চিন হল করোনভাইরাসের 'টাইম বোমা', ১২ বছর আগেই সতর্ক করেছিলেন বিজ্ঞানীরা

বিশ্বজুড়ে বিপজ্জনক আকার ধারণ করেছে করোনাভাইরাস সংক্রমণ

এখনও পর্যন্ত ১৯,৬৫০ জনের মৃত্যু হয়েছে

চিনের উহান শহরে প্রথম সংক্রমনের খবর পাওয়া গিয়েছিল

২০০৭ সালেই এক গবেষণাপত্রে এই ধরণের সংক্রমণ নিয়ে সাবধান করা হয়েছিল

 

amartya lahiri | Published : Mar 25, 2020 2:29 PM IST / Updated: Mar 25 2020, 08:00 PM IST

নভেল করোনাভাইরাস-এর হানায় গোটা বিশ্বের অবস্থা বেহাল। এখনও পর্যন্ত এই বিশ্বব্যপী মহামারীতে ১৯,৬৫০ জনের মৃত্যু হয়েছে। চিনের হুবেই প্রদেশের যে উহান শহর থেকে এই মারাত্মক ভাইরাস সংক্রমনের খবর প্রথম পাওয়া গিয়েছিল, সেই উহান-এর অবস্থা এখন অনেকটাই ভালো। তবে বাকি বিশ্বে এই রোগ ছড়িয়ে পড়েছে। ইউরোপের ইতালি-স্পেন হোক কিংবা মধ্যপ্রাচ্যের ইরান বা আমেরিকা - সব দেশই এখন এই রোগের সঙ্গে সর্বোচ্চ লড়াইতে সামিল। এর মধ্যে জানা গেল আজ থেকে ১২ বছর আগেই এক গবেষণাপত্রে দাবি করা হয়েছিল চিনের যা পরিস্থিতি, তাতে এই দেশকে একটি বিপজ্জনক ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের জন্য 'টাইম বোমা' বলা যেতে পারে।

২০০৭ সালে ক্লিনিকাল মাইক্রোবায়োলজি রিভিউ জার্নাল-এ প্রকাশিত, এক গবেষণাপত্রে গবেষকরা জানিয়েছিলেন, হর্সশু প্রজাতির বাদুড়ের দেহে প্রচুর পরিমণে সার্স-কোভ-জাতীয় ভাইরাস উপস্থিত। আর দক্ষিণ চিনে আবার বাদুড় বা অন্য ধরণের বিদঘুটে স্তন্যপায়ী প্রাণীদের খাওয়ার সংস্কৃতি রয়েছে। এটিই ছিল ওই গবেষকদের উদ্বেগের মূল কারণ। তাঁরা ভয় পেয়েছিলেন চিনে এই স্তন্যপায়ী প্রাণীদের থেকে মানুষের মধ্যে ফের সার্স-এর মতো ভাইরাস ছড়িয়ে পড়তে পারাটা স্রেফ সময়ের অপেক্ষা।

ওই গবেষণাপত্রে বলা হয়েছিল, প্রাণী বা গবেষণাগারগুলি থেকে সিভিয়ার অ্যাকিউট রেসপিরেটরি সিন্ড্রোম বা সার্স এবং অন্যান্য নেল ভাইরাস-এর ফের সংক্রমণের আশঙ্কা রয়েছে। কারণ করোনাভাইরাস পরিবারের অন্তর্ভুক্ত ভাইরাসগুলি, তাদের জেনেটিক গঠন ভেঙে দিলেও ফের তা পুনর্গঠন করতে পারে। নতুন জেনোটাইপ গঠন করলে তা মহামারীর দিকে এগোতে পারে। তাই এই ভাইরাস সংক্রমণ মোকাবিলার জন্য আগে থেকে প্রস্তুতি নিতে হবে। এই প্রস্তুতির প্রয়োজনীয়তা-কে উপেক্ষা করা উচিত নয় বলে ওই গবেষণাপত্রে সতর্ক করা হয়েছিল।

২০০৩ সালে চিনে সিভিয়ার অ্যাকিউট রেসপিরেটরি সিন্ড্রোম বা সার্স নামে আরও একটি শ্বাসযন্ত্রকে বিকল করে দেওয়া ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঘটেছিল। সেইবার ভাইরাসটির বিশ্বব্যাপী প্রাদুর্ভাবে ৮,০০০ জনেরও বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছিলেন, এবং প্রায় ৮০০ মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। সেই সময় সংক্রমণ প্রতিরোধে অনেক ব্যবস্থা নেওয়ার আলোচনা হয়েছিল বিশ্বজুড়ে। কিন্তু, তারপর ১৭ বছর কেটে গিয়েছে। মানুষ, করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের ভয় অনেকটাই ভুলে গিয়েছিল। এবার একেবারে জোর ধাক্কা দিল নতুন করোনাভাইরাসটি।  

প্রথম প্রথম ভাবা হচ্ছিল এই নতুন করোনাভাইরাস-টি অর্থাৎ সার্স-কোভ-২ সম্ভবত সার্স-এর থেকে কম শক্তিশালী। কিন্তু, পরবর্তী সময়ে দেখা গিয়েছে, ২০০৩ সালের সার্স-এর প্রাদুর্ভাবকে কোভিড -১৯ অনেক পিছনে ফেলে দিয়েছে। এখন এই গবেষণাপত্র সামনে আসার পর অনেকেই আক্ষেপ করছেন, যদি সেই সময় একে গুরুত্ব দেওয়া হতো।

 

Share this article
click me!