চলতি বছরে ৮৪ তম বর্ষে দারুণ চমক নিয়ে হাজির হয়েছে বাদামতলা আষাঢ় সংঘ। গত দুই বছরের তুলনায় এবছরের দুর্গোৎসবে অন্যরকমের চমক অপেক্ষা করছে দর্শনার্থীদের জন্য। প্রত্যেক বারের মতোই এবারেও নয়া ভাবনা উপস্থাপন করছে বাদামতলা আষাঢ় সংঘ । চলতি বছরে বাদামতলা আষাঢ় সংঘের থিম হলো- 'পদাঙ্ক'।
প্যান্ডেল থেকে ঠাকুর, পুজোর থিম থেকে লাইটিং সবকিছুর প্রস্তুতিই এখন তুঙ্গে। কোন পুজোর কী থিম তা জানতেও মুখিয়ে রয়েছেন সকলেই। কলকাতাতে এখন থিম পুজো নিয়ে রীতিমতো হাড্ডাহাড্ডি টক্কর চলছে। প্রতি বছরই নয়া নয়া থিম নিয়ে হাজির হচ্ছে কলকাতার সব পুজো কমিটি। দেবী দুর্গার আগমনে চারিদিকে যেন সাজো সাজো রব। মহালয়ার দিন থেকেই শুরু হয়ে যায় পুজোর প্রস্তুতি। পিতৃপক্ষের সমাপ্তি এবং দেবীপক্ষের সূচনা দিয়েই দুর্গাপুজোর শুভারম্ভ। ইতিমধ্যেই সাদা কাশফুল জানান দিচ্ছে মা আসছে। ঘরে ফিরছে উমা। গোটা বছর ভর এই দিনটার জন্য মুখিয়ে থাকে বাঙালিরা। ইতিমধ্যে শুরু হয়ে গেছে পুজোর কাউন্টডাউন।
বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বনের মধ্যে শ্রেষ্ঠ উৎসব হল দুর্গাপুজো। পুজো নিয়ে বরাবরই বাঙালির একটা টানটান উত্তেজনা রয়েছে।হাতে আর মাত্র কয়েকদিন। সারা শহর আবার সেজে উঠবে আলোয়। এই বছর দুর্গাপুজো যেন বাঙালির কাছে একটু বেশি বাড়তি পাওনা। কারণ বাঙালির সবচেয়ে বড় উৎসব দুর্গাপুজো ইউনেস্কোর হেরিটেজ তকমা পেয়েছে। তা যেন বড় গর্বের ও আনন্দের বটে। করোনাকালে মহাসঙ্কট কাটিয়ে যেন ফের ছন্দে ফিরেছে আট থেকে অষ্টাদশী। পুজোর আনন্দে খুশির রেশ বাঙালির মনে। চলতি বছরে ৮৪ তম বর্ষে দারুণ চমক নিয়ে হাজির হয়েছে বাদামতলা আষাঢ় সংঘ। গত দুই বছরের তুলনায় এবছরের দুর্গোৎসবে অন্যরকমের চমক অপেক্ষা করছে দর্শনার্থীদের জন্য। প্রত্যেক বারের মতোই এবারেও নয়া ভাবনা উপস্থাপন করছে বাদামতলা আষাঢ় সংঘ । চলতি বছরে বাদামতলা আষাঢ় সংঘের থিম হলো- 'পদাঙ্ক'। সৃজন সজ্জায় রয়েছেন দেবতোষ কর। এই সুবিশাল ব্রহ্মান্ডে আত্মার সৃষ্টিকর্তা হলেন স্বয়ং ঈশ্বর। শৈশব থেকে কৈশোর, কৈশোর থেকে যৌবন, যৌবন থেকে বার্ধক্য। নিজের ক্রিয়াকৌশলের মাধ্যমে এই বিশ্বে বিভিন্নভাবে ছাপ ফেলতে থাকে ব্যক্তি। শেষকার্যে আগুনের তাপে ছাই ভস্মে পরিণত হয় মানবদেহ। যে দেহ বাঁচিয়ে রাখার জন্য এতকাল এত পরিশ্রম, তা নিশ্চিহ্ন হয়ে যায় কয়েক মুহূর্তে। তারপর একসময় পৃথিবীর বুকেই মিলিয়ে যায় দেহের শেষ 'পদাঙ্ক'ও। এই 'পদাঙ্ক'-এর মধ্য দিয়েই পুরো ভাবনাকে তুলে ধরছে বাদামতলা আষাঢ় সংঘ।
বাদামতলা আষাঢ় সংঘের জয়েন্ট সেক্রেটারি সন্দীপ চক্রবর্তী জানিয়েছেন, গত দুবছরের যেভাবে দর্শক সংখ্যা কমে গেছিল তার দ্বিগুণ দর্শক এবছরের পুন্ডো মন্ডপে জমায়েত হবেন বলেই আশা করছেন তারা। এবং কোভিডের সময় যতটা ছোট করে পুজো করা হয়েছিল তার চেয়ে এবারের পুজো অনেক বেশি বড় করা হয়েছে। পুজোর বাজেটও গত বছরের তুলনায় বেশ অনেকটাই বেড়েছে। গত দুবছর যেহেতু অতিমারিতে সেভাবে কিছু করা যায়নি তাই এবছরটা আরও বেশি করে অভিনবত্বের ছোঁয়া রাখার চেষ্টা করা হয়েছে। সরকারি নির্দেশিকা মেনে পরিবেশ সচেতনতা ও কোভিডের কথা মাথায় রেখেই পুজোর আয়োজন করা হচ্ছে। গত দুবছর ধরে যেভাবে মহামারিতে পুজো হয়েছে সেগুলির সবই ব্যবস্থা করা হবে। তিনি আরও বলেন বিগত দুই বছর যেমন সামলে নিয়েছি এইবছরটাও ঠিক ভাবেই সামলে নেব। দুর্গাপুজোর দিনগুলিতে কোনও অনুষ্ঠানের আয়োজন করেনি বাদামতলা আষাঢ় সংঘ। বাদামতলা আষাঢ় সংঘের সেক্রেটারি সন্দীপ চক্রবর্তী সকলের উদ্দেশ্যে জানিয়েছেন, গত দুই বছরের মতোই সাবধানতা অবলম্বন করুন। অবশ্যই মাস্ক পড়ে আসবেন এবং স্যানিটাইজার, দুরত্ব সবকিছু বজায় রেখেই প্যান্ডেলে এসে প্রতিমা দর্শন করবেন।
আরও পড়ুন- ৮৩তম গৌরবময় দুর্গোৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত হরি ঘোষ স্ট্রিট সার্বজনীন
আরও পড়ুন-জমজমাট পুজোয় অদেখার যাত্রায় যেতে প্রস্তুতি চলছে সিকদার বাগান সাধারন দুর্গোৎসব কমিটির
আরও পডুন- জগৎ মুখার্জি পার্কের পুজো মণ্ডপে শরতে বর্ষার আমেজ, অন্য পরিবেশ তৈরিতে ব্যস্ত উদ্যোক্তারা