গুরুতর শ্বাসকষ্ট নিয়ে বাড়িতে একাকী ছিলেন। কোভিডের সব রকম উপসর্গই ছিল। একটি এনজিও-র কর্মীরা তাঁকে উদ্ধার করতেও গেছিলেন। কিন্তু শেষ রক্ষা হলো না। দরজা ভেঙ্গে তাঁকে অচৈতন্য অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। মর্মান্তিকএই ঘটনাটি ঘটেছে চুঁচূড়ার ফুলপুকুরে।
জানা গিয়েছে, চুঁচূড়ার ফুলপুকুরে আভা দত্ত নামে ৭৩ বছরের এক মহিলা কয়েকদিন ধরে কোভিড উপসর্গ নিয়ে ভুগছিলেন। ওই বাড়িতে তিনি তাঁর জা এবং ভাসুর থাকতেন। এক ছেলে। সে তার স্ত্রীকে নিয়ে এক কিলোমিটার দূরে নতুন বাড়ি করে উঠে গেছেন। এমনই মর্মান্তিক ঘটনা যে আভাদেবীর জা-ননদ দুজনেই কোভিড আক্রান্ত হয়ে কলকাতায় ভর্তি ছিলেন। তার মধ্যে গতকাল তাঁর ভাসুর মারাও যান। অন্যদিকে ছেলে,ছেলেবউ ও কোভিডে আক্রান্ত হয়ে ঘরবন্দি। এমত অবস্থায় চুঁচুড়ায় অবস্থিত আরোগ্য নামে একটি সেচ্চাসেবী সংস্থায় ফোন করে ওই বৃদ্ধার ছেলে সাহায্য চান। তিনি জানান, দুপুর ৩ টে থেকে তিনি তাঁর মাকে ফোন করে পাচ্ছেন না। সম্ভবত তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। আরোগ্যের কর্ণধার ইন্দ্রজিৎ দত্ত জানিয়েছেন, তাঁরা সাড়ে ছটায় ফোন পেয়েছিলেন, আধঘন্টার মধ্যে তাঁরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান। কিন্তু অনেক ডাকলেও তাঁর সাড়া মেলেনি। তারা তখন জানলা দিয়ে ডাকতে যান। কিন্তু ঘরে উচ্চস্বরে টিভি চলছিল এবং তিনি সাড়া দেওয়ার মতো পরিস্থিতিতে ছিলেন না।
আরও পড়ুন, কোভিডে একদিনে রাজ্যে ১১৭ জনের মৃত্যু, মিউটেশনকে হাতিয়ার করে আসছে তৃতীয় ঢেউ, মত কেন্দ্রের
ইন্দ্রজিৎ জানিয়েছেন, এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক ব্যাপার যে আমরা জানলা দিয়ে দেখলাম, তিনি বিছানা ছেড়ে উঠতে গিয়ে পড়ে গেলেন। আমরা ফোনে তাঁর ছেলের অনুমতি নিয়ে দরজা ভেঙে ওই বৃদ্ধাকে উদ্ধার করি এবং হাসপাতালে নিয়ে যাই। কিন্তু তাঁকে বাঁচানো যায়নি। ছেলেকে খবর দেওয়া হয়। পরে ছেলের অনুমতি নিয়ে গভীর রাতে আমরাই দায়িত্ব নিয়ে মৃতদেহ দাহ করে দিই।