অতিমারি পরিস্থিতিতে সাধারণকে করে সম্পূর্ণ ছাড় দেওয়া হোক, আর্জি সুব্রমনিয়ম স্বামীর

আগামী ১ এপ্রিল থেকে যদি কেন্দ্র কর ব্যবস্থা তুলে নেয় তাহলে দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি আবার পুরনো ছন্দে ফিরে আসবে। বাজেট সংক্রান্ত এক সাক্ষাৎকারে এমনটাই বলেন সুব্রমনিয়ম স্বামী। 

Kasturi Kundu | Published : Jan 23, 2022 7:11 AM IST

আর মাত্র কয়েকদিনের অপেক্ষা। তারপরই ১ ফেব্রুয়ারি সংসদে পেশ হতে চলেছে কেন্দ্রের ইউনিয়ন বাজেট (Union Budget)। ২০২২-২৩ অর্থবর্ষের ইউনিয়ন বাজেট পেশ করবেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ। আর এই বাজেটকে ঘিরে সকলের প্রত্যাশা একেবারে তুঙ্গে। কারণ অতিমারি পরিস্থিতিতে (Covid 19) এটি দ্বিতীয় বাজেট। তাই বাণিজ্য মহল থেকে সাধারণ মানুষ সকলেরই এই ইউনিয়ন বাজেটকে ঘিরে একটা আশা আকাঙ্খা রয়েছে। আর সর্বসাধারণের সুবিধার কথাও ভাবছে কেন্দ্র। সেই জন্যই সুব্রমনিয়ম স্বামীও (Subhramanium Swami) সকলের মঙ্গলের জন্যই কর অতিমারি পরিস্থিতিতে কর ব্যবস্থা তুলে নেওয়ার আর্জি জানিয়েছে। প্রথমসারির এক সংবাদমাধ্যমকে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে তিনি বলেন, আগামী ১ এপ্রিল থেকে যদি কেন্দ্র কর ব্যবস্থা তুলে নেয় তাহলে দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি আবার পুরনো ছন্দে ফিরে আসবে।  করোনা পরিস্থিতিতে অর্থিক পরিকাঠামো একেবারে জুবুথুবু হয়ে গিয়েছে। অর্থৈনিত গ্রোথের (Financial Growth) উন্নতির দিকে নজর রেখেই কেন্দ্রকে আপাতত কর তুলে নেওয়ার আর্জি জানিয়েছে।  

বাজেটের কেন্দ্রের ঠিক কী পদক্ষেপ নেওয়া উচিত বলে তিনি করেন, সাক্ষাৎকারে যখন তাঁকে এই বিষয় প্রশ্ন করা হয় তিনি বলেন, আগামী ইউনিয়ন বাজেটে সর্বপ্রথম যে বিষয়টির দিকে নজর দিতে হবে সেটা হল ইনকাম ট্যাক্স বা কর ব্যাবস্থা। অতিমারি পরিস্থিতিতে আর্থিক পরিস্থিতির টালমাটাল অবস্থা প্রসঙ্গে সকলেই অবগত। তাই এই দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করে সর্বপ্রথম কর ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনতে হবে। দেশের কোনও নাগরিকের থেকে কর নেওয়া বন্ধ করতে হবে। যতদিন পর্যন্ত না অতিমারি পরিস্থিতি ঠিক হচ্ছে ততদিন পর্যন্ত সাধারণ মানুষের কথা ভেবেই আগামী ১ এপ্রিল থেকেই কর ব্যবস্থায় এই পরিবর্তন আনা জরুরি বলে মত প্রকাশ করেছেন সুব্রমনিয়ম স্বামী। এছাড়াও তিনি বলেন, বিগত দুই থেকে তিন বছর কোভিডের কারণে মানুষের চিকিৎসার খরচও অনেকাংশে বেড়ে গিয়েছে। সেই সঙ্গে অনেকে কর্মসংস্থানও খুঁইয়েছে। কিন্তু দেশে মুদ্রাস্ফীতি ক্রমশ বাড়ছে। এই রকম পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষের ওপর করের অতিরিক্ত বোঝা না চাপানোর জন্যই মতপ্রকাশ করেছেন তিনি। 

আরও পড়ুন-কেন্দ্রের সঙ্গে রেশন ডিলারদের বৈঠক,রেশন দোকানেই মিলবে ৫ কেজি রান্নার গ্যাস,ঘোষণা করা হতে পারে ইউনিয়ন বাজেটে

আরও পড়ুন-স্বাস্থ্যবীমাকে সর্বসাধারণের কাছে পৌঁছানোই মূল লক্ষ্য,ইউনিয়ন বাজেটে জিএসটি কমানোর দাবি বীমা সংস্থাগুলোর

আরও পড়ুন-২০২২-২৩ অর্থ বর্ষের ইউনিয়ন বাজেটে স্বাস্থ্যখাতে বরাদ্দের পরিমান ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধির সম্ভবনা

নিজের মতামতের স্বপক্ষে যুক্তি দিতে গিয়ে বলেছেন, কর ব্যবস্থা ছাড়াও কেন্দ্রের টাকা উপার্জন অনেক পথ খোলা রয়েছে। তিনি বলেন, বিজেপি সরকার কর বাবদ আয় করে ৪ লাখ কোটি টাকা, যার পরিমান এমন কিছু আকাশছোঁয়া নয়। কিন্তু গোটা বাজেটের দিকে লক্ষ্য রাখলে দেখা যাবে ইতিমধ্যেই টাকার অঙ্ক পৌঁছে গিয়েছে ৮ থেকে ৯ লাখ কোটি টাকায়। সাক্ষাৎকারে এমনটাই বালেছেন সুব্রমনিয়ম স্বামী। একইসঙ্গে তিনি কর ব্যবস্থা তুলে নিয়ে অন্য পথে কেন্দ্রের আয়ের মাধ্যম হিসাবে তুলে ধরেন ২ জি লাইসেন্সেসের নিলাম। প্রথম নিলাম থেকেই কেন্দ্রের ৪ লক্ষ্য কোটি টাকা লাভ হয়েছে বলে জানান তিনি। এই প্রসঙ্গ টেনেই বলেন, কর ব্য়বস্থা থেকে আয়ের পরিমান যদি নিলামের সমতুল্য হয় তাহলে অতিমারি পরিস্থিতিতে কর ব্যবস্থা তুলে নিতে কেন্দ্রের খুব একটা সমস্যা হওয়ার কথা নয়। কয়লার নিলামের মাধ্যমেও সরকার তার ঘরে মোটা লাভের পরিমান তুলতে পারে বলে জানান  সুব্রমনিয়ম স্বামী। 

সাক্ষাৎকারের মাঝেই সুব্রমনিয়ম স্বামী যুক্তি দিয়ে বুঝিয়ে বলেন,যদি দেশের অর্থনীতি ফের মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে তাহলে সকলের জীবনেও আর্থিক স্থিতি ফিরে ফিরে আসবে। এর ফলে করদাতারা খুশি মনে করপ্রদানে আগ্রাহী হবে। যে কোম্পানিগুলোর আয়ের জন্য পুর্নবিনিয়োগ করতে হয়েছে সেই সমস্ত সংস্থাগুলোকে করমুক্ত করা দরকার। তার ফলে সংস্থাগুলোর সঞ্চয়ের পরিমন বেশ খানিকটা বৃদ্ধি পাবে, যার ফলে পরোক্ষভাবে গ্রোথের পরিমানও বাড়বে। বলা বাহুল্য, যখন কোনও কর্মসংস্থানের গ্রোথের পরিমান বাড়ে তখন দেশের অর্থনৈতিক পরিকাঠামোও উন্নত হয়। সাক্ষাৎকারে তিনি ইউনিয়ন বাজেটে আরও একটি বিষয় জুলে আনার আর্জি জানাচ্ছেন। সেটি হল ব্যাঙ্কের ঋমের ওপর সুদের হার কমানো। সুদের হার ১২ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৯ শতাংশে আনার কথা বলেন তিনি। ব্যাঙ্কের ফিক্সড ডিপোজিট বা স্থায়ী আমানতের ওপর কেন্দ্র সুদের হার ৬ শতাংশ থেকে ৯ শতাংশ পর্যন্ত করলে ভাল হয় বলে মত প্রকাশ করেন সুব্রমনিয়ম স্বামী। অতিমারি পরিস্থিতি ও মুদ্রাস্ফীতির বিষয়টিকে নজরে রেখে বাজেটে ডিজিপি-র হার কমানো উচিত বলেও দাবি করেন তিনি। 


 

Share this article
click me!