গোটা বিশ্ব জুড়ে পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য কেন্দ্র সরকার এক দেশ এক রেশন কার্ড সুবিধা চালু করে দিয়েছে ৷ এবার ডিজিটাল রেশন কার্ডের সঙ্গে আধার কার্ড, মোবাইল নম্বর সংযুক্ত করা বাধ্যতামূলক। এখনও পর্যন্ত দেশের মোট ২৬টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল এর মধ্যে যুক্ত রয়েছে । তবে যে সমস্ত রাজ্যে এখনও 'এক দেশ, এক রেশন কার্ড' চালু হয়নি সেসব রাজ্যে ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে তা চালু করার নির্দেশ দিল সুপ্রিমকোর্ট।
রেশন কার্ড এর গুরুত্ব সবথেকে বেশি টের পাওয়া যাচ্ছে এই লকডাউনে। সকলের কথা মাথায় রেখেই নয়া সিদ্ধান্ত ঘোষণা করল সুপ্রিম কোর্ট। বিচারপতি অশোক ভূষণ এভং বিচারপতি এমআর শাহের ডিভিশন বেঞ্চ নতুন রায় শোনাল। অন্যদিকে সুপ্রিম কোর্টের 'এক দেশ এক রেশন কার্ড' রায় ঘোষণায় কিছুটা হলেও চাপে পড়তে হল রাজ্যকে। কারণ বহু রাজ্যে চালু হলেও পশ্চিমবঙ্গে 'এক দেশ এক রেশন কার্ড'-এর ব্যবস্থা চালু করা হয় নি। কারণে রাজ্য সরকারের যুক্তি ছিল, এতে রাজ্যের উপর বাড়তি চাপ বাড়বে।
এবার রাজ্যের সেই দাবি উড়িয়ে সুপ্রিমকোর্ট বলেছিল 'এক দেশ এক রেশন কার্ড'-প্রকল্প চালু করতে হবে রাজ্যকে। শীর্ষ আদালতের সেই নির্দেশে তখন কোনও সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়নি। খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষ বলেছিলেন, এক দেশ এক রেশন কার্ড প্রকল্প চালুর বিষয়ে সমস্ত সিদ্ধান্ত নেবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবং তারপরই মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি জানিয়েছিলেন যে আগামী তিন মাসের মধ্যে রাজ্যে চালু হবে 'এক দেশ এক রেশন কার্ড'। তবে শীর্ষ আদালতের নির্দেশের পর এই প্রকল্প চালু করতে রাজ্যের হাতে তিন মাস নয় বরং সময় আছে মাত্র এক মাস । আগামী ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে 'এক দেশ এক রেশন কার্ড' চালু করার নির্দেশ দিল সুপ্রিমকোর্ট।
বিশেষত পরিযায়ী শ্রমিকদের কথা মাথায় রেখে কেন্দ্রীয় সরকারের একটি সংস্কারমূলক প্রকল্প 'এক দেশ এক রেশন কার্ড'। এর প্রয়োগে উপভোক্তাদের ন্যাশনাল ফুড সিকিউরিটি অ্যাক্টের অধীনে রেশন দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। ৷ নয়া এই সুবিধায় পরিযায়ী শ্রমিকরা যাতে অন্য রাজ্যে গিয়েও রেশন তুলতে পারেন, তারই ব্যবস্থা এই আইনের মাধ্যমে করা হয়েছে। নয়া নিয়ম বলা হয়েছে, কোনও নাগরিক যদি ৩ মাসের মধ্যে রেশন কার্ড ব্যবহার না করেন তাহলে কিন্তু রেশন কার্ড বাতিল বলে গণ্য হবে।
সরকারের মতে, কোনও ব্যক্তি যদি একটানা তিনমাস সরকারের দেওয়া স্বল্পমূল্যের জিনিস না কেনেন তার অর্থ সরকারের সাহায্য ছাড়াই জীবনযাপনের সঙ্গতি তাদের রয়েছে। এবং খাদ্যশস্যের জন্য সরকারি সাহায্যের কোনও প্রয়োজন নেই। সুতরাং, তাদেরর রেশন কার্ডেরও কোনও প্রয়োজন নেই। সুতরাং রেশন কার্ডের সুবিধা বজায় রাখতে হলে নাগরিকদের প্রতি তিন মাসে অন্তত একবার সরকারি ফেয়ার প্রাইস শপ থেকে কম টাকায় কিছু কিনতে হবে। মোদি সরকারের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারগুলির মধ্যে একটি হল এই এক দেশ এক রেশন কার্ড পদ্ধতি । চলতি বছরের লকডাউন চলাকালীন জুন মাস থেকে এই প্রকল্প চালু হয়েছে। মোট ৬৭ কোটি মানুষকে এর আওতায় আনা হবে। আগামী বছরের মার্চের মধ্যে প্রকল্পের কাজ ১০০ শতাংশ শেষ হবে বলে দাবি কেন্দ্রের। রেশন কার্ডের বদলে গ্রাহকদের ডিজিটাল রেশন কার্ড দেওয়া হবে। এবং বায়োমেট্রির মাধ্যমে সমস্ত গ্রাহকদের শনাক্ত করা হবে। তবে একটানা তিন মাস কেউ রেশন কার্ডের সুবিধা না নিলে তা বাতিল বলেই গণ্য হবে।