তালাবন্ধ আইসিইইউ-তে পড়ে কোভিড রোগীদের মৃতদেহ
হাসপাতালে দেখা নেই একজনও ডাক্তার বা নার্সের
এমনকী, নেই রোগীর আত্মীয়দের সঙ্গে কথা বলার জন্য একজন লোকও
ভাইরাল গুরগাঁও-এর কৃতী হাসপাতালের ভিডিও
হাসপাতালের এদিক থেকে ওদিক পাগলের মতো ছুটে বেড়াচ্ছেন। গোটা হাসপাতালে দেখা নেই একজনও ডাক্তার বা নার্সের। এমনকী, রিসেপশনেও নেই একজনও কেউ, যে রোগীর আত্মীয়দের সঙ্গে কথা বলতে পারে। আইসিইউ-তে গিয়ে আরও বিস্মিত তাঁরা। আইসিইউ ওয়ার্ডের দরজা তালাবন্ধ। ধাক্কা দেওয়ার পরও ভিতর থেকে কারোর সাড়া নেই। এমন সময় দিশেহারা রোগীর আত্মীয়রা দেখা পেলেন দুই পুলিশ কর্মীর। আর তাঁদের নিয়ে আইসিইউ-এর তালা খুলে ঢোকার পরই চোখে পড়ল ভয়াবহ দৃশ্য। এমনই একটি ভিডিও ভাইরাল হয়ে তীব্র চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে নেট দুনিয়ায়।
ভাইরাল ভিডিওটির সত্যতা এশিয়ানেট নিউজ বাংলার পক্ষ থেকে যাচাই করা যায়নি। তবে দাবি করা হচ্ছে ওই ভিডিওটি গুরগাঁও-এর 'কৃতী হাসপাতালে'র ভিডিও। গত শুক্রবার ওই হাসপাতালে ভর্তি থাকা এক করোনা রোগীর আত্মীয় ভিডিওটি তোলেন। পুলিশকে নিয়ে আইসিইউ-এর ভিতর ঢুকে কী দেখেছিলেন রোগীর আত্মীয়রা? একের পর এক বিছানায় পড়ে রয়েছে করোনা রোগীদের মৃতদেহ। ওই দুজন পুলিশ ছাড়া, হাসপাতালের পক্ষ থেকে একজন কর্মী, ডাক্তার, নার্স - কারোর খোঁজ পাওয়া যায়নি। মৃত করোনা রোগীদের আত্মীয়দের দাবি, ওই রাতে করোনা রোগীদের দেহগুলি ফেলে হাসপাতাল থেকে পালিয়ছিলেন কর্মীরা।
বস্তুত, ওই দিন রাতে কৃতী হাসপাতালে অন্তত ৬ জন রোগীর মৃত্যু হয়েছিল। আর প্রত্যেকেরই মৃত্যুর কারণ ছিল অক্সিজেনের অভাব, এমনটাই অভিযোগ। মৃত করোনা রোগীদেরদেহ আইসিইউ-তে পড়ে থাকার অভিযোগ মেনে নিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তবে ডাক্তার-নার্সরা পালিয়েছিলেন, এমনটা তাঁরা মানছেন না। সুপার জানিয়েছেন, রোগীর আত্মীয়রা হামলা করতে পারে, এই আশঙ্কায় তাঁরা লুকিয়েছিলেন ক্যান্টিনে।
সুপার জানিয়েছেন, ওইদিন বিকাল ৪টের সময় করোনা রোগীদের আত্মীয়দের জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল, হাসপাতালে অক্সিজেনের ঘাটতি দেখা দিয়েছে। রোগীদের তাঁরা যেন অন্য কোনও হাসপাতালে নিয়ে যান। এরপর, ওইদিন রাত ১১টার মধ্যে ৬ জন রোগীর মৃত্যু হয়েছিল। বারবার জানিয়েও সরকারের পক্ষ থেকে কোনও সাহায্য মেলেনি। ওই ঘটনার দিন কয়েক আগেই এক করোনা রোগীর মৃত্যুর পর আক্রান্ত হয়েছিলেন হাসপাতালের ডাক্তার-নার্সরা। গত শুক্রবার তাই, সুপার নিজেই হাসপাতালের কর্মীদের ক্যান্টিনে লুকিয়ে পড়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন। কারণ, তাঁদের জীবন বিপন্ন হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হয়েছিল। পুলিশ আসতেই গোপন ডেরা থেকে তাঁরা বেরিয়ে এসেছিলেন।
স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, কৃতী হাসপাতাল কোভিড হাসপাতাল হিসাবে নথিভুক্তই নয়। তাই তাদের কোভিড রোগী ভর্তি করার কথাই নয়। কোভিড হাসপাতাল হিসাবে নথিভুক্ত হাসপাতালগুলির উপর তাঁরা কড়া নজর রাখেন। কিন্তু, কৃতী হাসপাতাল সেই তালিকায় না থাকায় সমস্যা হয়েছিল।