
শারজা আর লো স্কোরিং রুদ্ধশ্বাস ম্যাচ কার্যত একে অপরের পরিপূরক হয়ে উঠেছে। আইসিসি টি ২০ বিশ্বকাপ ২০২১-এ শারজা দেখল আরও একটি লো স্কোরিং লাস্ট ওভার থ্রিলার। যেখানে শ্রীলঙ্কারে ৪ উইকেটে হারিয়ে সুপার ১২ রাউন্ডের তিন ম্যাচের মধ্যে দ্বিতীয় জয় পেল দক্ষিণ আফ্রিকা। হসরাঙ্গার হ্যাটট্রিকও বাঁচাতে পারল না লঙ্কান লায়ন্সদের। অপরদিকে সমসংখ্যক ম্যাচ ২টিতে হেরে সেমি যাওয়ার পথ অনেকটাই কঠিন হল লঙ্কান লাায়ন্সদের। ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করে ১৪২ রান করে দাসুন শানাকার দল। শ্রীলঙ্কার হয়ে সর্বোচ্চ ৭২ রানের ইনিংস খেলেন পাথুম নিসঙ্কা। দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে ৩টি করে উইকেট নেন তাবরেজ সামসি, ডোয়াইন প্রিটোরিয়াস ও ২টি উকেট নেন আনরিখ নকিয়া। রান তাড়া করতে বেমে টেম্বা বাভুমার অধিনায়কোচিত ৪৬ রানের ইনিংস ও ডেভিড মিলার-মার্করাম-রাবাডাদের দলগত প্রচেষ্টাতেই ১ বল বাকি থাকতে জয় পায় প্রোটিয়া ব্রিগেড।
ম্যাচে টস জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা। এদিন ওপেনিংয়ে শুরুটা ভালো হয়নি হয়নি শ্রীলঙ্কার। চতুর্থখ ওভারে দলের ২০ রানের মাথায় প্রথম উইকেট পড়ে তাদের। ৭ রান করে আনরিখ নকিয়ার বলে ব্লোড হয়ে প্যাভেলিয়নে ফেরত যান কপশল পেরেরা। এরপর ইনিংসের রাশ ধরেন অপর অপেনার পাথুম নিসঙ্কা ও চারিথ আসালঙ্কা। দুজনে মিলে একটু ধীর গতিতে হলেও দলের স্কোর বোর্ডকে এগিয়ে নিয়ে যান। বেশ কয়েকটি বাউন্ডারি ও ওভার বাউন্ডারিও মাপেন। কিন্তু দলের ৬১ রানের মাথায় দুর্ভাগ্যবশত ভাঙে এই পার্টনারশিপ। কারণ ২১ রান করে রান আউট হ আসালঙ্কা। এরপর নিসঙ্কা একদিক থেকে ধরে রাখলেও, অপরদিক থেক নিয়মিত ব্যবধানে উইকেট হারাতে থাকে লঙ্কান লায়ন্সরা। শূন্য রানেই তবরেজ সামসীর শিকার হন ভানকা রাজাপকসা। ৩ রান করে অভিষ্কা ফার্নান্ডোও সামসীর বলে আউট হন। ওয়ানিন্দু হাসরাঙ্গাকেও প্যাভেলিয়নে রাস্তা দেখান সামসী। ৪ করেন হাসারঙ্গা।
৯১ রানের মধ্যে ৫ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় শ্রীলঙ্কা। তবে পাথুম নিসঙ্কা একদিক থেকে নিজের অনবদ্য ইনিমংস চালিয়ে যাচ্ছিলেন। তাকে কিছুটা সঙ্গ দেওয়ার চেষটা করলেও, তা বেশিক্ষণ পারেননি লঙ্কান অধিনায়ক দাসুন সানাকা। প্রিটোরিয়াসের বলে ১১ রান করে আউট হন তিনি। উল্টোদিকে নিজের অর্ধশতরান পূরণ করার পাশাপাশি শ্রীলঙ্কার ইনিংসকে কার্যত একাই টানছিলেন নিসঙ্কা। ১৩১ রানে পরপর দুটি উইকে হারায় শ্রীলঙ্কা। ৫ রান করে চামিকা করুণাকত্নে প্রিটোরিয়াসের বলে আউট হন। নিসঙ্কারও শিকার করেন তিনি। ৫৮ বলে ৭২ রানের অনবদ্য ইনিমস খেলেন পাথুম নিসঙ্কা। ৬টি চার ও ৩টি ছয়ে সাজানো তার ইনিংস। শেষ ওভারের শেষ দুই বলেও পরপর দুটি উইকেট পড়ে সানাকার দলের। ৩ রান করে নকিয়ার বলে বোল্ড হন চামিরা। অপরদিকে, শেষ বলে রান আউট হন লাহিরু কুমারা। দক্ষিণ আফ্রিকার জয়ের টার্গেট ছিল ১৪৩ রান।
রান তাড়া করতে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি দক্ষিণ আফ্রিকার। ওপেন করতে নেমে ২৫ রানের পার্টনারশিপ করেন কুইন্টন ডি কক ও রেজা হেন্ডরিকস। কিন্তু তারপরই ১ রানের মধ্যে ২ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় প্রোটিয়া ব্রিগেড। ১১ রান করার পর আউট দুশমন্থা চামিরার বলে আউট হন হেন্ডরিকস। ১২ রান করে চামিরার শিকার হন কুইন্টন ডি কক। এরপর টেম্বা বাভুমা ও ভ্যান ডার ডুসেন দলের ইনিংসের রাশ কিছুটা ধরার চোষ্টা করলেও তা বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। ৪৯ রানে তৃতীয় উইকেট পড়ে দক্ষিণ আফ্রিকার। ১৬ রান করে রান আউট হন ডুসেন। ৩ উইকেট হারিয়ে অনেকটাই চাপে পড়ে গিয়েছিল প্রোটিয়া ব্যাটিং লাইনআপ।
আরও পড়ুনঃT20 WC 2021 - 'মেরুদন্ডহীনদের দল', কিউই ম্যাচের আগে রেগে বোম কোহলি, নিশানায় কারা
আরও পড়ুনঃব্যাট হাতে একেবারে নগ্ন, এই হট ইংরেজ মহিলা ক্রিকেটারই এবার ক্রিস গেইলদের কোচ, দেখুন
আরও পড়ুনঃCristiano Ronaldo-জর্জিনার গর্ভে রোনাল্ডোর যমজ সন্তান, ৬ সন্তানের পিতা হতে চলেছেন CR7
এরপর ইনিংসের রাশ ধরেন টেম্বা বাভুমা ও আইডেন মার্করাম। ৪৭ রানের পার্টনারশিপ করেন দুজনে। খেলেন বেশ কিছু অনবদ্য শট। ৯৬ রানে চতুর্থ উইকেটের পতন হয়। ১৯ রান করে হাসারঙ্গার শিকার হন তিনি। ১১২ রানে আউট হন বাভুমা। ৪৬ রান করে হসারঙ্গার শিকার হন তিনি। খাতা না খুলেই প্রিটোরিয়াস আউট হন ও হসরাঙ্গা নিজের অর্ধশতরান পূরণ করেন। শেষে ব্য়াট হাতে ছোট হলেও বিধ্বংসী ও ম্যাচ উইনিং ইনিংস খেলেন ডেভিড মিলার ও কাগিসো রাবাডা। শেষ ওভারে ১৬ রান বাকি ছিল দক্ষিণ আফ্রিকার। ১ বল বাকি থাকতেই জয় পেয়ে যায় প্রোটিয়ারা। ১৩ বলে ২৩ রান করে অপরাজিত থাকেন মিলার ও ৭ বলে ১৩ রান করে নট আউট থাকেন রাবাডা।