সাবেকিয়ানা থেকে সামাজিকবার্তা, এক ঝলকে সল্টলেক ও লেকটাউনের সেরা পুজোগুলি
দুর্গাপুজো (Durga Puja) প্রায় শেষের দিকেই। পুজো মণ্ডপে (Puja Pandal) এখন উপচে পড়া ভিড়। সাধারণ মানুষের ঢল নেমেছে রাস্তাতেও। রাজ্যের আগের থেকে করোনা পরিস্থিতির (Corona Situation) গ্রাফ অনেকটাই নিম্নমুখী। আর তার মধ্যেই পুজোর আয়োজন করা হয়েছে। হাইকোর্ট (High Court) এবারও পুজো প্যান্ডেলে নো এন্টি সহ একাধিক নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। তবু দোকান খুলতে পেরে কোথাও যেনও পুজোর সুরকে ছাপিয়ে যায়নি বিক্রেতার চাপা কান্না। কলকাতার একাধিক বিগ বাজেটের (Big Budget) পুজোর থিম (Puja Theme) হয়েছে একেবারে নজরকাড়া। বাদ যায়নি সল্টলেক (Salt Lake) ও লেকটাউনের (Lake Town) একাধিক পুজো। এক ঝলকে দেখে নেওয়া যাক সেখানকার কয়েকটি সেরা পুজো।
এফডি ব্লক
সল্টলেক এফডি ব্লকের এবারের থিম গালিভারস ট্রাভেলস। বিশাল বড় গালিভারের মূর্তি এবং সেই সঙ্গে ছোট ছোট লিলিপুটদের মূর্তি তৈরি করে প্যান্ডেল সাজানো হয়েছে। শিল্পী মিন্টু পাল।
দত্তাবাদ
সল্টলেকের দত্তাবাদের বাঘপাড়া সর্বজনীনের পুজোর এবারের ভাবনা 'দুয়ারে মা'। রাজ্য সরকারের দুয়ারে সরকার প্রকল্পের অনুকরণে সেজে উঠেছে এই প্যান্ডেল। মা দুর্গার আদলে সেজে এক তরুণীকে দত্তাবাদ বস্তি এলাকায় ঘুরতে দেখা গিয়েছে।
একে ব্লক
এই প্যান্ডেল একেবারে অন্যরকম। কাঠের সিংহাসনের আদলে মণ্ডপ তৈরি করা হয়েছে। মণ্ডপের তিনদিকই খোলা রয়েছে। করোনা পরিস্থিতির মধ্যে পুজোর আয়োজন করার জন্য হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে মণ্ডপের তিনদিক খোলা রাখা হয়েছে। মণ্ডপও আকারে বেশ বড়।
ইসি ব্লক
এই মণ্ডপকে এমনভাবে সাজানো হয়েছে যেন দেখলে মনে হবে কোনও বাক্সের মধ্যে মূর্তিগুলি রাখা হয়েছে। ৪৫০টি বাক্স ব্যবহার করা হয়েছে। বাক্সগুলি মোট পাঁচ ধরনের। সেই বাক্সগুলিকে আটকে রাখা হয়েছে দেওয়ালে। আর বাক্সের উপর মাস্ক পরা মুখের ছবি দেওয়া রয়েছে। এই থিম প্রসঙ্গে প্রবীর সাহা বলেন, "একটা বছর ধরে আমরা বাড়ির মধ্যেই আটকে রয়েছি। আর বাক্সের মধ্যে মাস্ক পরা মুখ দেওয়া হয়েছে কারণ আমরা সাধারণ মানুষকে মাস্ক পরা নিয়ে সতর্ক করছি।"
বলাকা আবাসন
সমুদ্রমন্থনে ওঠা বিষ পান করে ভগবান শিব যেভাবে সবাইকে রক্ষা করেছিলেন ঠিক তেমনভাবেই করোনার হাত থেকে তিনি আবার সাধারণ মানুষকে রক্ষা করুন। মণ্ডপে এই থিম তৈরি করার মাধ্যমে এই প্রার্থনাই করেছেন উদ্যোক্তারা। এই থিমটি তৈরি করেছেন উত্তম মণ্ডল।
এডি ব্লক
করোনা পরিস্থিতির মধ্যে সমস্যায় পড়েছেন বহু মানুষ। তার সঙ্গে শিল্পীদের আরও সমস্যার মুখে পড়তে হয়েছে। সেই কারণে শিল্পী শঙ্কর পাল এই ধরনের একটি মণ্ডপ তৈরি করেছেন যেখানে শিল্পীদের হাতের তৈরি বিভিন্ন জিনিস তুলে ধরা হয়েছে। মধুবনী কাজ, কাঠের তৈরি পেঁচা, বাঁশের তৈরি বিভিন্ন জিনিসকে মণ্ডপে তুলে ধরা হয়েছে। যা মণ্ডপকে আরও সুন্দর করে তুলেছে।
এজে ব্লক
সাদা ও হলুদ দিয়ে একটি বড় ঠাকুরদালান তুলে ধরা হয়েছে। শিল্পী সনাতন পাল দেবীর ছিমছাম ঐতিহ্যবাহী মুর্তি তুলে ধরেছেন। তিনি জানিয়েছেন, এবার তাঁরা এমন থিম বেছে নিতে চেয়েছিলেন যা অত্যন্ত সুন্দর হবে আর করোনা পরিস্থিতির মধ্যে সাধারণ মানুষ সামাজিক দূরত্ববিধি মেনে মণ্ডপে প্রবেশ করতে পারবে।
আরও পড়ুন- প্রথা মেনে সাঁকরাইলের পাল বাড়িতে অষ্টমীর বিকেলে হল সিঁদুর খেলা
বিজে ব্লক
প্রাসাদের আদলে এই মণ্ডপ তৈরি করা হয়েছে। যেখানে প্রচুর পরিমাণে জায়গা রয়েছে। ফলে সামাজিক দুরত্ব মানতে কোনও সমস্যা হবে না। প্রতিমা ২০ ফুট লম্বা। আর এই প্রতিমা তৈরি করেছেন প্রদীপ রুদ্রপাল।
এই ব্লক (পার্ট ১)
গত বছরের মতো এবারও করোনা পরিস্থিতির মধ্যে পুজোর আয়োজন করা হয়েছে। আর সেই কারণে মণ্ডপে সাধারণ মানুষের প্রবেশের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে হাইকোর্ট। ফলে মণ্ডপটিকে আর্ট গ্যালারির আদলে সাজিয়ে তোলা হয়েছে। থিমের নাম দেওয়া হয়েছে 'নগর দর্পণ'। বিভিন্ন অনুষ্ঠানকে শিল্পের মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে এই মণ্ডপে।
আরও পড়ুন- দক্ষিণ কলকাতার সেরা ২০ দুর্গা পুজো, তাক লাগাবে সাবেকিয়ানা আর সমকালীনের ফিউশন
শ্রীভূমি স্পোর্টিং ক্লাব
সবথেকে বেশি আলোচনা হচ্ছে এই মণ্ডপ নিয়ে। দুবাইয়ের বুর্জ খলিফার আদলে তৈরি হয়েছে পুজো মণ্ডপ। আলো থেকে শুরু করে এই মণ্ডপের সজ্জা সবথেকে বেশি আলোচিত হচ্ছে। আসল বুর্জ খলিফার সঙ্গে এই মণ্ডপের কোনও পার্থক্যই নেই বলে জানিয়েছেন বহু মানুষ।