বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিশেষজ্ঞ আরও জানিয়েছেন, ভারাইরাসটি নতুন নতুন রূপের সূচনা হচ্ছে। গোটা ইউরোপ শীতের মরশুমে করোনাভাইরাসের সঙ্গে লড়াই করছে।
ধীরে ধীরে শক্তি হারাচ্ছে করোনাভাইরাস (Coronavirus)। আগামী বছর এটির শক্তি অনেকটাই কমে যাবে। থেকে যাবে আরও পাঁচটা সাধারণ রোগের মতই। কিন্তু এই গতিপথ থেকে যে কোনও সময়ই সরে যেতে পারে কোভিড মহামারি (Covid 19) )। যে কোনও সময়ই তা আবারও ভয়ঙ্কর হয়ে যেতে পারে। পুরো পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে জরুরি কোভিড ১৯এর টিকার বৈষম্য (vaccine inequality) দূর করা। তা না করা হয় তারও গোটা বিশ্বের সামনে আরও বড় বিপদ অপেক্ষা করে রয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) কোভিড সংকটের শীর্ষ বিশেষজ্ঞ মারিয়া ভ্যান কেরখোভ সম্প্রতি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এই কথাই বলেছেন। তিনি বলেছেন, 'মহামারির গতিপথ এখন আমাদের হাতেই রয়েছেন।'
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিশেষজ্ঞ আরও জানিয়েছেন, ভারাইরাসটি নতুন নতুন রূপের সূচনা হচ্ছে। গোটা ইউরোপ শীতের মরশুমে করোনাভাইরাসের সঙ্গে লড়াই করছে। তাতে দেশগুলি অনেকটাই সফল হয়েছে। নিরাপজ ও কার্যকর ভ্যাকসিনও হাতে রয়েছে। কোভিড মোকাবিলায় নতুন চিকিৎসা ব্যবস্থারও সন্ধান পাওয়া গেছে। কিন্তু ভ্যাকসিনের বৈষম্য সবকিছুই বদলে দিতে পারে বলেও আশঙ্কা করেছেন তিনি। সাবধানতা আর টিকাকরণেই পারে কোভিড মহামারির হাত থেকে দ্রুত নিষ্কৃতী দিতে।
তিনি আরও জানিছেন আগামী বছর অর্থাৎ ২০২২ সালে গোটা বিশ্বই করোনাভাইরাসকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে। এটি আগও করা যেত । 'কিন্তু বিশ্ববাসীর ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা না থাকায় তা সম্ভব হয়নি।' তিনি আরও বলেছেন টিকা আবিষ্কারের পর থেকে এখনও পর্যন্ত গোটা বিশ্বে ৭.৫ বিলিয়লেরও বেশি ডোজ দেওয়া হয়েছে। আগামী বছর জুনের মধ্যে ২৪ বিলিয়ন টিকার ডোজ তৈরি হবে। যা গোটা বিশ্বের মানুষকে টিকা দিতে যথেষ্ট। কিন্তু এখনও বিশ্বের একটা বিশেষ অংশ টিকা পায়নি। যা নিয়ে উদ্ধেগ প্রকাশ করেছেন তিনি। দরিদ্র দেশগুলিতে টিকার মারাত্মক অভাব রয়েছে। সেখানে দ্রুত টিকা কর্মসূচি চালু করা গেলেই বিশ্ব করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থেকে মুক্তি পাবে বলেও আশা প্রকাশ করেছেন তিনি।
Parag Agrawal: টুইটারের নতুন CEO পরাগ আগরওয়াল, এক নজর বোম্বে IIT-র ছাত্রের ঝকঝকে কর্মজীবনে
Omicron: ওমিক্রন কি করোনা মহামারির শেষ ধাপ, প্রশ্ন তুলে দিলেন বিশেষজ্ঞরা
Parliament: ১২ সাংসদের সাসপেনশন প্রত্যাহারের দাবি, এক জোট হয়ে বিক্ষোভ বিরোধীদের
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে টিকাই পারে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে। কারণ দেখা গেছে ডেল্টার মত রূপের বিরুদ্ধেও টিকা কার্যকর। করোনাকে দুর্বল করতে তাই টিকাকরণ গুরুত্বপূর্ণ। বিভিন্ন তথ্য পরিসংখ্যন অনুযায়ী এখনও পর্যন্ত করোনাভাইরাসে মৃত্যু হয়েছে ৫.১ মিলিয়ন মানুষরে। যদিও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে মৃত্যুর প্রকৃত সংখ্যা আরও অনেক বেশি। এখনও পর্যন্ত সবথেকে বেশি মৃত্যু হয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে।
চিন থেকে করোনাভাইরাস প্রথম ছড়িয়ে পড়ে। তবে মহামারির কেন্দ্রস্থলে পরিণত হয় ইউরোপ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে গোটা বিশ্বই লকডাউনের পথে হাঁটে। দুবছর হতে চলল এখনও পরিস্থিতি সম্পূর্ণ স্বাভাবিক নয়। এখনও বেশ কয়েকটি দেশে সংক্রমণ বাড়ছে। স্বাভাবিক হয়নি আন্তর্জাতিক উড়ান পরিষেবা। এই অবস্থায় বিশেষজ্ঞদের কথায় আগামী বছরই শেষ হয়ে যাবে করোনার সংক্রমণ। তবে তাঁদের কথায় কোভিড সম্পূর্ণ নির্মূল হয়ে যাবে না। এটি নিয়ন্ত্রণ স্থানীয় রোগে পরিণত হবে। আগামী দিনে এটি ফ্লু বা ভাইরাস রোগের চেহারা নেবে বলেও জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। এটি মানুষের জীবনের অংশ হিসেবেই থেকে যাবে। তবে টিকাই পারে এই রোগের সংক্রমণ থেকে বাঁচাতে।
কিন্তু কোভিড ভ্যাক্সিনের অ্যাক্সেসে বৈষম্য এটি বড় চ্যালেঞ্জ। এখনও পর্যন্ত হাতে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী উচ্চ আয়ের দেশগুলিতে প্রায় ৬৫ শতাংশ মানুষকে টিকা দেওয়া হয়েছে। সেখানে নিম্ন আয়ের দেশগুলির টিকাকরণ মাত্র সাত শতাংশেই থেকে রয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কথায় প্রত্যেকে টিনা না পাওয়ার আগে বিশ্বের কোনও মানুষই সুরক্ষিত হতে পারে না। টিকার এই বৈষম্য আগামি দিনে আরও বড় বিপদ ডেকে আনেতে পারে বলেও সতর্ক করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।