ম্যাঞ্চেস্টার টেস্ট যখন টি টাইমে, তখনও ইংল্যান্ডের জয়ের জন্য ২১৭ রান প্রয়োজন। ক্রিজে ছিলেন জস বাটলার। ওল্ড ট্র্যাফোর্ডের গ্যালারি তখনও আশায় ছিল, বাটলার হয়তো স্টোকসের মত ম্যাচে জেতাতে পারবেন না কিন্ত হারতে দেবেন না দলকে। কিন্তু টি টাইমের পর ছবিটা বদলে যেতে শুরু করল। বাটলার পারলেন না। অস্ট্রেলিয়া চেপে বসতে শুরু করেছে, পরপর দুটো উইকেট তুলে। কিন্তু ইংল্যান্ডের টেল এন্ডাররাও হাল ছাড়ার পাত্র ছিলেন না। শেষ চার উইকেটে ২৩০ বল উইকেটে কাটালেন ইংল্যান্ড বোলাররা। কিন্তু পারলেন না শেষ পর্যন্ত। অস্ট্রেলিয়ার সামনে হার মানতে হল ইংলিশ ক্রিকেটকে। ১৮৫ রানে চতুর্থ টেস্ট জিতে অ্যাসেজ নিজেদের দখলেই রাখল টিম পাইনের দল। একই সঙ্গে পাঁচ টেস্টের সিরিজে অপরাজেয় লিড পেয়ে গেল অজিরা।
চতুর্থ টেস্টে দাপটের সঙ্গেই খেলেছে পাইনের দল। প্রথমে ব্যাটিং করে স্টিভ স্মিথের ব্যাটে ভর করে ৪৯৭ রান করে ব্যাগি গ্রিনরা। জবাবে ৩১০ রানে গুটিয়ে যায় ইংল্যান্ডের ইনিংস। দ্বিতীয় ইনিংসে অস্ট্রেলিয়া ১৮৬ রান করেই ইংল্যান্ডকে ব্যাট করতে পাঠায়,৩৭৩ রানের লক্ষ্য নিয়ে মাঠে নেমে চতুর্থ দিনের শেষেই দুই উইকেট হারিয়ে চাপে পরে যায় জো রুটের দল। পঞ্চম দিনেও সেই চাপ থেকে বেড়িয়ে আসতে পারেনি তারা। প্যাট কামিন্স, জস হ্যাজেলউড, নাথান লায়ন এমনকি পার্ট টাইম বোলার লাবুসানেও উইকেট নিয়ে গেলেন। মাত্র ১৯৭ রানেই থেমে গেল ইংল্যান্ডের ইনিংস। তবে শেষ বেলায় এসে ইংলিশ বোলারদের লড়াইকে বাহবা দিতেই হচ্ছে। অস্ট্রেলিয়ার স্বপ্নের দৌড়ে তারা বারাবার স্পিড ব্রেকারের কাজ করে গেলেন।
ভারত যখন অস্ট্রেলিয়া থেকে সিরিজ জিতে ফিরেছিল, তখন কম সামালোচনা হয়নি টিম পাইনের দলকে নিয়ে। তবে অনেক ক্রিকেট পন্ডিতই বলেছিলেন পাইনের এই দলে স্মিথ ও ওয়ার্নার এলেই ছবিটা বদলে যাবে। কথাটা যে ভুল ছিল না সেটা মানতেই হচ্ছে। বিশ্বকাপে ওয়ার্নার ছিলেন মেজাজে। অ্যাসেজে তাঁর ব্যাট কথা না বললেও স্টিভ স্মিথ যেন কেরিয়ারের সেরা ফর্মে। তিনিই যে দুই দলের মধ্যে পার্থক্য গড়ে দিচ্ছেন। চতুর্থ টেস্টেও ম্যাচ সেরার পুরস্কার নিয়ে পেলেন স্টিভ। ইংল্যান্ডের মাটিতে দাঁড়িয়ে অ্যাসেজ ধরে রাখার মিশন শেষ। এবার অন্য একটা লক্ষ্য। ১৮ বছর আগে শেষবার ইংল্যান্ডের মাটিতে টেস্ট সিরিজ জিতেছিল অস্ট্রেলিয়া। এবার ১৮ বছরের অপেক্ষা অবসানের করাও সুযোগ রয়েছে। শেষ টেস্টে ড্র করলেই ইংল্যান্ড থেকে সিরিজ নিয়ে দেশে ফিরতে পারবে টিম পাইনের দল। সিরিজের শেষ টেস্ট ১২ সেপ্টেম্বর থেকে লন্ডনে।