সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালকে কোভিড হাসপাতালে রূপান্তরের পরিবর্তে তালা বন্ধ হাসপাতালে কোভিড চিকিৎসা চালুর দাবিতে সরব গ্রামবাসী।এ ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে জঙ্গীপুর মহকুমার অন্তর্গত সাগরদিঘী এলাকায়।
সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল কে কোভিড হাসপাতাল রূপান্তর করার সিদ্ধান্তের পরিবর্তে দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে বন্ধ হয়ে পড়ে থাকা সরকারি হাসপাতালে কোভিড চিকিৎসা ব্যবস্থা চালুর দাবিতে সরব হয়েছে গোটা গ্রামবাসী। করোনার দাপটকে সামাল দিতে স্বাস্থ্যদপ্তরের নির্দেশে সাগরদিঘি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালকে কোভিড হাসপাতালে রূপান্তরের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা। সেইমতো কার্য প্রক্রিয়া শুরু করতেই গ্রামবাসীর মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে ।হাসপাতাল সুপারকে গ্রামবাসীরা তাঁদের অসন্তোষের কথা জানিয়ে লিখিত অভিযোগপত্রও জমা দিয়েছেন।
আরও পড়ুন, ভিন রাজ্য থেকে কোভিড দেহ ভেসে আসতে পারে বাংলায়, নবান্নের নির্দেশে কড়া নজরদারি গঙ্গায়
একদিকে স্বাস্থ্য দপ্তরের সিদ্ধান্তে অনড় থাকার মনোভাবে এলাকাবাসী লাগাতার তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। সেক্ষেত্রে তাদের যুক্তি সাগরদিঘি গ্রামীণ স্বাস্থ্য কেন্দ্রে বিকল্প হিসেবে প্রাথমিক পর্যায়ে ১৫-২০ টি বেডের এর ব্যবস্থা করে করোণা সংক্রমিত এর চিকিৎসা ব্যবস্থা চালু করা হোক। অন্যথায় পাকাপাকিভাবে সাগরদিঘী সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে যদি করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসা শুরু হয় তাহলে গোটা এলাকায় মানুষজনের মধ্যে আতঙ্ক ছড়াবেন কারণ অন্যান্য জটিল রোগের চিকিৎসা করানোর ক্ষেত্রে রোগীরা সেখানে যেতে রীতিমত ভয় পাবেন।
গ্রামবাসীর দাবি, 'সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালকে কোভিড হাসপাতাল করলে এলাকার সাধারণ মানুষ খুব সমস্যায় পড়বেন।' বিকল্প হিসেবে গ্রামবাসীদের দাবি, দীর্ঘ ২০১৩ সাল থেকে বন্ধ হয়ে পড়ে থাকা সাগরদিঘি গ্রামীণ হাসপাতালকে সংস্কার করে কোভিড হাসপাতাল করা হোক। এবিষয়ে হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত সুপার দিব্যজ্যোতি রায় বলেন, 'এটা আমাদের একক ভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয় নয়,আমরা বিষয়টি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। সাগরদিঘি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালকে করোনা হাসপাতাল রূপে গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া উচ্চ স্বাস্থ্যদপ্তরের তরফ থেকে বাকিটা উপর মহল থেকে যেমন নির্দেশ আসবে সেই মতো কাজ হবে ।'
আরও পড়ুন, জ্বলেই চলেছে চুল্লির আগুন, কোভিডে একদিনের মৃত্যুতে শীর্ষে কলকাতা
প্রসঙ্গত, প্রথমে পর্যায়ে ৫০ শয্যার ও পরবর্তীতে আরও শয্যা সংখ্যা বাড়িয়ে সম্পূর্ণ কোভিড হাসপাতাল রূপে গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। কিন্তু, এলাকায় আর কোনও স্বাস্থ্যকেন্দ্র না থাকায় সমস্যা দেখা দিয়েছে। কোভিড হাসপাতাল হলে এলাকার কয়েক হাজার মানুষ চিকিৎসা পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হবে বলে অভিযোগ। কোভিড হাসপাতাল হলে যেমন কিছু মানুষের চিকিৎসা হবে, তেমনি বহু মানুষ সাধারণ চিকিৎসা পরিষেবা না পেয়ে সমস্যায় পড়বে। কেন না, সাধারণ মানুষের চিকিৎসার জন্য আর তেমন কোনও হাসপাতাল নেই বললেই চলে। সুপার স্পেশ্যালিটি ছাড়া কয়েক কিলোমিটার দূরে জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতাল কিংবা জেলা সদর মেডিক্যালে ছুটতে হবে।
গ্রামবাসীদের দাবি, 'সরকার এই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করে দেখুক। বরং বছর কয়েক ধরে বন্ধ হয়ে পড়ে থাকা গ্রামীণ হাসপাতালটিকে সংস্কার করে সেটিকে নতুনভাবে চালু করে কোভিড হাসপাতাল করা হোক। স্থানীয় যুবক নুর আলম, বাপ্পা দাস বলেন, আমাদের এলাকায় যদি স্পেশ্যালিটির পরিষেবা বন্ধ হয়ে কোভিড হাসপাতালে রূপান্তর হয় মানুষ খুব সমস্যায় পড়বে। আমরা চাই, পাশেই বন্ধ গ্রামীণ হাসপাতাল, আইটিআই কলেজ বা কর্মতীর্থটিকে কোভিড হাসপাতাল করা হোক। তাহলে মানুষ সাধারণ চিকিৎসার সঙ্গে কোভিড চিকিৎসাও পাবে।'