১লা ডিসেম্বর থেকে জিএসটি আপিল ট্রাইব্যুনালের কাজ শুরু কলকাতায়, রাজ্যের রাজস্ব বেড়েছে ১৪ শতাংশ

Published : Nov 10, 2025, 02:45 PM IST
gst registration

সংক্ষিপ্ত

শ্রবণ কুমার জানান, পশ্চিমবঙ্গ এই আর্থিক বছরে জিএসটি রাজস্বে ১৪ শতাংশ বৃদ্ধি দেখেছে, যা রাজ্যের অর্থনৈতিক স্থিতি ও কর-আদায়ের শৃঙ্খলার প্রতিফলন।

১ ডিসেম্বর থেকে কলকাতা সহ দেশের বিভিন্ন কেন্দ্রে কাজ শুরু করবে জিএসটি আপিল ট্রাইব্যুনাল। এই ঘোষণা করেন কেন্দ্রীয় পরোক্ষ কর ও শুল্ক বিভাগের প্রধান মুখ্য কমিশনার শ্রবণ কুমার। তিনি জানান, জিএসটি ২.০ সংস্কারের মাধ্যমে দেশের কর ব্যবস্থা আরও স্বচ্ছ, কার্যকর ও ব্যবসাবান্ধব হবে। ১লা ডিসেম্বর থেকে কলকাতাতেও শুরু হচ্ছে জিএসটি ট্রাইব্যুনাল।

ইন্ডিয়ান চেম্বার অফ কমার্স (আইসিসি) আয়োজিত ‘GST 2.0: Impact & Way Forward’ বিশেষ আলোচনায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেন, সংশোধিত জিএসটি হারের প্রভাব আগামী ২০ থেকে ৩০ দিনের মধ্যেই পণ্যের দামে প্রতিফলিত হবে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কলকাতা নর্থ কমিশনার বিক্রম প্রকাশ ওয়ানি, অডিট–১ কমিশনার প্রবীণ কুমার আগরওয়াল, আইসিসি সভাপতি ও শ্যাম মেটালিক্স অ্যান্ড এনার্জি লিমিটেডের সিএমডি ব্রিজ ভূষণ আগরওয়াল এবং আইসিসি-র ডিরেক্টর জেনারেল রাজীব সিংহ।

শ্রবণ কুমার জানান, পশ্চিমবঙ্গ এই আর্থিক বছরে জিএসটি রাজস্বে ১৪ শতাংশ বৃদ্ধি দেখেছে, যা রাজ্যের অর্থনৈতিক স্থিতি ও কর-আদায়ের শৃঙ্খলার প্রতিফলন।

শ্রবণ কুমার জানান, ২০১৭ সালে জিএসটি চালুর পর থেকে এ পর্যন্ত ৫৬টি কাউন্সিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে, যা প্রতিটি পর্যায়েই ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করেছে। ২০২৪ সালের কেন্দ্রীয় বাজেটে আনা হয়েছে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সংশোধন—ইনপুট ট্যাক্স ক্রেডিটে পূর্ববর্তী শিথিলতা, ২০১৭–২০২০ সালের শো-কজ নোটিসের জন্য অ্যামনেস্টি স্কিম, রেট্রোস্পেকটিভ করছাড়ের অনুমতি এবং নোটিস জারির সর্বোচ্চ সময়সীমা ৩.৫ বছর নির্ধারণ।

গত ৩ সেপ্টেম্বর ঘোষিত জিএসটি ২.০ সংস্কারে কর কাঠামো এবং প্রশাসনিক প্রক্রিয়ায় বড় পরিবর্তন এসেছে। এখন মূলত দুটি হার থাকবে—৫ শতাংশ ও ১৮ শতাংশ। ১২ শতাংশ ও ২৮ শতাংশ হার তুলে দেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্যসেবা, ওষুধ, হাসপাতালের কক্ষ, জিম, স্যালন ও ফিটনেস সেন্টারে এখন মাত্র ৫ শতাংশ জিএসটি ধার্য হয়েছে। বিমা খাত সম্পূর্ণ করমুক্ত হয়েছে। কৃষি, নির্মাণ, খাদ্য, জুট, চামড়া, হস্তশিল্প, ফুটওয়্যার এবং সিমেন্ট খাতেও করের হার ২৮ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৮ শতাংশ করা হয়েছে। তবে বিলাসবহুল ও ‘সিন গুডস’ যেমন তামাক, মদ, গেমিং ও ক্যাসিনোতে করের হার ৪০ শতাংশ রাখা হয়েছে।

তিনি আরও জানান, এই পরিবর্তনগুলি কর কাঠামোর ভারসাম্য ফেরাবে, ব্যবসার নগদ প্রবাহ উন্নত করবে এবং ভোগব্যয় বাড়াবে। ২০১৭ সালে যেখানে মাসিক জিএসটি সংগ্রহ ছিল ৮০,০০০ কোটি, বর্তমানে তা প্রায় ২ লক্ষ কোটিতে পৌঁছেছে। আরবিআই ও আইএমএফ উভয়েই ভারতের জিডিপি প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস ৬.৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৬.৮ শতাংশ করেছে।

আইসিসি সভাপতি ব্রিজ ভূষণ আগরওয়াল বলেন, জিএসটি ভারতকে একটি ঐক্যবদ্ধ কর ব্যবস্থার অধীনে এনেছে, যা ব্যবসা করার প্রক্রিয়াকে অনেক সহজ করেছে। তাঁর মতে, জিএসটি ২.০ সংস্কার প্রশাসনকে সহজতর করবে, প্রযুক্তির মাধ্যমে স্বচ্ছতা আনবে এবং বিশেষ করে এমএসএমই ও রপ্তানিকারকদের জন্য উপকারী হবে। তিনি জানান, অক্টোবর মাসে দেশের জিএসটি সংগ্রহ হয়েছে ১.৯৫ লক্ষ কোটি, যা বাজারে সক্রিয়তার ইঙ্গিত দেয়।

ডিসেম্বর থেকে শুরু হতে চলা জিএসটি ট্রাইব্যুনালের কাজ কর-সংক্রান্ত বিরোধ নিষ্পত্তিতে গতি আনবে এবং একই সঙ্গে দেশের জিএসটি সংস্কার প্রক্রিয়াকে আরও দৃঢ় করবে — যা ভারতীয় অর্থনীতির ভবিষ্যৎ বৃদ্ধির পথকে আরও সুগম করে তুলবে। আইসিসি-র ডিরেক্টর জেনারেল রাজীব সিংহ বলেন, ভারতের সংস্কারভিত্তিক প্রবৃদ্ধি সরকারের স্বচ্ছতা ও শিল্পক্ষেত্রের সহযোগিতার প্রতিফলন। তাঁর মতে, কার্যকর নেতৃত্ব ও ধারাবাহিক বাস্তবায়নের ফলে দেশের ব্যবসা-বান্ধব পরিবেশ আরও মজবুত হয়েছে এবং ভারতের দীর্ঘমেয়াদি প্রবৃদ্ধিতে আত্মবিশ্বাস বাড়িয়েছে।

PREV
Read more Articles on
click me!

Recommended Stories

Stock Market Update: কোন কোন স্টকে নজর থাকবে শুক্রবার? রেপো রেট নিয়ে বড় ঘোষণার পর, দালাল স্ট্রিটের আপডেট
RBI MPC: জরুরি সিদ্ধান্ত রিজার্ভ ব্যাঙ্কের! রেপো রেট ২৫ বেসিস পয়েন্ট কমে ৫.২৫%? বিরাট আপডেট