টলিউডকে নিশানা করে তোপ কুণালের! এবার পাল্টা উত্তর দিলেন পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়

Published : Sep 01, 2024, 01:36 PM IST
Parambrata Chattopadhyay

সংক্ষিপ্ত

টলিউডকে নিশানা করে তোপ কুণালের! এবার পাল্টা উত্তর দিলেন পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়

কিছুদিন আগেই টলিউডের অভিনেতাদের প্রসঙ্গে একটি বিস্ফোরক মন্তব্য করেন কুণাল ঘোষ। 'দুঃসময়ে কাউকে পাওয়া যায় না'বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন তিনি। টেনেছিলেন মুম্বইয়ের উদাহরণও। এবার এই প্রসঙ্গে মুখ খুললেন টলিউড অভিনেতা পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়। এ প্রসঙ্গে অভিনেতা প্রশ্ন করেছেন, "মুম্বইয়ের কিছু অভিনেতা যে কাজ করেন, বাংলাতেও তা করতে হবে কেন?"

কুণালের এই মন্তব্য পরমব্রত জানিয়েছেন, "মুম্বইয়ের কিছু মানুষ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে কেন্দ্রের শাসকদলের নির্লজ্জ প্রোপাগান্ডা করেন তাঁদের কাজের মধ্যে দিয়ে, যার ফলে তাঁদের শিল্পীর সম্মানটাই নষ্ট হয়। আপনি কি চাইছেন যে, আপনাদের দলের লোকেরাও তা-ই করুক? সিনেমার জগৎ এমনিতেই দলীয় রাজনীতির রঙে একেবারে রই রই করে রঙিন, তাতে হচ্ছে না? এ বার এটাও করতে হবে? রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে পশ্চিমবঙ্গ নিয়ে বেশ কিছু ভ্রান্ত ধারণা ছড়ানো হয় উত্তর ভারতে, আমি নিজে তা চাক্ষুষ করেছি। পশ্চিমবঙ্গের সামাজিক বৈচিত্র এবং কেন্দ্রের সঙ্গে দীর্ঘ রাজনৈতিক বিরোধিতার ইতিহাস হয়তো এর জন্য দায়ী! কুপ্রচার করার জন্য কিছু ছবিও তৈরি হয়, কিন্তু সেগুলিকে আটকানোর চেষ্টা করে আপনারাই এই অজানা, গুরুত্বহীন ছবিগুলিকে গুরুত্বপূর্ণ করে তোলেন!"

উল্লেখ্য, কুণালের বার্তা ছিল ‘দ্য ডায়েরি অফ ওয়েস্ট বেঙ্গল’ নামক ছবিটি নিয়ে। সনোজকুমার মিশ্র পরিচালিত ছবিটি বাংলায় মুক্তি পায়নি। ওই ছবিতে তৃণমূল সরকারের আমলে একাধিক বিতর্কিত পর্ব তুলে ধরা হয়েছে বলে অভিযোগ। কুণাল প্রশ্ন তুলেছিলেন, এই রাজ্যে তৃণমূলের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে মমতার পাশে দাঁড়িয়ে টালিগঞ্জের যে তারকারা ছবি তোলেন, তাঁরা এই ধরনের পাল্টা ছবি তৈরির কথা কেন ভাবেন না? কেন বাংলায় মমতার বায়োপিক তৈরি করতে এগিয়ে আসেন না কোনও তারকা? এই প্রশ্নের জবাবে পরমের বক্তব্য, টালিগঞ্জের যে কলাকুশলীদের তৃণমূল নেতা বানিয়েছে, দলের তরফেই তাঁদের রাজনৈতিক মনস্কতার দায়িত্বও নেওয়া উচিত। পরমের কথায়, ‘‘যদি মনে করেন আপনার দলের নেতা বা পদাধিকারীরা কেন ভুয়ো নিউজের বুদবুদ ফাটাচ্ছেন না, তা হলে যে ভাবে তাঁদের ধরে দলে নিয়োগ করে নেতা বা নেত্রী বানিয়েছেন, একই ভাবে তাঁদের রাজনৈতিক মনস্কতা বা পলিটিকাল ম্যাচিওরিটির দায়িত্ব নিন দলের পক্ষ থেকে!’’ পরম এ-ও জানিয়েছেন, তৃণমূলের উচিত এমন কোনও সংস্থাকে নিয়োগ করা, যারা তাদের দলের বিরুদ্ধে প্রচার করা মিথ্যাগুলির পর্দাফাঁস করে দেবে। তা না করে উল্টে বিপরীত প্রোপাগান্ডার নিদান দিচ্ছেন কেন কুণাল, প্রশ্ন পরমের।

আরজি করের ঘটনার প্রসঙ্গও টেনেছেন পরম। তাঁর মতে, এটি অত্যন্ত স্পর্শকাতর সময়। যা ঘটেছে, মানুষ তার জবাব চাইছে। এই পরিস্থিতিতে দলের মুখপাত্রদের আরও সংবেদনশীল হওয়া প্রয়োজন। তাঁর কথায়, ‘‘যে গাফিলতির জন্য ৯ অগস্টের ঘটনা ঘটতে পেরেছে , মানুষ তার জবাবদিহি চাইছে। দায় স্বীকার এবং যদি ঘুণ ধরে থাকে পরিকাঠামোয়, তা হলে তা চিহ্নিত করে সাফ করা হোক— অধিকাংশ লোকের দাবি এটাই! সময়টা স্পর্শকাতর, মুখপাত্র হিসাবে কী বলছেন, কী লিখছেন, একটু ভেবেচিন্তে করলে হয় না? ভুয়ো খবর বাতিল করা, সম্প্রীতি-সৌহার্দ্য রক্ষা করা, অন্যায় হলে প্রতিবাদ করা বা বিচার চাওয়া—অধিকাংশ ক্ষেত্রে এগুলি সুশীল সমাজই করে! সেই সুশীল সমাজ, যারা কঠিন সময়ে আপনাদের সমর্থন করা সত্ত্বেও এখন আরজি করের ঘটনায় আপনাদের সমালোচনা করছে। তাই আপনারা অবলীলায় তাদের বিরোধী ষড়যন্ত্রের অংশীদার হওয়ার আখ্যা দিচ্ছেন! যেমন নন্দীগ্রামের সময় তৎকালীন শাসকদল এই সুশীল সমাজকে তৃণমূলপন্থী বলেছিল বা এনআরসি ও সিএএ-র প্রতিবাদের সময়ে কেন্দ্রের শাসকদল আমাদের দেশবিরোধী বলে! নিজেদের বিন্দুমাত্র সমালোচনা শুনে প্রতিক্রিয়া জানানোর বেলায় বর্তমান শাসক, অতীতের শাসক , বড় বিরোধী, মেজো বিরোধী, হবু শাসক, কেন্দ্র, রাজ্য সবার ন্যারেটিভ এক! দাগিয়ে দাও। হয় এই রং, নইলে ওই রং! মাঝখান থেকে আসল বিষয় পিছনের সারিতে। নির্বাচনের ফলাফল, শাসক-বিরোধী বাইনারি, ক্ষমতার মসনদে বসার সঙ্কীর্ণ পরিসর, লাল-কমলা-হলদে-সবুজ ছাড়াও একটা রাজনীতি হয়। সেই রাজনীতি বৃহৎ বিশ্বভাবনার, বৃহত্তর দর্শনচিন্তার এবং সর্বোপরি মানবিকতার।"

PREV
click me!

Recommended Stories

দীর্ঘ অসুস্থতায় শয্যাশীয়া, না ফেরার দেশে প্রবীণ অভিনেতা কল্যাণ চট্টোপাধ্যায়, শোক প্রকাশ একাধিক তারকার
টেলিভিশনের মেগা ধারাবাহিক থেকে বড় পর্দার সফল নায়িকা, বছরে কত টাকা উপার্জন করেন মিমি চক্রবর্তী?