইসাইড নোট উদ্ধার হয়নি বলেই জানাচ্ছে পুলিস। এর মধ্যেই সামনে এল আরও একটি খবর। আত্মহত্যার আগে মাঝরাতে নিজের সহকর্মী এক অভিনেতাকে নাকি ফোন করেছিলেন সুশান্ত। যদিও সেই অভিনেতা সুশান্তের ফোনের কোনও উত্তর দেননি।
আরও পড়ুন: করোন নিয়ে আরও আশঙ্কার কথা শোনালেন গবেষকরা, ভারতে নভেম্বরে সবচেয়ে তীব্র হবে সংক্রমণ
৬ মাস আগেই বান্দ্রায় ডুপ্লেক্স একটি ফ্ল্যাটে ভাড়া আসেন সুশান্ত। ভাড়ার চুক্তি ছিল ২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। প্রতি মাসে ফ্ল্যাটের ভাড়া ছিল ৪.৫১ লক্ষ টাকা। ফ্ল্যানে তিনি ছাড়াও থাকতেন আরও ৪ জন। এঁদের মধ্যে ২ জন রাঁধুনি। একজন পরিচারক এবং আরেকজন রুমমেট ছিলেন বলে জানা যাচ্ছে।
বেশ কিছুদিন ধরেই সুশান্তের অবসাদের চিকিৎসা চলছিল। অন্তত ঘর থেকে পাওয়া প্রেসকিপশন থেকে এমনটাই জানা যাচ্ছে। এই অবস্থায় তাঁর চিকিৎসকরেও জবানবন্দি নিয়েছে পুলিশ। সুশআন্তের দিদি ও ম্যানেজারের থেকেও তাঁর অবসাদের ব্যাপারে জানতে পেরেছ পুলিশ। মুম্বই পুলিশ দাবি করছে, চিকিৎসকের পরামর্শ মতো নাকি ওষুধ খাচ্ছিলেন না সুশান্ত।
সূত্রের খবর অনুযায়ী, রবিবার সকাল ১০টা নাগাদ সুশান্তকে জুসের গ্লাস হাতে দেখেন পরিচারক। তাঁকে ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করতেও দেখেন তিনি। দুপুর ১২টায় পরিচারক দরজার কড়া নাড়েন। সুশান্তর বন্ধুও দরজায় ধাক্কা দেন। সাড়া না পেয়ে ফোন করেন সুশান্তর বন্ধু, মেলেনি জবাব। জবাব না মেলায় দরজা ভাঙার চেষ্টা করা হয়। এরপর এক চাবিওয়ালাকে ডেকে দরজা খোলা হয়। দরজা খুলে সুশান্তকে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়।