সংক্ষিপ্ত

  • দেশে করোনা সংক্রমণ তীব্র হবে নভেম্বরের মাঝামাঝি
  • তখন হাসপাতালে বেড বা ভেন্টিলেটরের তীব্র অভাব দেখা দিতে পারে
  • আইসিএমআর-এর অপারেশন রিসার্চ গ্রুপের গবেষণায় চাঞ্চল্যকর তথ্য
  •  দফায় দফায় লকডাউন জারি রাখলেও ঠেকানো যাবে না সংক্রমণ

ইতিমধ্যে ভারত করোনা আক্রান্ত দেশগুলির মধ্যে চতর্থ স্থানে পৌঁছে গিয়েছে। প্রতিদিনই দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা রেকর্ড করছে দেশ। লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। কিছুতেই নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না পরিস্থিতি। দিন যত যাচ্ছে ততই কোভিড ১৯-এর দাপট মারাত্মক হয়ে উঠছে। তবে দেশ এখনও করোনার সবচেয়ে খারাপ সময় দেখেনি। এমনটাই জানাচ্ছে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ। আইসিএমআর-এর গবেষকদের আশঙ্কা, আগামী নভেম্বর মাসের মাঝামাঝি সময়ে দেশে করোনার সংক্রমণ শীর্ষ ছুঁতে পারে।

 ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ-এর গবেষকদের সমীক্ষা বলছে সমীক্ষা বলছে, লকডাউনের ফলেই ভারতে সংক্রমণ শীর্ষে পৌঁছতে ৩৪ থেকে ৭৬ দিন দেরি হচ্ছে। লকডাউনের কারণে সংক্রমণের পরিমাণ কমেছে, তাই ‘‌পিক টাইম’‌ বা সর্বোচ্চ সংক্রমণের সময় পিছিয়েছে। এই অবস্থায় গবেষকদের আশঙ্কা,  সেই সর্বোচ্চ সংক্রমণ দেখা দিতে পারে নভেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে। আর তখনই হাসপাতালে বেড বা ভেন্টিলেটরের তীব্র অভাব দেখা দিতে পারে।

করোনা দেশে আসার আগেই পরিস্থিতি আঁচ করেছিলেন মোদী, ফাঁস করে দিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী

৯৭ বছরের বৃদ্ধের কাছে এবার পরাস্ত করোনা, ১৮ দিন ভেন্টিলেশনে থেকে বাড়ি ফিরল ৪ মাসের খুদেও

তবে কী এসেই গেল দ্বিতীয় ওয়েভ, সংক্রমণ বাড়তে থাকায় এবার ফের লকডাউনের পথে হাঁটল চিন

করোনা আক্রান্ত রোগীদের প্রধান উপসর্গই হল জ্বর এবং শ্বাসকষ্ট। সমীক্ষা বলছে, নভেম্বরের সময় দেশে  আক্রান্তের সংখ্যা এতটাই বেড়ে যাবে যে দেশে ভেন্টিলেটর সহ অন্যান্য চিকিৎসা সামগ্রী রীতিমত কম পড়ে যাবে। অন্যদিকে, করোনা আক্রান্ত রোগীকে বাঁচাতে হলে ও আক্রান্তের ফুসফস সচল রাখতে আইসোলেশন ওয়ার্ড,ভেন্টিলেটরের মতো গুরুত্বপূর্ণ সরঞ্জাম আবশ্যক।

তবে আসিআএমআর জানাচ্ছে দেশে লকডাউনের কারণে স্বাস্থ্য পরিকাঠামো গুছিয়ে নেওয়ার সময় মিলেছে। লকডাউনের ফলে সংক্রমণের পরিমাণ কমেছে ৬৯ থেকে ৯৭ শতাংশ।বস্তুত, লকডাউনের পরে জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থা আরও ৬০ শতাংশ জোরদার হয়েছে বলে জানাচ্ছে সমীক্ষা। তার ফলে নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত চিকিৎসা পরিকাঠামোয় ঘাটতি হবে না। কিন্তু তার পরেই ৫.৪ মাস ধরে আইসোলেশন শয্যার অভাব দেখা দিতে পারে, আইসিইউয়ের শয্যার টানাটানি চলতে পারে ৪.৬ মাস এবং ভেন্টিলেটরের ঘাটতি থাকতে পারে ৩.৯ মাস ধরে। পরিকাঠামোর বর্তমান অবস্থার নিরিখেই এই আশঙ্কা করা হচ্ছে। গবেষকরা মনে করছেন, এই অবস্থায় দফায় দফায় লকডাউন জারি রাখলেও ঠেকানো যাবে না সংক্রমণ। 

লকডাউন না হলে এই সংকটের পরিমাণ আরও ৮৩ শতাংশ বেশি হত বলেও মনে করছেন গবেষকরা। তাঁরা বলছেন, লকডাউন না থাকলে পিক টাইমে সংক্রমণের পরিমাণ বাড়তে পারত আরও ৭০ শতাংশ। এই অবস্থায় করোনা মোকাবিলার পরিকাঠামোর উন্নতিতে নিয়মিত রিভিউ মিটিং ও নীতি পরিবর্তনের প্রয়োজন আছে বলে মনে করছেন গবেষকরা। স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর জন্যও জিডিপির ৬.‌২ শতাংশ খরচ করাও প্রয়োজনের কথা বলছেন তাঁরা।

বর্তমানে দেশে আইসোলেশন ওয়ার্ড রয়েছে ১,৬৭,৮৮৩টি। ২১,৬১৪টি আইসিইউ এবং অক্সিজেন সাপোর্টেড বেড রয়েছে ৭৩,৪৬৯টি। এছাড়াও পরিস্থিতি সামলাতে আরও কোভিড হাসপাতাল সহ ভেন্টিলেটর যন্ত্র, আইসোলেশন ওয়ার্ডের সংখ্যা বাড়ানোর চেষ্টা চলছে বলে স্বাস্থ্যমন্ত্রক সূত্রে জানা গিয়েছে।