আইপিএল ২০২২ (IPL 2022) -এর মেগা ম্য়াচে কলকাতা নাইট রাইডার্স ও লখনউ সুপার জায়ান্টস (KKR vs LSG) দ্বৈরথ। প্রথমে ব্য়াট করে ২১০ রান করল লখনউ। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ১৪০ রান করেন কুইন্টন ডিকক। অধিনায়ক কেএল রাহুল করেন ৬৮ রান। জবাবে দুরন্ত লড়াই করে কেকেআর থামল ২০৮ রানে।
হাইস্কোরিং রুদ্ধশ্বাস ম্য়াচ। লাস্ট ওভার লাস্ট বল থ্রিলার। দুরন্ত লড়াই করেও শেষ রক্ষা হল না কেকেআরের। লখনউ সুপার জায়ান্টসের বিরুদ্ধে ২ রানে ম্য়াচ হেরে আইপিএল ২০২২ অভিযান শেষ হল নাইটদের। তবে ২১১ রানের পাহাড় প্রমাণ রান তাড়া করতে গিয়ে কেকেআরের অদম্য লড়াই মন জয় করে নিল ক্রিকেট প্রেমিদের। ম্য়াচে প্রথমে ব্য়াট করে নির্ধারিত ২০ ওভারে বিনা উইকেট ২১০ রান করে লখনউ সুপার জায়ান্টস। ওপেনিং জুটিতে ২১০ রানের পার্টনারশিফ আইপিএলের ইতিহাসে রেকর্ড। কেকেআরের বোলিং নিয়ে কার্যত ছেলেখেলা করল লখনউয়ের দুই ওপেনার। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ১৪০ রান করেন কুইন্টন ডিকক। অধিনায়ক কেএল রাহুল করেন ৬৮ রান। রান তাড়া করতে নেমে ২০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ২০৮ রান করে কেকেআর। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৫০ রান করেন শ্রেয়স আইয়র। ৪২ রান করে নীতিশ রানা, ৪০ করেন রিঙ্কু সিং ও ৩৬ রান রেন স্যাম বিলিংস। ২ রানে ম্য়াচ জিতে প্লে অফে পৌছে গেল লখনউ।
এদিন টস জিতে ব্যাট করতে নেমে একটু সাবধানী ক্রিকেট খেলেন লখনউ সুপার জায়ান্টসের দুই ওপেনার কেএল রাহুল ও কুইন্টন ডিকক। বেশ কিছু ক্রিকেটীয় চোখ ধাঁধানো শট উপহার দেন তারা। নিজেদের অর্ধশতরানের পার্টনারশিপ পূরণ করেন দুই তারকা। তারপর রানের গতিবেগ বাড়ান। প্রথম ১০ ওভারে কোনও উইকেট নিতে পারেনি কেকেআর। এরপর নিজের অর্ধশতরান পূরণ করেন কুইন্টন ডিকক। নিজেদের শতরানের পার্টনারশিপও পূরণ করেন ডিকক ও রাহুল জুটি। এরপর রানের গতিবেগ আর বাড়িয়ে দেন কেএল রাহুল ও কুইন্টন ডিকক। নিজের অর্ধশতরানও পূরণ করেন রাহুলও। বিশেষ করে ডিকক বেশি আক্রমণাত্মক শট খেলতে থাকেন। কেকেআরের কোনও রণনীতি কাজ করছিল দুই তারকার সামনে। নিজেদের মধ্যে ১৫০ রানের রেকর্ড পার্টনারশিপও পূরণ করেন কুইন্টন ডিকক ও কেএল রাহুল। তারপরই নিজের শতরান পূরণ করেন ডিকক। শেষের দিকে রাহুল ও ডিকক আরও ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠেন। ১৯ তম ওভারে টিম সাউিদর ওভারে একটি ছয় মারেন কেএল রাহল ও ৩টি ছয় মারেন ডিকক। শেষ ওভারে ওপেনিং জুটিতে দুশো রানের পার্টনারশিপ পূরণ করেন রাহুল ও ডিকক। যা আইপিএলের ইতিহাসে প্রথম বার। শেষ পর্যন্ত ২০ ওভারে বিনা উইকেটে ২১০ রানে থামল লখনউ সুপার জায়ান্টস। ১৪০ রানের ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন কুইন্টন ডিকক ও ৬৮ রান করে অপরজিত থাকেন কেএল রাহুল।
রান তাড়া করতে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি কেকেআরের। প্রথম ওভারেই খাতা না খুলে মহসিন খানের বলে আউট হন ভেঙ্কটেশ আইয়র। এরপর এই ম্য়াচে অভিষেক হওয়া অভিজিৎ তোমরও বড় স্কোর করতে পারেননি। ৪ রান করে মহসিন খানের দ্বিতীয় শিকার হন তোমর। এরপর ইনিংসের রাশ ধরেন নীতিশ রানা ও শ্রেয়স আইয়র। চাপের মধ্যেও আক্রমণাত্মক ইনিংস খেলেন রানা ও শ্রেয়স। বেশ কিছু চোখ ধাঁধানো বাউন্ডারি ও ওভার বাউন্ডারি মারেন দুজনে। ঝড়ের গতিতে অর্ধশতরানের পার্টনারশিপও করেন তারা। ৬৫ রানে তৃতীয় উইকেট পড়ে কেকেআরের। ৪২ রান করে মার্কাস স্টয়নিসের বলে আউট হন নীতিশ রানা। এরপর ইনিংস এগিয়ে নিয়ে যান শ্রেয়স আইয়র ও স্যাম বিলিংস। দুজন মিলে দ্রুত গতিতে এগিয়ে নিয়ে যান দলের স্কোর। তখনও জয়ের আশা দেখছিল কেকেআর। অর্ধশতরানের পার্টনারশিপও পূরণ করেন শ্রেয়স ও বিলিংস। নিজের অর্ধশতরানও পূরণ করেন শ্রেয়স আইয়র। ১৩১ রানে পড়ে চতুর্থ উইকেট। ৫০ রান করে মার্কাস স্টয়নিসের বলে আউট হন শ্রেয়স। এরপর সাজঘরে ফেরেন স্যাম বিলিংস। ৩৬ রান করে রবি বিষ্ণোইয়ের বলে আউট হন তিনি। ১৪২ রানে পড়ে পঞ্চম উইকেট। দলের ১৫০ রানের মাথায় ৫ রান করে মহসিন খানের তৃতীয় শিকার হন রাসেল। এরপর অবিশ্বাস্যভাবে ঝোডো ইনিংস খেলে দলকে জয়ের দোরগোড়ায় নিয়ে যান রিঙ্কু সিং ও সুনীল নারিন। একের পর এক বাউন্ডারি ও ওভার বাউন্ডারি মেরে অর্ধশতরানের পার্টনারশিপও পূরণ করেন। শেষ ওভারে জয়ের জন্য দরকার ছিল ২১ রান। ১৮ রান করে কেকেআর। ১৫ বলে ৪০ করে আউট হন রিঙ্কু সিং ও শেষ বলে ৩ রান বাকি থাকার সময় বিগ হিট করতে গিয়ে স্টয়নিসের বলে বোল্ড হন উমেশ যাদব। ২ রানে ম্য়াচ জিতে প্লে অফে কোয়ালিফাই করে গেল কেকেআর। এই জয়ের ফলে লিগ টেবিলের দ্বিতীয় স্থানে উঠে এল লখনউ সুপার জায়ান্টস।