গেরুয়া ঝড়ে ভর করে তুলনায় অনেক নতুন মুখও বাংলা থেকে বিজেপি-র টিকিটে জিতে সংসদে যাচ্ছেন। অথচ রাজ্য বিজেপি-র অন্যতম পরিচিত মুখ হয়েও নির্বাচনে পরাজিত হয়েছে তাঁকে। সম্ভবত সেই হতাশা থেকে রাজনীতি ছাড়ার ইঙ্গিত দিলেন বিজেপি নেতা সায়ন্তন বসু। রবিবার সকালে নিজের একটি ফেসবুক পোস্টে সেরকমই ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি।
বসিরহাট কেন্দ্র থেকে তৃণমূল প্রার্থী অভিনেত্রী নুসরত জাহানের কাছে সাড়ে তিন লক্ষেরও বেশি ভোটে হারতে হয়েছে সায়ন্তনকে। গত কয়েক বছরে এ রাজ্যে বিজেপি-র অন্যতম পরিচিত মুখ হয়ে উঠেছিলেন সায়ন্তন। বসিরহাটে তিনি প্রার্থী হওয়ার পরে দলের একাংশই তাঁর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখিয়েছিল। তার পরে তৃণমূল দুষ্কৃতীদের বুকে গুলি করার নিদান দিয়েও বিতর্কে জড়িয়েছেন তিনি।
কিন্তু ভোটের ফল বেরনোর পরেই সবকিছু বদলে গিয়েছে। বিজেপি এরাজ্য থেকে আঠারোটি আসন পেলেও সায়ন্তনের ভাগ্যে শিঁকে ছেঁড়েনি। সেই হতাশা থেকেই হয়তো সায়ন্তন ফেসবুকে লিখেছেন, "অনেক দিনের পুরনো একটা স্বপ্ন সত্যি হতে চলেছে। আগামী একবছর বা তার আগেই রাজ্যে সরকার গঠন করবে বিজেপি। বাংলার মানুষ সেই বিষয়টি বুঝতেও পারছেন। এটা কেউ আটকাতে পারবে না। সেই দিনটিতে আমিই সবথেকে খুশি হব।" এ পর্যন্ত সব ঠিক থাকলেও এর পরেই সায়ন্তনের কথায় রাজনীতি ছাড়ার ইঙ্গিত মিলেছে। সায়ন্তন লিখেছেন, "গত ১৮ বছর ধরে আমি একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে কাজ করেছি। অনেক বাধা বিপত্তি পেরিয়ে আমাদের গাড়ি এখন পূর্ণ গতিতে চলছে। আজ আমি সেই গাড়িতে বসতে আগ্রহী অন্য যে কারও হাতে ব্যাটন তুলে দেওয়ার জন্য তৈরি।"
সায়ন্তন আরও লিখেছেন, বরাবরই তিনি সামাজিক দায়িত্বপূরণে আদর্শগত মতাদর্শ পূরণে জোর দিয়েছেন। তাঁর শিকড় সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক সংগঠনের সঙ্গেই নিবিড়ভাবে যুক্ত বলে জানিয়েছেন সায়ন্তন। তিনি এখন সেদিকেই জোর দিতে চান বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন বসিরহাটের বিজেপি প্রার্থী।
সায়ন্তনের কথায় যে রাজনীতি ছাড়ার আভাস রয়েছে, তা লেখা থেকেই স্পষ্ট। ফেসবুক পোস্টেই বিজেপি-র অনেক কর্মী সমর্থক সায়ন্তনকে এমন সিদ্ধান্ত না নেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছেন। যদিও, এখনও সায়ন্তনের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত বা মন্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
আগামী বিধানসভা নির্বাচনে রাজ্যে ক্ষমতা দখলের স্বপ্ন দেখছে বিজেপি। বহু বছরের চেষ্টার পর অবশেষে বাংলায় কোনও নির্বাচনে বিপুল সাফল্য পেয়েছে দল। সেখানে এই সময়ে সায়ন্তনের এমন ফেসবুক পোস্টের পিছনে শুধু হতাশা, অভিমান না অন্য কোনও কারণ রয়েছে, তা এখনও স্পষ্ট নয়।