২০১৯-২০২০ সালে ভারতীয় রেলের আর্থিক ক্ষতির পরিমানটা ছিল ২,০৫৯ কোটি টাকা। তবে করোনা পরবর্তী পরিস্থিতিতে কমেছে আর্থিক ক্ষতির পরিমান। ২০২১ সালে সেই ক্ষতির পরিমান কমে দাঁড়িয়েছে ৩৮ কোটি টাকায়।
অতিমারি করোনা পরিস্থিতিতে অনেকটা ক্ষতির মুখে পড়েছিল ভারতীয় রেল। কোভিড পরিস্থিতিতে শুধুমাত্র স্পেশাল ট্রেন চলছিল। সেইভাবে রেলযাত্রীদের ভাড়ার টাকাও ওঠেনি। অফিস থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সবই বন্ধ ছিল। আর এই কঠিন পরিস্থিতিতে আর্থিক সঙ্কটের সম্মুখীন হয়েছিল ভারতীয় রেলের আর্থিক পরিস্থিতি। সম্প্রতি ভারতীয় রেলের তরফে সংসদকে জানান হয়েছে, ভাড়া বাবদ যাত্রীদের যে ছাড় দেওয়া হয়েছিল তার জন্য অনেকটা ক্ষতির সম্মুখাীন হয়েছে ভারতীয় রেল। ২০১৯-২০২০ সালে ভারতীয় রেলের আর্থিক ক্ষতির পরিমানটা ছিল ২,০৫৯ কোটি টাকা। তবে করোনা পরবর্তীকালে পরিস্থিতি যেমন স্বাভাবিক হচ্ছে, তেমনই পুরনো ছন্দে ফেরার চেষ্টা ভারতীয় রেলেরও। চলতি বছরে সেই বিপুল ক্ষতির ধাক্কা সামলিয়ে একটু একটু করে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে ভারতীয় রেলের আর্থিক পরিস্থিতি। ২০২১ সালে সেই ক্ষতির পরিমান কমে দাঁড়িয়েছে ৩৮ কোটি টাকায়। রেলের তরফে প্রাক-কোভিড পরিষেবা পুনরুদ্ধার করা হলেও প্রবীণ নাগরিকদের জন্য ছাড় সহ অন্যান্য ছাড়গুলি এখনও পুনরায় চালু করা হয়নি।
সম্প্রতি লোকসভায় একটি প্রশ্নের উত্তরে, রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব জানিয়েছেন,যাত্রীর ভাড়াতে যে ভর্তুকি দেওয়া হয় এবং এটি থেকে যে আয় হয় তা এই জাতীয় পরিবহনের অপারেটিং খরচের চেয়ে কম। তিনি তাঁর বক্তব্যের মাধ্যমে জানিয়েছেন, ২০১৯-২০২০ এবং ২০২০-২১ সালের আর্থিক বছরে যাত্রীদের জন্য বিভিন্ন শ্রেণীর যাত্রী ভাড়া বাবদ ছাড়ের কারণে আয়ের পরিমান যে হারে কমেছিল তা যথাক্রমে ২,০৫৯ কোটি টাকা এবং ৩৮ কোটি টাকা ৷ গত দুই দশক ধরে, রেলের বিভিন্ন যাত্রীদের টিকিটের এই ছাড় একটি বহুল আলোচিত বিষয় হয়ে উঠেছে এবং একাধিক কমিটি এই ছাড় প্রত্যাহারের সুপারিশ করেছে । ২০১৬ সালের জুলাই মাসে এর ফলস্বরূপ , রেল টিকিট বুক করার সময় বয়স্কদের জন্য ঐচ্ছিক ছাড় দেওয়া হযেছে । রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব আরও জানিয়েছেন, যে ২০১৯-২০২০ সালের মধ্যে যাত্রী টিকিট বিক্রি থেকে মোট ৫০,৬৬৯.০৯ কোটি টাকা আয় করেছিল রেল। কিন্তু মহামারি করোনা পরিস্থিতির জেরে যখন যাত্রীদের টিকিট বিক্রির সীমা তলানিতে এসে ঠেকেছিল তখন রেলের আয়ের পরিমান দাঁড়িয়েছিল ১৫,২৪৮.৪৯ কোটি টাকা। রেলমন্ত্রীর বক্তব্যে উঠে আসে আরও একটি তথ্য। আর সেটি হল চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত, যাত্রী ভাড়া থেকে পাওয়া গিয়েছে ১৫,৪৩৪.১৮ কোটি টাকা।
আরও পড়ুন-Unreserved Ticketing Services-কম টাকায় রেল যাত্রার সুযোগ, ৩১ টি ট্রেনে ফিরল আনরিজার্ভড টিকিট পরিষেবা
আরও পড়ুন-Eastern Railway: আয়ের উৎস বাতিল যন্ত্রাংশ, করোনাকালে পূর্ব রেলের আয় ২০০ কোটি টাকা
আরও পড়ুন-Platform Ticket-রেলযাত্রীদের জন্য সুখবর,একধাক্কায় প্ল্যাটফর্ম টিকিটের দাম কমল তিনগুণ
উল্লেখ্য, ২০২০-২১ সালে ট্রেনগুলিকে সামান্য বেশি দাম দিয়ে বিশেষ হিসাবে চালানো হয়েছিল। বেশ খানিকটা বাড়ানো হয়েছিল প্ল্যাটফর্ম টিকিটের দামও। তবে বর্তমানে করোনা পরিস্থিতি কিছুটা স্থিতিশীল হওয়ায় প্ল্যাটফর্ম টিকিটের দাম কমিয়ে দিয়েছে ভারতীয় রেল। বলা বাহুল্য, ২০১৯-২০২০ সালে প্ল্যাটফর্ম টিকিট বিক্রি থেকে রেলের আয় হয়েছিল ১৬০.৮৭ কোটি টাকা। পরের বছর সেই আয় কমে দাঁড়ায় ১৫.৪৮ কোটি টাকা। যখন প্ল্যাটফর্ম টিকিটের দাম স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি ছিল তখন রাজস্বের পরিমান ছিল ৬০.৭৯ কোটি টাকা ছিল বলে লোকসভায় দাবি করেন রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব।