
দেব আনন্দ- নামের সঙ্গেই জড়িয়ে রয়েছে রোমান্স। তাঁর নিজের লেখা আত্মজীবনীর নামও 'রোমান্সিং ইউথ লাইফ'। জীবন মানে শুধু বেঁচে থাকা নয়,বলিউড অভিনেতার কাছে জীবনের মানেই ছিল প্রেম-ভালবাসা আর অ্যাডভেঞ্চার। দেখতে দেখতে শতবর্ষের পা দিলেন গাইড- ছবিরা রাজু। ১৯২৩ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর ব্রিটিশ শাসিত ভারতে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। দেব আনন্দ তাঁর কেরিয়ারে ১০০টিরও বেশি ছবিতে অভিনয় করেছেন। অভিনেতা প্রযোজক লেখক হিসেবে জনপ্রিয়তা লাভ করেছেন। তবে তাঁর ছবিগুলির মতই তাঁর জীবনও কিন্তু ছিল রহস্যে মোড়া। দেব আনন্দের জন্মের শতবর্ষের আলোকে আসুন ফিরে দেখি জনপ্রিয় এই অভিনেতাকে। জানুন তাঁর জীবন সম্পর্কে কিছু অবাক করা তথ্য।
দেব আনন্দ , এখনও ভারতে দেব আনন্দের ভক্তের সংখ্যা অগণিত। কিন্তু সেই দেব -সাহেব ভক্ত ছিলেন চার্লি চ্যাপলিনের। চ্যাপলিনের সঙ্গে সুইজারল্যান্ডের মন্ট্রেক্সে দেখা করেছিলেন। তবে দেব আনন্দ তাঁর অভিনয় জীবনে অনেক বড় অভিনেতার সঙ্গে স্ক্রিন শেয়ার করেছিলেন। কিন্তু তিনি অমিতাভ বচ্চন ও রাজ কাপুরের সঙ্গে কখনই স্ক্রিন শেয়ার করেননি। জীবনে সাফল্যের শিখরে উঠেছেন। হিন্দি ছবির জনপ্রিয় নায়ক হয়েছেন। দেব আনন্দের প্রেমে হাবুডুবু খেয়েছে সেই সময়ের ভারতীয় মহিলারা। কিন্তু দেব আনন্দের প্রেম সফল হয়নি। সুরাইয়ার সঙ্গে বিয়ে হয়নি দেব আনন্দের। পরবর্তীকালে কল্পনা কার্তিককে বিয়ে করেছিলেন। কিন্তু সুরাইয়া সারা জীবন একলাই থেকে গিয়েছিলেন।
আসুন এবার অভিনেতা হওয়ার আগে দেব আনন্দের জীবনে উঁকি মারি আমরা। সিনেমায় নামার আগে দেব আনন্দ ক্লার্ক হিসেবে জীবন শুরু করেছিলেন। অ্যাকাউন্টেন্সি ফার্মে একজন কেরানি হিসেবে কাজ করতেন মাসে মাত্র ৮৫ টাকার বিনিময়ে। কিছুদিনের মধ্যে মাইনে বেড়ে হয়েছিল ১০৬ টাকা। সেই সময় অর্থাৎ ১৯৪৬ সালে হাম এক হ্যায় ছবিতে সুযোগ পান।
অভিনেতার একটি স্বাক্ষর শৈলীর পাশাপাশি তার পোশাকের ক্লাসিক পছন্দ ছিল। তাঁর পোশাকের অসাধারণ কালেকশন ছিল। দেব তার চেকার্ড প্রিন্ট ক্যাপ পরেছিলেন জুয়েল থিপ ছবিতে। সেটি তিনি পেয়ার মহব্ত ছবির শ্যুটিং এর সময় ডেনমার্ক থেকে কিনেছিলেন। তবে কালো পোশাক অত্যান্ত প্রিয় ছিল দেব আন্দদের।
বিদ্যা ছবির সেটে সুরাইয়ার প্রেমে পড়েছিলেন দেব। সিনেমার সেটেই প্রেমের প্রস্তাব দেন। ৩ হাজার টাকার হিরের আংটিও উপহার দিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁদের প্রেমে কাঁটা ছিল সুরাইয়ার দিদিমা।
সিনেমার পাশাপাশি রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন দেব। জরুরি অবস্থার সময় ইন্দিরা গান্ধীর বিরুদ্ধে সক্রিয় ছিলেন। ১৯৭৭ সালে নির্বাচনের সময় চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্বদের একটি দলকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। ন্যাশানাল পার্টি অব ইন্ডিয়া নামে একটি দল গঠন করেন। পরে তা নিজেই ভেঙে দেন। দেব আনন্দ একটি ইন্দো-ফিলিপিনো ড্রামা ফিল্ম, দ্য ইভিল উইদিনে, ল্যাম্বার্তো ভি অ্যাভেলানা পরিচালিত, কাজ করেছিলেন। দেব আনন্দ ৩ ডিসেম্বর ২০১১ সালে ৮৮ বছর বয়সে লন্ডনে মারা গিয়েছেন।