
বিদায়ী ম্যাচ খেলতে নেমে আবেগ সামলে রাখলেন বরাবরের কৌশলী ঝুলন। দর্শকদের উদ্দেশ্যে বললেন, 'আমি সবসময় নিজের আবেগকে নিয়ন্ত্রণ করে এসেছি। এটাই আমার চরিত্র। কারণ আমি সবসময় আগ্রাসী ক্রিকেট খেলায় বিশ্বাসী। হার্ড ক্রিকেট খেলে মাঠে নিজের সেরা পারফরম্যান্স তুলে ধরাই আমার কাজ। আর সেই কাজটা গত ২০ বছর ধরে করে এসেছি। হরমন, স্মৃতির মতো সতীর্থরা অনেক বছর ধরে আমাকে খুব কাছ থেকে দেখছে। ওরা আমার উত্থান-পতন ও অনেক লড়াইয়ের সঙ্গী।'
CAB আজ ঝুলন গোস্বামীর আন্তর্জাতিক কেরিয়ার উদযাপন করতে তাঁর নামে ইডেন গার্ডেনে একটি স্ট্যান্ডের নামকরণ করার পরিকল্পনা নিয়েছে। ১৭০ জন উদীয়মান মহিলা ক্রিকেটার, সিএবি সদস্য এবং পদাধিকারীদের সামনে দক্ষিণ কলকাতার একটি আইনক্স অডিটোরিয়ামে CAB তাঁর শেষ খেলাটির সম্প্রচারের আয়োজন করেছে।
কেরিয়ারে অগণিত মাইলস্টোন গড়ে তুলেছেন বাংলার মেয়ে ঝুলন গোস্বামী। শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচের আগে ঝুলনের হাতে বিশেষ স্মারক তুলে দেওয়া হয় ভারতের মহিলা দলের তরফ থেকে। টিমের পরাজয়ে কেঁদে ফেললেন অধিনায়ক হরমনপ্রীত কৌর। টসের সময় তিনিই মাঠে নিয়ে আসেন ঝুলনকে। ইংল্যান্ডের অধিনায়ক অ্যামি জোনস এবং হরমনের মাঝে দাঁড়িয়েছিলেন ঝুলন। কোনও কথা বলেননি হরমন। ঝুলনই ধারাভাষ্যকারের সঙ্গে কথা বলেন। হরমনের যে কীর্তি মন জিতে নিয়েছে নেটিজেনদের। ম্যাচ শুরু হওয়ার আগে ঝুলনের হাতে বিশেষ স্মারক তুলে দেওয়া হয়। সেইসময় হাজির ছিল পুরো ভারতীয় দল। ঝুলনের পাশেই দাঁড়িয়েছিলেন হরমন। অঝোরে কেঁদে ফেলেন ভারতীয় দলের অধিনায়ক। সেইসময় 'দিদি'-র মতো হরমনের কাঁধ চাপড়ে দেন ঝুলন। তারপর জড়িয়ে ধরে নিজের বুকে টেনে নেন হরমনকে। সেই ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হল ঝড়ের বেগে।
'এই মাঠে খেলতে নামলেই চোখের সামনে অনেক স্মৃতি ভিড় করে আসে। সবার আগে ২০১৭ সালে সেই বিশ্বকাপ ফাইনালের কথা মনে পড়ে যায়। লড়াই করেও সেই ফাইনাল আমাদের হারতে হয়েছিল। বিশ্বকাপ না জেতার আক্ষেপ কোনওদিন মিটবে না। তবে সেই লর্ডসে যে শেষ ম্যাচ খেলছি। এটাও তো বড় প্রাপ্তি। সবচেয়ে বড় কথা আমরা চলতি সিরিজে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে আছি। এখন লক্ষ্য শেষ ম্যাচ জিতে হোয়াইট ওয়াশ করার। সেটা করতে পারলে আমার কেরিয়ার পূর্ণতা পাবে।' ইডেনে শেষ দিনের ম্যাচ খেলতে এসে স্মৃতিবিজড়িত হয়ে পড়লেন পদ্মশ্রীপ্রাপ্ত ঝুলন গোস্বামী। তাঁর বিদায়ের সাথে অশ্রুসজল হয়ে পড়ল গোটা ইন্ডিয়া টিম।