মোদী সরকারের টিকাদান পরিকল্পনা কি ভুল - বাড়তে পারে মিউট্যান্ট স্ট্রেনের দাপট, এল সতর্কবার্তা

প্রধানমন্ত্রীকে টিকাদান কৌশল বদলানোর জন্য চিঠি দিলেন ডাক্তাররা

বর্তমানে বাচ্চাদের টিকা দেওয়ারও বিরোধী তারা

এভাবে টিকা দিলে উত্থান ঘটাতে পারে মিউট্যান্ট স্ট্রেনের

মোদী সরকারে পরিকল্পনায় ভুল কোথায়

Asianet News Bangla | Published : Jun 10, 2021 6:20 PM IST

মোদী সরকারের করোনা টিকাকরণ অভিযানের পরিকল্পনায় কি কোথাও গাফিলতি থেকে যাচ্ছে? নির্বিচারে, গণহারে এবং অসম্পূর্ণ ডোজের টিকা দিতে থাকলে তা আখেরে করোনার মিউট্যান্ট স্ট্রেন অর্থাৎ আরেক পরিবর্তিত রূপভেদের উত্থান ঘটাতে পারে। বৃহস্পতিবার, এই বিষয়ে এইমস-এর চিকিৎসক এবং এমনকী সরকারেরই তৈরি কোভিড-১৯ জাতীয় টাস্কফোর্সের কয়েকজন সদস্য-সহ জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের একটি দল এই বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে সতর্ক করলেন। তারা সুপারিশ করেছেন, যারা করোনা আক্রান্ত হয়েছেন, তাদের এই মুহূর্তে টিকা দেওয়ার দরকার নেই, কারণ তাদের ক্ষেত্রে টিকা কার্যকরী হয় কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়।

ইন্ডিয়ান পাবলিক হেলথ অ্যাসোসিয়েশন (IPHA), ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন অফ প্রিভেন্টিভ অ্যান্ড সোশ্যাল মেডিসিন (IAPSM) এবং ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন অফ এপিডেমিওলজিস্টস (IAE) - এই তিন সংগঠনের বিশেষজ্ঞরা এদিন এক রিপোর্টে দাবি করেছেন, শিশু সহ জনসংখ্যার বিস্তৃত অংশকে টিকা দেওয়ার পরিবর্তে, বর্তমানে লক্ষ্য হওয়া উচিত করোনা ,সংক্রমণে প্রাণহানির ঝুঁকিতে থাকা জনসংখ্য়ার অংশকে করোনা টিকার সম্পূর্ণ ডোজ দেওয়া। দেশের মহামারীর বর্তমান পরিস্থিতি এমনটাই দাবি করছে বলে জানিয়েছেন তাঁরা। টিকাদান অভিযানটি রসদ এবং মহামারি সংক্রান্ত তথ্যের ভিত্তিতে পরিচালনা করার অনুরোধ জানিয়েছেন তাঁরা। এদিন এই প্রতিবেদন তাঁরা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে যে জমা দিয়েছেন।

দেশের শীর্ষস্থানীয় স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা এই প্রতিবেদনে বলেছেন, একই সঙ্গে সমস্ত বয়স গোষ্ঠীর জন্য টিকাকরণ প্রক্রিয়া উন্মুক্ত করে দেওয়ার ফলে অতি দ্রুত মানব সম্পদ ও অন্যান্য সম্পদ নষ্ট হয়ে যাবে। আর এভাবে টিকা দিলে জনসংখ্যার একটা বড় অংশ টিকার একটি করে ডোজ পাবে ঠিকই কিন্তু, মহামারি মোকাবিলার ক্ষেত্রে তার প্রভাব খুবই কমই পড়বে। এই মুহূর্তে অল্পবয়স্ক এবং শিশুদের টিকা দেওয়ারও  বিরোধিতা করেছেন তাঁরা। সরকারের এই পরিকল্পনা কার্যকরি হবে না, বরং এই অপরিকল্পিত টিকাকরণ করোনাভাইরাসের আরও কিছু মিউট্যান্ট স্ট্রেন-এর উত্থান ঘটাতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তাঁরা।

টিকারণের সময়সূচির ক্ষেত্রেও প্রমাণ-ভিত্তিক নমনীয়তা আনার সুপারিশ করেছেন এই স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। নির্দিষ্ট ভেরিয়েন্টগুলির মোকাবিলার জন্য জন্য টিকারণের গতি বাড়ানোর কথা বিবেচনা করা প্রয়োজন। অর্থাৎ, ডেল্টা ভেরিয়েন্ট-এর মতো ভাইরাসটির কোনও অতি সংক্রামক রূপভেদ কোনও এলাকায় ধরা পড়লে, সেখানে কোভিশিল্ডের দ্বিতীয় ডোজের সময়ের ব্যবধান কমিয়ে আনা যেতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভ্যাকসিন অবশ্য়ই করোনভাইরাসের বিরুদ্ধে একটি শক্তিশালী অস্ত্র। তাই, অন্যান্য সমস্ত শক্তিশালী অস্ত্রের মতো এটিও নির্বিচারে ব্যবহার করা উচিত নয়। এই অস্ত্রের সর্বাধিক সুবিধা পেতে একে কৌশলগতভাবে প্রয়োগ করা উচিত। মহামারি ঠেকাতে সব প্রাপ্তবয়স্কদের টিকা দেওয়ার ধারণাটি সঠিক হলেও, বাস্তব চিত্রকেও মেনে নিতে হবে। দেশে ভ্যাকসিনের প্রাপ্যতা সীমিত। তাই অধিকাংশ প্রৌঢ়, বা সহঅসুস্থতা থাকা ব্যক্তিবর্গকে সকলের আগে ভ্যাকসিন দেওয়া উচিত। তরুণ এবং শিশুদের বর্তমানে টিকতা দেওয়াটা কার্যকরী হবে না।

Share this article
click me!