রান না পাওয়ায় দীর্ঘদিন ধরে সমালোচনার শিকার হতে হয়েছে বিরাট কোহলিকে। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে টি-২০ বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে যাবতীয় সমালোচনার জবাব দিয়ে দিলেন বিরাট।
জীবন এরকমই। যেমন কেড়ে নেয়, তেমনই আবার দু'হাত ভরে দেয়। দক্ষতা ও নিজের উপর ভরসা রাখলে যে কঠিন পরিস্থিতি অতিক্রম করে ফের সাফল্যের রাস্তায় ফিরে আসা যায়, সেটা রবিবাসরীয় মেলবোর্নে ফের প্রমাণ করে দিলেন বিরাট কোহলি। ঠিক এক বছর আগে টি-২০ বিশ্বকাপে তাঁর দল পাকিস্তানের কাছে হেরে গিয়েছিল। যে কোনও বিশ্বকাপে সেই প্রথম পাকিস্তানের কাছে হার ভারতের। সেই ম্যাচেও ভাল খেলেছিলেন ভারতের তৎকালীন অধিনায়ক। কিন্তু দল ১০ উইকেটে হেরে যাওয়ায় রেহাই পাননি বিরাটও। সারা দেশ তাঁকে ছিঁড়ে খেয়েছিল। তারপর জাতীয় দলের অধিনায়কত্বও ছেড়ে দিতে হয়। তিন বছর ধরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট শতরান না পাওয়া নিয়েও কম সমালোচনা হয়নি। দাঁতে দাঁত চেপে সাফল্যের পথে ফেরার জন্য লড়াই চালিয়ে যাচ্ছিলেন বিরাট। অপেক্ষা করছিলেন বড় মঞ্চের। রবিবার মেলবোর্ন সেই মঞ্চ তৈরি করে দিল। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে দল যখন কোণঠাসা, তখনই কথা বলল বিরাটের ব্যাট। তিনি ফের বুঝিয়ে দিলেন, কেন জাতীয় দলে তাঁকে দরকার। হার্দিক পান্ডিয়াকে নিয়ে অসামান্য লড়াই করে ভারতকে জয়ের সরণিতে পৌঁছে দিলেন “কিং কোহলি”। তিনি জয় আসা পর্যন্ত ক্রিজে থাকলেন।
এতদিন যাঁরা দাঁত-নখ বের করে সমালোচনা করছিলেন, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে এই ম্যাচ জেতানো ইনিংসের পর তাঁরাই ফের বিরাট-বন্দনা শুরু করেছেন। এদিনের নায়ক অবশ্য কঠিন সময়ের কথা মনে রেখেছেন। দলকে জেতানোর পর তিনি বললেন, “আমি ভাষা হারিয়ে ফেলেছি। হার্দিকের বিশ্বাস ছিল, আমরা শেষপর্যন্ত ক্রিজে থাকলে দলকে জেতাতে পারব। শাহিন (আফ্রিদি) যখন প্যাভিলিয়নের দিক থেকে বল করা শুরু করল, তখন আমরা ওকে আক্রমণ করার সিদ্ধান্ত নিই। ওদের আরও একজন সেরা বোলার হ্যারিস (রউফ)। আমি ওর বলে দুটো ছক্কা মারি। আমাদের হিসেব সহজ ছিল। মহম্মদ নওয়াজের এক ওভার বাকি ছিল। তাই জানতাম, হ্যারিসকে মারতে পারলেই ওরা ভয় পেয়ে যাবে। ৮ বলে ২৮ থেকে ৬ বলে ১৬ রানে নেমে আসে টার্গেট। আমি নিজের স্বাভাবিক খেলা খেলতে চেয়েছিলাম।”
এটাই কি তাঁর সেরা ইনিংস? বিরাটের জবাব, “মোহালিতে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ইনিংসটাই এতদিন আমার সেরা ইনিংস ছিল। কিন্তু আমি এই ইনিংসটাকে তারও উপরে রাখব। হার্দিক আমাকে সারাক্ষণ উৎসাহ দিয়ে গিয়েছে। দর্শকরাও আমাদের সাহায্য করেছেন। এই সমর্থনের জন্য আমি কৃতজ্ঞ।”
আরও পড়ুন-