এশিয়া কাপের ফাইনালে (Asia Cup 2022 Final) দুরন্ত শ্রীলঙ্কা। পাকিস্তানকে ২৩ রানে হারিয়ে ষষ্ঠবার ট্রফি জিতল লঙ্কান লায়ন্সরা (Pakistan vs Sri Lanka)। ম্যাচে প্রথমে ব্য়াট করে ১৭০ রান করে শ্রীলঙ্কা। জবাবে ১৪৭ রানে অলআউট পাকিস্তান। ১৫ তম এশিয়া কাপের ফাইনারে শেষে জেনে নিন ১৯৮৪-২০২২ পর্যন্ত ১৫টি ফাইনালের ফল।
শেষ হল ১৫ তম এশিয়া কাপ। ২৭ অগাস্ট শুরু হয়েছিল প্রতিযোগিতা। ফাইনাল হল ১১ সেপ্টেম্বর। বিগত ১৪ দিনে একাধিক হাড্ডাহাড্ডা লড়াইয়ের পর অবশেষে ফের একবার এশিয়া সেরার মুকুট জিতে নিল শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট দল। এই নিয়ে ষষ্ঠবার চ্যাম্পিয়ন হল দ্বীপ রাষ্ট্র। এশিয়া কাপের ইতিহাসে এখনও পর্যন্ত সব থেকে বেশি ৭ বার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ভারতীয় ক্রিকেট দল। ২ বার জিতেছে শ্রীলঙ্ক। এক ঝলকে দেখে নিন এবার নিয়ে এশিয়া কাপের ১৫টি ফাইনালের ফলাফল।
১৫. এশিয়া কাপ ২০২২-
১৫ তম এশিয়া কাপ জিতল শ্রীলঙ্কা। ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৭০ রান করে শ্রীলঙ্কা। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৭১ রানের ইনিস খেলেন ভানুকা রাজাপক্ষে। পাকিস্তানের হয়ে সর্বোচ্চ ৩টি উইকেট নেন হ্যারিস রউফ। রান তাড়া করতে নেমে ২০ ওভারে ১৪৭ রানে অলআউট হয়ে যায় পাকিস্তান। মহম্মদ রিজওয়ান সবথেকে বেশি ৫৫ রান করেন। শ্রীলঙ্কার হয়ে সর্বোচ্চ ৪টি উইকেট নেন প্রমোদ মদুসান। ২৩ রানে ম্যাচ জেতে শ্রীলঙ্কা।
১৪. এশিয়া কাপ ২০১৮-
২০১৮ সালে এশিয়া কাপের আসর বসেছিল আবর আমিরশাহিততে। মোট ৬ দল অংশ নেয় এই প্রতিযোগিতায়। তৃতীয়বারের মত ফাইনালে উঠেও কাপ জিততে পারেনি বাংলাদেশ। ফাইনালে বাংলাদেশকে হারিয়ে সপ্তমবারের মত চ্যাম্পিয়ন হয় টিম ইন্ডিয়া। ফাইনালে ২২২ রান করে বাংলাদেশ। রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে ৩ উইকেটে জেতে ভারত।
১৩. এশিয়া কাপ ২০১৬-
২০১৬ টানা তৃতীয় ও পঞ্চম আসর বাংলাদেশে। প্রথমবারের মত এশিয়া কাপ হয় টি-টুয়েন্টি ফরম্যাটে। এবারও ফাইনালে যায় বাংলাদেশ। বৃষ্টিবিঘ্নিত ফাইনাল হয় ১৫ ওভারের৷ বাংলাদেশ ১২০ রান করলে ভারত ৭ বল বাকি থাকতে ৮ উইকেটে সহজেই ম্যাচ জিতে নেয়। চ্যাম্পিয়ন হয় ষষ্ঠ বারের মত।
১২. এশিয়া কাপ ২০১৪-
২০১৪ তে টানা দ্বিতীয় ও চতুর্থ বারের মত এশিয়া কাপের আসর বসে বাংলাদেশে৷ এই এশিয়া কাপে প্রথম বারের মত অংশ নিয়েই বাংলাদেশকে হারিয়েছিল আফগানিস্তান। আর ফাইনালে পাকিস্তান ২৬০ রান করলে তাদের ৫ উইকেটে হারিয়ে পঞ্চম বারের মত চ্যাম্পিয়ন হয় শ্রীলঙ্কা।
১১. এশিয়া কাপ ২০১২-
২০১২ এশিয়া কাপে প্রথমবারের জন্য ফাইনালে ওঠে বাংলাদেশ। প্রতিপক্ষ ছিল পাকিস্তান। সেই ফাইনাল বাংলাদেশের কাছে আজও ক্ষত হয়ে রয়ে গিয়েছে। কারণ ফাইনালে মাত্র ২ রানের জন্য হারতে হয়েছিল বাংলাদেশকে। পাকিস্তানের ২৩৬ রানের জবাবে বাংলাদেশ করে ২৩৪।
১০. এশিয়া কাপ ২০১০-
২০১০ এশিয়া কাপের দশম আসর। এই আসর আবার হয় চার দলের। ফাইনালে ভারতের ২৬৮ রানের জবাবে ১৮৭ রানে অল আউট হয় শ্রীলঙ্কা। ফলে ৮১ রানে হারিয়ে পঞ্চম বারের মত কাপ জেতে ভারত। ফাইনালে ৬৬ রান করে ম্যান অব দি ম্যাচ হন দীনেশ কার্তিক।
৯. এশিয়া কাপ ২০০৮-
২০০৮ এশিয়া কাপের নবম আসর। প্রথম বারের মত অনুষ্ঠিত হয় পাকিস্তানে। এই আসরেও অংশ নেয় ৬ দল। ২০০৮ এশিয়া কাপের ফাইনালে ওঠে ভারত ও শ্রীলঙ্কা। ফাইনালে জয়সুরিয়ার সেঞ্চুরিতে ২৭৩ রান করে শ্রীলঙ্কা। জবাবে অজন্তা মেন্ডিসের অসাধারণ স্পেলে ১৭৩ রানে অল আউট হয় ভারত। ফলে টানা দ্বিতীয় ও চতুর্থবারের মত চ্যাম্পিয়ন হয় শ্রীলঙ্কা।
৮. এশিয়া কাপ ২০০৪-
২০০৪ এ এশিয়া কাপের অষ্টম আসর বসে শ্রীলঙ্কায়৷ প্রথম বারের মত এই আসরে অংশ নেয় ৬টি দল৷ বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, হংকং ও আরব আমিরশাহি। সেবারও এশিয়া কাপের ফাইনালের উঠেছিল ভারত ও শ্রীলঙ্কা। শ্রীলঙ্কার ২২৮ রানের জবাবে ভারত করেছিল ২০৩ রান। ৫ রানে ম্যাচ জিতে চ্যাম্পিয়ন হয় শ্রীলঙ্কা।
৭. এশিয়া কাপ ২০০০-
২০০০ সালে দ্বিতীয় বারের মত এশিয়া কাপের আসর বসে বাংলাদেশে। যথারীতি অংশ নেয় ৪ দল। এই আসরে প্রথমবার ফাইনালের আগেই বাদ পড়ে ভারত। ফাইনাল হয় পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার মধ্যে। ফাইনালে ২৭৭ রান করে পাকিস্তান। ২৩৮ রানে অল আউট হয় শ্রীলঙ্কা। ৩৯ রানের জিতে প্রথম বারের মত এশিয়া কাপ জেতে পাকিস্তান।
৬. এশিয়া কাপ ১৯৯৭-
১৯৯৭ সালে এশিয়া কাপের ষষ্ঠ আসর অনুষ্ঠিত হয় শ্রীলঙ্কায়। এই টুর্নামেন্টে অংশ নেয় ৪ দল। টানা চতুর্থ টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলে ভারত ও শ্রীলঙ্কা৷ তবে এবার ঘরের মাঠে আগের তিন আসরের ফাইনালের হারের শোধ নেয় শ্রীলঙ্কা। ফাইনালে ভারতের ২৩৯ রানের টার্গেট ২ উইকেট হারিয়ে তুলে নেয়ে দ্বীপ রাষ্ট্র।
৫. এশিয়া কাপ ১৯৯৫-
১৯৯৫ সালে এশিয়া কাপের পঞ্চম আসর বসে আরব আমিরশাহিতে। ওই আসরে অংশ নেয় চার দল। ফাইনালে শ্রীলঙ্কার ২৩০ রান করে। ৮ উইকেট ম্যাত জিতে এশিয়া কাপ জয়েক হ্যাটট্রিক করে ভারত। মোট চতুর্থবারের মত চ্যাম্পিয়ন হয় টিম ইন্ডিয়া।
৪. এশিয়া কাপ ১৯৯০-৯১-
১৯৯০-৯১ সালে ভারতে বসে এশিয়া কাপের আসর৷ ভারতের সাথে খারাপ রাজনৈতিক সম্পর্কের কারণে টুর্নামেন্ট পাকিস্তান খেলেনি। ফলে ৩ দলের হয় প্রতিযোগিতা। ফাইনালে মুখোমুখি হয় ভারত ও শ্রীলঙ্কা। ফাইনালে প্রথমে ব্যাট করে শ্রীলঙ্কা ২০৪ রান করে শ্রীলঙ্কা। ৭ উইকেটের সহজ জয় তুলে নেয় টিম ইন্ডিয়া৷ ফলে টানা দ্বিতীয় এবং তৃতীয় বারের মত চ্যাম্পিয়ন হয় ভারত।
৩. এশিয়া কাপ ১৯৮৮-
১৯৮৮ সালে বাংলাদেশে বসে এশিয়া কাপের চতুর্থ আসর। প্রথম বারের মত এশিয়াকাপে অংশ নেয় চার দল। বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা। রাউন্ড রবিন টুর্নামেন্টের ফাইনালে শ্রীলঙ্কা মাত্র ১৭৬ রান করে। ৬ উইকেটে দ্বীপা রাষ্ট্রকে হারিয়ে দ্বিতীয় বারের মত এশিয়া কাপ জেতে ভারত।
২. এশিয়া কাপ ১৯৮৬-
এশিয়া কাপের দ্বিতীয় আসর ১৯৮৬ সালে বসে শ্রীলঙ্কায়। প্রথমবার এশিয়া কাপে অংশ নেয় বাংলাদেশ। তবে শ্রীলঙ্কার সাথে ক্রিকেটীয় সম্পর্ক খারাপ থাকায় টুর্নামেন্ট বয়কট করে ভারত৷ ফলে টুর্নামেন্ট হয় তিন দলের রাউন্ড রবিন পদ্ধতিতে। এই আসরে ফাইনাল ছিল। ফাইনালে পাকিস্তানকে হারিয়ে প্রথম বারের মত চ্যাম্পিয়ন হয় শ্রীলঙ্কা।
১.এশিয়া কাপ ১৯৮৪-
প্রথমবার এশিয়া কাপ আয়োজিত হয় ১৯৮৪ সালে আরব আমিরশাহিতে। সেবার এশিয়া কাপে অংশ নেয় ৩ দল। ভারত, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা। প্রথম এশিয়া কাপে কোন ফাইনাল ছিল না। রাউন্ড রবিন পদ্ধতিতে ভারত তাদের দুটি ম্যাচ জিতে চ্যাম্পিয়ন হয়। শ্রীলঙ্কা ১টি ম্যাচ জিতে রানার্সআপ হয়।
আরও পড়ুনঃফাইনালে পর্যুদস্ত পাকিস্তান, ২৩ রানে ম্যাচ জিতে ষষ্ঠবার এশিয়া সেরা হল শ্রীলঙ্কা
আরও পড়ুনঃশ্রীলঙ্কার সাফল্যের পেছনে কী 'অবদান' রয়েছে ভারতের, জেনে নিন বিস্তারিত