তিনটি টাকশালে ছাপা হয়েছে কোটি কোটি মূল্যের পাঁচশো টাকার নোট। কিন্তু সেগুলি কোথায় গেল। আরটিআই-এর মাধ্যমে সামনে এল ভয়ঙ্কর তথ্য।
আবাককাণ্ড, ৮৮০০০ কোটি টাকাও বেশি মূল্যের ৫০০ টাকার নোট গায়েব! এই নোট রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কোষাগারে থাকার কথা ছিল। কিন্তু নেই। একটি আরটিআই প্রশ্নের উত্তরে এমনই তথ্য সামনে এসেছে। শনিবার ( ১৭ জুন) ফ্রি প্রেস জার্নালের রিপোর্ট তেমনই দাবি করছে। অথচ বেঙ্গালুরু, নাসিক ও দেওয়াসের তিনটি টাকশাল ৮.৮১০.৬৫ কোটি টাকার নোট ছাপিয়েছে। সেগুলি থাকার রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কোষাগারে গচ্ছিত থাকার কথা ছিল। কিন্তু নোটগুলি এখনও গায়েব।
সমাজ কর্মী মনোরঞ্জন রায় এই মর্মে একটি আরটিআই ফাইল করেছিলেন। তথ্যের অধিকার আইনের ভিত্তিতে তিনি জানতে চেয়েছিলেন ঘটনার সত্যতা। তাতেই জানান হয়েছে বেঙ্গালুরু, নাসিক এবং দেওয়াসে অবস্থিত তিনটি সরকারী টাকশাল ৮.৮১০.৬৫ কোটি টাকার ৫০০ টাকার নোট ছাপিয়েছিল। কিন্তু RBI ৭২৬০ কোটি টাকার নোটই পেয়েছে, সবমিলিয়ে রিজার্ভব্যাঙ্কের কোষাগারে কম রয়েছে ১৫৫০. ৬৫ কোটি টাকা। তাই নোটগুলি নিখোঁজ বলেই ধরে নেওয়া হয়েছে।
গতমাসে আরটিআই একটি প্রশ্নের উত্তরে ২০১৫ সালের এপ্রিল- মার্চ ২০১৬ পর্যন্ত নাসিক টাকশালের তৈরি ২১০ কোটি মূল্যের ৫০০ টাকার নোট গায়েবের কথাও মেনে নিয়েছে। তাই কেউ যদি আগের আগের আর বর্তমানে হারিয়ে যাওয়া নোট একসঙ্গে যোগ করে তাহলে সেই অঙ্কটা হবে ১৭৬০.৬৫ কোটি টাকা। কয়েক কোটি টাকা ছাপার তথ্য রয়েছে। কিন্তু টাকার কোনও সন্ধান নেই। বলা যেতে পারে উধাও নোট। আরটিআই প্রশ্নের উত্তরে আরবিআই বলেছে, নাসিক টাকশাল নতুন ডিজাইন করা ৩৭৫.৪৫০ কোটি টাকা মূল্যের ৫০০ টাকার নোট ছাপিয়েছে। কিন্তু আরবিআইএর রেকর্ডে দেখা যা্ছে ২০১৫-১৬ সালের মধ্যে তারা হাতে পেয়েছে মাত্র ৩৪৫ মিলিয়ন।
গতমাসে আরটিআই একটি প্রশ্নের উত্তরে বলেছেন একই ছাপাখানা ২১৫-২০১৬ -এর আর্থিক বছরের জন্য ২১০ কোটি মূল্যের ৫০০ টাকার নোট আরবিআইকে সরবরাহ করেছিল। সেই সময় আরবিআইের গর্ভনর ছিলেন রঘুরাম রাজন। কিন্তু সেই নোটের একটি আরবিআই পায়নি। বেঙ্গালুর টাকশাল জানিয়েছেন পরের আর্থিক বছর অর্থাৎ ২০১৬-২০১৭ সালে ১৯৫৩০০০ কোটি টাকা মূল্যের ৫০০ টাকার নোট সরবরাহ করেছে। এফপিজে জানিয়েছেন তিনটি টাকশাল থেকে যে নোট পাঠান হয়েছিল তারমূল্য ৮৮১০ কোটি টাকা। কিন্তু আরবিআই মাত্র ৬২৬৯ কোটি টাকা মূল্যের নতুন ডিজাইন করা ৫০০ টাকার নোটই হাতে পেয়েছে। তবে আরবিআই কর্মকর্তারা এই বিষয়ে এখনও মুখ খুলতে নারাজ।
ভারত সরকারে টাকশাল নোট ছাপায়। তারপরই তা পাঠিয়ে দেওয়া হয় আরবিআইতে। আরবিআই দেশের নগদ প্রবাহ বজায় রাখে। অর্থাৎ নোট সরবরাহ করে। সেই নিয়ম অনুযায়ী তিনটি টাকশালই নোট পাঠিয়েছিল আরবিআইকে। কিন্তু তারপর থেকে সেগুলির কোনও সন্ধান নেই। সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারী এক ব্যক্তি বলেছেন এটাই বিশ্বের সবথেকে বড় হাইওয়ে ডাকাতি।