Durga Puja- প্রথা মেনে সাঁকরাইলের পাল বাড়িতে অষ্টমীর বিকেলে হল সিঁদুর খেলা

হাওড়ার সাঁকরাইলের পালবাড়ি। পূর্বপুরুষ চূড়ামণি পাল ছিলেন আন্দুল রাজাদের দেওয়ানী। প্রথমদিকে গঙ্গার একেবারে পাড়ে ছিল তাঁদের বসতবাড়ি। তবে গঙ্গার ভাঙনের ফলে সেই বাড়ি জলে তলিয়ে যায়। তারপরে আন্দুলের রাজাদের তরফে হাওড়া সাঁকরাইলের রাজগঞ্জ-বানিপুর এলাকার তিনটি গ্রাম নিঃশুল্ক শর্তে প্রদান করা হয় চূড়ামণি পালকে।

Asianet News Bangla | Published : Oct 13, 2021 2:58 PM IST

২০০ বছর ধরে চলে আসছে এই রীতি। আর সেই নিয়ম মেনেই আজও ঐতিহ্যবাহী হাওড়ার সাঁকরাইলের পাল বাড়িতে সিঁদুর খেলা হল। প্রতি বছর অষ্টমীতে এই বাড়িতে সিঁদুর খেলায় মেতে ওঠেন সবাই। এবারও তার অন্যথা হল না। সন্ধের দিকেই দেবী দুর্গার সামনে জড়ো হন মহিলারা। এরপর একে অপরকে সিঁদুর মাখিয়ে দেন তাঁরা। আর এভাবেই আজও এই বাড়ি জানান দিচ্ছে পুরনো সেই ঐতিহ্যের কথা। বাড়ির আনাচে-কানাচে কান পাতলে শোনা যায় তখনকার দিনের সেই রাজকীয় কাহিনী। 

আরও পড়ুন- 'বাংলায় শান্তি বজায় থাকুক, রাজনৈতিক হিংসা মুছে যাক', অষ্টমীর অঞ্জলি দিয়ে প্রার্থনা সুকান্তর

হাওড়ার সাঁকরাইলের পালবাড়ি। পূর্বপুরুষ চূড়ামণি পাল ছিলেন আন্দুল রাজাদের দেওয়ানী। প্রথমদিকে গঙ্গার একেবারে পাড়ে ছিল তাঁদের বসতবাড়ি। তবে গঙ্গার ভাঙনের ফলে সেই বাড়ি জলে তলিয়ে যায়। তারপরে আন্দুলের রাজাদের তরফে হাওড়া সাঁকরাইলের রাজগঞ্জ-বানিপুর এলাকার তিনটি গ্রাম নিঃশুল্ক শর্তে প্রদান করা হয় চূড়ামণি পালকে। সেখানেই তিনি আনুমানিক ১৮২০ সালে নির্মাণ করেন এই বাড়ি। তারপর থেকেই সেখানে শুরু হয় দুর্গার আরাধনা। তবে নফর চন্দ্র পাল বা এন সি পাল তৎকালীন সময়ে শিবপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ থেকে শিক্ষা অর্জন করে একাধিক ইটভাটা তৈরি করেছিলেন। যা তখনকার দিনে কলকাতার অধিকাংশ স্থাপত্য তৈরির কাজে ব্যবহার করেছে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি। তাঁর আমলে এই পুজো অন্য মাত্রায় পৌঁছায়। প্রথা অনুসারে জন্মাষ্টমীর দিন দেবীর কাঠামো পুজো করে শুরু হয় মূর্তি গড়ার কাজ। মহালয়ার দিন মঙ্গল ঘট স্থাপন করে সূচনা হয় পুজোর। আর ষষ্ঠীতে দেবীর বোধন থেকে শুরু হয় বৈষ্ণব মতে পুজো। সেই পুজো চলে দশমী পর্যন্ত।

আরও পড়ুন- প্রথম কুমারী হিসেবে ক্ষিরভবানীর মন্দিরে এক মুসলিম মেয়েকে দুর্গা রূপে পুজো করেছিলেন স্বামীজী

আরও পড়ুন- বিশ্ববাংলা থেকে খেলা হবে, হরিশ্চন্দ্রপুরের পুজোমণ্ডপে দশভুজা মমতা

আন্দুল রাজবাড়ির তোপের আওয়াজ শোনার পর শুরু হত ধুনো পোড়ানো। যত রাতই হোক না কেন তা দেখতে ভিড় জমাতেন বহু মানুষ। এই বাড়ির আরেক বৈশিষ্ট্য অষ্টমীর দিন সিঁদুর খেলা। আসলে দশমীকে মা চলে যাওয়ার পর বিষাদের কারণে বাড়ির মহিলারা সিঁদুর খেলতে চান না। সেই পুরোনো ঐতিহ্য আজও মানা হচ্ছে। আর সেই কারণেই আজও অষ্টমীতেই সিঁদুর খেলার আয়োজন করা হয়।  

এই বাড়ি পুজোয় যাতে ভবিষ্যতে কখনও কোনও সমস্যা না হয় সেই কারণে পূর্বপুরুষরাই হাওড়া আন্দুলে একটি বিশাল জমি দেবোত্তর সম্পত্তি করে ট্রাস্ট তৈরি করে দিয়েছিলেন। সেই ট্রাস্টই দুর্গাপুজোর যাবতীয় খবর বহন করে। দুর্গাপুজোর পাশাপাশি রথযাত্রা ও বাড়ির নিত্যদিনের পুজোর খরচও বহন করা হয়। কর্মসূত্রে এখন পরিবারের অধিকাংশ সদস্যই থাকেন অন্যত্র। তবে যেখানেই থাকুন না কেন পুজোর কটাদিন তাঁরা সবাই চলে আসেন ওই বাড়িতে। আর তাই পুজোর কটাদিন গমগম করে ওই সুবিশাল অট্টালিকা।  

Share this article
click me!