বর্ধমান স্টেশনে প্রতীক্ষালয়ে অস্থায়ী স্কুল গড়ে তোলা হয়েছে স্কুল শিক্ষকের তরফে। স্কুলের নাম দেওয়া হয়েছে সহজপাঠ। মূলত ড্রাগে আসক্ত শিশুদের মূলস্রোতে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেন বর্ধমানের শিক্ষকরা। তবে শুধু পড়ানো নয়, কারো জন্মদিন থাকলে জন্মদিন পালন, জামা কাপড় দেওয়া, শীতবস্ত্র, কম্বল, উদ্যোগ নেন তারা। তাদের পড়ার সামগ্রীও দেন এই শিক্ষকরাই।
আরও পড়ুন, বর্ধমানে এবিভিপি-র মিছিল আটকাল পুলিশ,রাস্তায় বসে বিক্ষোভ বিদ্য়ার্থীদের
বর্ধমান স্টেশনের ৮ নম্বর প্লাটফর্মে প্রতীক্ষালয়ে অস্থায়ী স্কুল। মূলত পথশিশু এবং স্টেশনে থাকা শিশুদের নিয়েই এই ক্লাস। এখানে মোট পড়ুয়া সংখ্যা ৪৭। তবে নিয়ম করে ক্লাসে আসে ২৫ জন। শুরুটা মোটেই সহজ ছিল না। বছর দুয়েক আগে এলাকার জনাদশেক স্কুল শিক্ষক স্কুল ছুটির পর এই বিশেষ স্কুল চালাবেন বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। আর এখন এখানে ক্লাস নেন কুড়িজন। মূলত স্টেশনের শিশুরা অনেকেই ড্রাগে আসক্ত। অনেকেই আবার স্কুলে যায় না। তাদেরকে সমাজের মূলস্রোতে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেন শিক্ষকরা। সপ্তাহে দুদিন সোম এবং বৃহস্পতিবার ক্লাস হয়। রেলের অনুমতিক্রমে প্রতীক্ষালয়ে ক্লাস নেওয়া হয়। বিভিন্ন মানুষের সহযোগিতায় চলছে স্টেশনের স্কুল। ক্লাস শেষে সকলের টিফিন এর ব্যবস্থা থাকে।
আরও পড়ুন, প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠান থেকেই ধৃত বজরং দলের নেতা, পুরুলিয়ায় উত্তেজনা
সহজপাঠ স্কুলের মূল উদ্যোক্তা শিক্ষক তাপস কুমার পাল জানান, এই সমস্ত শিশুদের মূলস্রোতে ফিরিয়ে আনার জন্য তাদের বহুদিন ধরেই ইচ্ছা ছিল । তারপর এই কর্মকান্ডে অনেকজনকে তারা পাশে পেয়েছেন। সকলে মিলে চেষ্টা করছেন পথশিশু এবং স্টেশনে থাকা শিশুদের জন্য নতুন কিছু করার। বিভিন্ন মানুষ সাহায্য করে এই উদ্য়োগে। এই কাজে বর্ধমান স্টেশন ম্যানেজার স্বপন অধিকারী সহযোগিতা করেছেন তাদের এই জায়গাটা দিয়ে। আগামী দিনে এই ছেলে মেয়েরা যাতে পরীক্ষায় বসতে পারে সেই ভাবনাও রয়েছে। সহজপাঠ স্কুলের এক শিক্ষিকা সজলা সরকার জানিয়েছেন, এই শিশুদের জন্য কিছু করার চিন্তা ভাবনা থেকেই তারা সবাই এগিয়ে এসেছেন। তারা খুব খুশি যে অনেকেই তাদের পাশে রয়েছেন । তাই সহজপাঠ স্কুল উদ্য়োগীদের একমাত্র শুভকামনা, আগামী দিনে যেন এই পথশিশুদের ভবিষ্যত উজ্জ্বল হয় ।