নবমীর যজ্ঞের কলা খেয়ে সন্তান লাভ করেন নিঃসন্তান নারী, বীরভূমের নাকপুরে ১৭৬ বছরের দুর্গাপুজো

Published : Sep 21, 2022, 06:58 PM ISTUpdated : Sep 21, 2022, 07:11 PM IST
নবমীর যজ্ঞের কলা খেয়ে সন্তান লাভ করেন নিঃসন্তান নারী, বীরভূমের নাকপুরে ১৭৬ বছরের দুর্গাপুজো

সংক্ষিপ্ত

দুর্গাপুজোয় সন্তান লাভ করেছিলেন নিঃসন্তান নারী। সেই পুজোর রীতি মেনেই চলে আসছে বীরভূমের নাকপুর গ্রামের জমিদারদের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত দুর্গাপুজো।

দুর্গাপুজোয় সন্তান লাভ করেছিলেন নিঃসন্তান নারী। সেই পুজোর রীতি মেনেই হয় বীরভূমের নাকপুর গ্রামের জমিদারদের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত দুর্গাপুজো। এখানকার পুজো সম্পর্কে কথিত আছে যে, নবমীর যজ্ঞের কলা খেলে নিঃসন্তান নারী সন্তান লাভ করেন। আনুমানিক ১৭৬ বছর আগে এখানে শুরু হয়েছিল দেবীর আরাধনা। এখনও পর্যন্ত যৌথভাবে পালা করে করে এই পুজো চালিয়ে আসছেন ঘোষ ও রায় পরিবারের সদস্যরা।

সন্ধ্যারতি দিয়ে শুরু হয় মুর্শিদাবাদ সীমান্তে বীরভূমের নাকপুর গ্রামের জমিদারদের প্রতিষ্ঠা করা দুর্গাপুজো। এক সময় পুজোর দায়িত্ব ঘোষ ও রায় পরিবার যৌথভাবে চালিয়ে আসছিল। কিন্তু বছর দশেক থেকে রায় পরিবারও পুজোর দায়িত্ব আলাদা ভাবে কাঁধে তুলে নিয়েছে। দুই পরিবার পালা করে পুজো করে আসছে। এবার পুজোর দায়িত্ব পেয়েছে রায় পরিবার।  পুজো কবে থেকে শুরু হয়েছিল তার দিনক্ষণ এখন আর জানা নেই। তবে আনুমানিক ১৭৫ বছর আগে পুজো শুরু করা হয়েছিল বলে দাবি করেন পুজোর অন্যতম কর্তা সুনীতি কুমার ঘোষ। 

তিনি জানান, এক সময় ঘোষ পরিবার দুর্গাপুজো চালিয়ে এসেছিল। কিন্তু পরিবারের সদস্য শচীনন্দন ঘোষের কোনও পুত্র সন্তান ছিল না। ফলে মেয়ের পরিবার পুজোয় অংশগ্রহণ করেছিল। ফলে ঘোষ ও রায় পরিবারের সদস্যরা এখন যৌথভাবে পুজো চালিয়ে আসছে পালা করে। বছর দশেক ধরে এভাবেই চলে আসছে জমিদার বংশের পুজো। রীতি মেনেই বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হল পুজো। প্রতিদিন সন্ধ্যায় সন্ধ্যারতি এবং ঢাক বাজিয়ে মা দুর্গার আহবান করা হয়। ষষ্ঠীর দিন থেকে রীতি মেনে পুজো শুরু হয়। পুজো চারদিন প্রতিদিন ২০ কেজি করে আতপ চাল, তিন কেজি আটা, ছানার মুন্ডা, নারকেলের নাড়ু ভোগ দেওয়া হয়। সুনীতিবাবু বলেন, “এক সময় চাল, আটা গ্রামের ব্রাহ্মণদের দেওয়া হত। কিন্তু দিন দিন গ্রামে ব্রাহ্মণের সংখ্যা কমতে থাকায় এখন সেই ভোগের নৈবেদ্য কাহার, নাপিত, কোটাল এবং ব্রাহ্মণদের মধ্যে বিতরণ করা হয়ে থাকে। তবে অষ্টমীর সন্ধি পুজোয় গোটা গ্রামের মানুষকে প্রসাদ বিতরণ করা হয়।'

পুজোর বিশেষত্ব অনুযায়ী, নবমীর যজ্ঞের কলা খেলে নিঃসন্তান মহিলা সন্তান ধারণ করতে পারবে। প্রতিবছর এই পুজোয় একজন মহিলা এসে কলা নিয়ে যান। যজ্ঞের কলা পাওয়ার জন্য আগে থেকেই অনেকে নাম লিখিয়ে রাখেন। আগে এলে আগে পাবেন এই ভিত্তিতেই যজ্ঞের কলা দেওয়া হয়। সুনীতিবাবু বলেন, “এক সময় গ্রামে পুজো বলতে আমাদের জমিদার বাড়ির পুজো। ফলে দূরদূরান্তের গ্রাম থেকে মানুষ পুজোয় অংশগ্রহণ করতেন। রাতে ফেরার ব্যবস্থা না থাকায় সকলকে প্রসাদ বিতরণ করা হত। এখনও সেই রীতি চলে আসছে”। তিনি আরও বলেন, “পুজোয় মা দুর্গাকে যে নৈবেদ্য দেওয়া হয় তার মিষ্টি গোঁড়া হয় বাড়িতেই। বাড়ির মহিলারা বেশ কয়েকদিন ধরে সেই রকমারি মিষ্টি তৈরি করেন। এদিন থেকেই কার্যত শুরু হয়ে গেল পুজো।'



আরও পড়ুন-
বেআইনিভাবে চাকরিপ্রাপ্তদের ধরতে জাল বিছাল হাইকোর্ট, সিবিআইকে কড়া নির্দেশ দিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়
রাজধানীতে বীভৎস মৃত্যু! একের পর এক ঘুমন্ত ফুটপাথবাসীকে পিষে দিয়ে চলে গেল দ্রুতগামী ট্রাক
বাংলায় রেকর্ড বৃদ্ধি পেল ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা, দৈনিক সংক্রমণ হাজারের দোরগোড়ায়

PREV
Read more Articles on
click me!

Recommended Stories

Durga Puja 2025: সঙ্ঘাতির 'দ্বৈত দুর্গা' থিমে বাংলার দুর্গা এবং শেরাওয়ালি মাতা, বিষয়টা ঠিক কী?
Durga Puja 2025: দুর্গাপুজোয় চাঙ্গা রাজ্যের অর্থনীতি? ১০-১৫% বৃদ্ধির সম্ভাবনা, আনুমানিক ৪৬,০০০-৫০,০০০ কোটি টাকা