পুরুলিয়ার গ্রাম রামকানালি। শহুরে বাঙালির কাছে এই গ্রামের নাম হয়তো এতদিন অপরিচিতই ছিল। প্রচারের আলোয় কখনওই আসেনি গ্রামটি। কিন্তু, এখন ধীরে ধীরে প্রচার পাচ্ছে ওই গ্রাম। সৌজন্যে বাবান বাউরি।
একটি প্রথমসারির টিভি চ্যানেলের নাচের রিয়েলিটি শো 'ডান্স বাংলা ডান্স'-এ যোগ দিয়েছেন বাবান। আর সেখানে তাঁর দুর্দান্ত নৃত্যশৈলী দর্শকদের পাশাপাশি শো-এর বিচারকদেরও মন কেড়েছে। যার কারণে প্রচারের কেন্দ্রবিন্দুতে চলেছে এসেছে রামকানালি। আর বাবানকে ঘিরেই এখন নতুন ভোরের স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছেন রামকানালির বাসিন্দারা।
রামকানালির মতো ছোট্ট একটি গ্রামের বাসিন্দা বাবান। সেখানে নাচকে পেশা বানানোর কথা কেউ ভাবতেই পারেন না। নাচের কথা শুনলে এড়িয়ে যান অনেকেই। আর সেখানে 'ডান্স বাংলা ডান্স'-র মতো মঞ্চে নিজেকে প্রমাণ করার সুযোগ পেয়েছেন বাবান। তবে সেই যাত্রাটা খুব একটা সহজ ছিল না। কিন্তু, বাবানের অসীম জেদ এবং কঠোর অধ্যবসায়ের কাছে হার মেনেছে যাবতীয় প্রতিকূল পরিস্থিতি। সেই সঙ্গে তাঁর মা এবং দিদির আশীর্বাদও তাঁকে লক্ষ্য পূরণের পথ উন্মুক্ত করতে সাহায্য করেছে। তাই পিতৃহারা এবং জন্মের পর থেকে দারিদ্রতাকে সঙ্গী করে চলা বাবান ধীরে ধীরে নিজের জীবনের সাফল্যের দিকে এগিয়ে চলেছেন।
যদিও প্রথমদিকে ডান্সকে ক্যারিয়ার গড়ে তোলার পেছনে পরিবারের সদস্যদের পাশে পাননি বাবান। তবে এখন সবাই চান বাড়ির ছেলে যেন সাফল্য অর্জন করে। চিরটাকাল দারিদ্রতা দেখে আসা পরিবারকে যেন আর্থিক সচ্ছলতার মুখ দেখাতে পারেন বাবান। আর বাবানের স্বপ্ন গ্রামে একটি নাচের স্কুল খোলার। এছাড়া বড় মঞ্চের সামনে বসিয়ে মাকে নিজের নাচ দেখানোর ইচ্ছাও রয়েছে তাঁর। যাতে তাঁর মতো গ্রামের বহু ছেলেমেয়েই নাচ নিয়ে জীবনে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার সুযোগ পায়, তার জন্যই গ্রামে নাচের স্কুল খোলার ইচ্ছাপ্রকাশ করেছেন তিনি। আর বাবানের এই স্বপ্ন যাতে পূরণ হয় তার দিকে তাকিয়ে রয়েছেন গোটা পুরুলিয়ার জেলার মানুষ।