অনির্বাণ বললেন, ‘মাত্র একটা কাজ। এক সঙ্গে বেশি ক্ষণ সময়ও কাটাইনি। তার মধ্যেই আশ্চর্য মায়ায় বেঁধে গেল মেয়েটা!’
বরাবরের মতো ছুটি হয়ে গেল ‘পর্দার মেয়ে’র। শোকে স্তব্ধ বাবা। ঐন্দ্রিলা শর্মা, অনির্বাণ চক্রবর্তী। জি বাংলা অরিজিনালসের ছবি ‘ভোলেবাবা’য় তাঁরা বাবা-মেয়ে। এশিয়ানেট নিউজ বাংলা ফোন করতেই গলাটা বেশ ধরা শোনাল। বললেন, ‘মাত্র একটা কাজ। এক সঙ্গে বেশি ক্ষণ সময়ও কাটাইনি। তার মধ্যেই আশ্চর্য মায়ায় বেঁধে গেল মেয়েটা!’ এও স্বীকার করেছেন, ওঁর লড়াইকে কুর্নিশ করেন। ওঁর ফিরে আসাকে সম্মান জানান। তার পরেও এক দিন হাওড়া হাসপাতালে ঐন্দ্রিলাকে দেখতে যেতে পারেননি তাঁর পর্দার ‘ভোলেবাবা’! অনির্বাণের দাবি, ‘ভয় কাজ করেছিল। গিয়ে যা দেখব তা যদি মেনে নিতে না পারি?’
কেমন ছিল শ্যুটিংয়ের দিনগুলো? কেমন ছিলেন তাঁর পর্দার ‘মেয়ে’? জবাবে অনির্বাণ বললেন, ‘মাত্র ২৪। তবু আর পাঁচজনের থেকে এক দম আলাদা। দু’বার ক্যান্সার থেকে ফিরে আসার লড়াই বোধহয় ওকে এত মাটির কাছাকাছি বানিয়েছে। আর ছিল অদম্য প্রাণশক্তি। যা ওকে লড়তে সাহায্য করত।’ অভিনেতার মতে, সেটে খুব অল্প সময় এক সঙ্গে কাটিয়েছেন। তার মধ্যেই খেয়াল করেছেন, শরীরে কোনও অসুস্থতাই ছিল না। ছটফটে, স্বাভাবিক, আর পাঁচ জন মানুষের মতোই। কোনো ক্লান্তি নেই। বাড়তি কোনও বাধা-নিষেধও ছিল না! সবার সঙ্গে মিলেমিশে কাজ করতেন। নির্দিষ্ট সময়ে আসতেন। নির্দিষ্ট সময়ে কাজ শেষ করে ফিরতেন। কোনও অজুহাতে আগে ছেড়ে দেওয়ার কথাও বলেননি।
অনির্বাণের দাবি, ‘আমার মেয়ে থাকলে এত বড় হত না। তবু বলছি, ওর মতো মিষ্টি মেয়েকে স্নেহ না করে উপায় নেই। কোনও অসভ্যতা নেই। কোনও হুড়োহুড়ি নেই। ওকে ঘিরে সব সময় শান্ত, স্নিগ্ধ বলয়। যে কাছে যাবে তারই মন ভাল হয়ে যাবে। কোনও দেখনদারিও ছিল না। এমন মেয়ের তো যুদ্ধে জিতে ফেরারই কথা!’ এই একই কথা শোনা গিয়েছিল একেবারে শুরুতে। ২ নভেম্বর। তার আগের রাতে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন ঐন্দ্রিলা। সে দিনও পর্দার ‘একেনবাবু’র সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল এশিয়ানেট নিউজ বাংলা। সে দিনও তিনি বলেছিলেন, '‘আমি দুপুরে খবরটা পাই। এখনও সবিস্তার জানতে পারিনি। তবে ভীষণ খারাপ লাগছে।’' তাঁর মতে, ক্যান্সারের সঙ্গে দু'বার ঐন্দ্রিলার লড়াই উদাহরণযোগ্য। বারেবারে মেয়েটার সঙ্গে এ রকম হচ্ছে। তিনি আন্তরিক ভাবে চাইছেন, এ বারেও জিতে ফিরুন ঐন্দ্রিলা।